ঘনঘটা: সহসা কালো মেঘে ঢাকল কলকাতার আকাশ। সোমবার রাজ্য জুড়ে ঝড়বৃষ্টিতে মৃত ১০ জন। ছবি: দেবস্মিতা ভট্টাচার্য
কে বলবে ভরা বৈশাখের সকাল!
সোমবার আকাশে কালো মেঘ, জোরালো ব়ৃষ্টি, ঝোড়ো হাওয়া, বজ্রপাত বদলে দিয়েছে গ্রীষ্মের সকালটাই। বজ্রপাতে মারা গিয়েছেন ১০ জন। জখম ১৮। আলিপুর হাওয়া অফিস বলছে, ঘূর্ণাবর্ত ও নিম্নচাপ অক্ষরেখার যুগলবন্দিতেই এই ঘটনা। কাল, বুধবার পর্যন্ত এমন পরিস্থিতি চলবে। মৎস্যজীবীদের সাগরে যাওয়ার ক্ষেত্রে সতর্ক থাকতে বলা হয়েছে।
এ দিন উত্তর ২৪ পরগনার দেগঙ্গায় বাজ প়়ড়ে মারা গিয়েছেন পঞ্চায়েত ভোটে সিপিএম প্রার্থী আজমিরা বিবি (৩১) এবং মূক ও বধির মহিলা আনোয়ারা খাতুন (২৫)। হাসনাবাদে মারা গিয়েছেন উৎপল পাত্র (৪০)। পশ্চিম মেদিনীপুরে চন্দ্রকোনা ও গড়বেতা মারা গিয়েছেন মঞ্জু পণ্ডিত (৩১) ও তনিমা রায় (১৩)। পূর্ব বর্ধমানের খণ্ডঘোষে মারা গিয়েছেন রবিয়াল বারি (৪২)। নদিয়ায় মারা গিয়েছেন তেহট্টের বরুণ বিশ্বাস (৪০) এবং মুরুটিয়ার আনারুল শেখ(৩৫)। মুর্শিদাবাদের দৌলতাবাদে ও ডোমকলে মারা গিয়েছেন ধনঞ্জয় ঘোষ (৪০) এবং গাজিবর বিশ্বাস(৬৫)। এই দুই জেলায় জখমের সংখ্যা ১৪। পুরুলিয়াতেও জখম হয়েছেন চার জন।
আলিপুর আবহাওয়া দফতর জানিয়েছে, বিহার এবং লাগোয়া ঝাড়খণ্ড ও পশ্চিমবঙ্গের উপরে একটি ঘূর্ণাবর্ত রয়েছে। সেখান থেকে একটি নিম্নচাপ অক্ষরেখা গাঙ্গেয় বঙ্গের উপর দিয়ে উত্তর-পূর্ব ভারত পর্যন্ত বিস্তৃত রয়েছে। ফলে বাতাসে প্রবল জলীয় বাষ্প ঢুকেছে, তা ঘনীভূত হয়ে ঝড়বৃষ্টির মেঘ তৈরি করেছে। এক আবহবিজ্ঞানী বলেন, ‘‘গ্রীষ্মে দুপুরের পর বাতাস গরম হয়ে উপরে ওঠে এবং ঘনীভূত হয়ে ঝড়বৃষ্টির মেঘ তৈরি করে। এ ক্ষেত্রে ঘূর্ণাবর্ত ও অক্ষরেখার টানে সেই কাজটি হয়েছে।’’
হাওয়া অফিসের খবর, সকালে আলিপুরে ঝ়ড়ের সর্বোচ্চ গতিবেগ ছিল ঘণ্টায় ৪৮ কিলোমিটার। দমদমে সর্বোচ্চ ঝড় বয়েছে ঘণ্টায় ৬২ কিলোমিটার বেগে। সঙ্গে প্রবল বৃষ্টি। ফলে এক ধাপে তাপমাত্রা নেমে যায়। পরে রোদ উঠলেও পারদ স্বাভাবিকের কোঠা পেরোতে পারেনি। হাওয়া অফিস জানায়, সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল ৩২.১ ডিগ্রি সেলসিয়াস, স্বাভাবিকের থেকে ৩ ডিগ্রি কম। মালদহ, কোচবিহারেও বৃষ্টির খবর মিলেছে।