রাজ্য নির্বাচন কমিশনার সৌরভ দাসের সঙ্গে দেখা করলেন জয়প্রকাশ মজুমদার।—ফাইল চিত্র।
রাজ্যে পুরভোটের নির্ঘণ্ট এখনও ঘোষণাই হয়নি। কিন্তু এপ্রিলের মাঝামাঝি ওই ভোট হতে পারে ধরে নিয়ে সে বিষয়ে আগেভাগেই রাজ্য নির্বাচন কমিশনে আপত্তি জানিয়ে রাখল বিজেপি। দলের জাতীয় কর্মসমিতির সদস্য মুকুল রায় এবং রাজ্যের সহ সভাপতি জয়প্রকাশ মজুমদার বৃহস্পতিবার রাজ্য নির্বাচন কমিশনার সৌরভ দাসের সঙ্গে দেখা করেন। পরে তাঁরা জানান, পরীক্ষার মরসুমে মাইক বাজানো নিষেধ থাকায় এপ্রিলের মাঝমাঝি পুরভোট হলে নির্বাচনী প্রচার করা যাবে না। তাই তাঁরা চাইছেন, পুরভোট আরও পরে করা হোক। তবে রাজনৈতিক মহলের একাংশের মতে, বেহাল সংগঠন নিয়ে লড়াই কঠিন বুঝেই ঘর গোছানোর সময় পেতে পুরভোটে দেরি চাইছে বিজেপি।
বিজেপি নেতৃত্বের বক্তব্য, ১৯৯৯ সালের একটি মামলায় কলকাতা হাইকোর্ট নির্দেশ দিয়েছিল, মাইক ব্যবহারে অসুবিধার কথা মাথায় রেখে পরীক্ষার মরসুমে যেন ভোট না করা হয়। শিলিগুড়ি মহকুমা পরিষদের ভোট পিছনোর জন্য ওই সময়ে হাইকোর্টে আবেদন করেছিলেন তৎকালীন তৃণমূল নেতা মুকুলবাবুই।
তবে বিজেপির অন্দরের খবর, পুরভোট এপ্রিলের মাঝামাঝিই হবে ধরে নিয়ে প্ল্যান বি-ও সাজিয়ে রেখেছে দল। সে ক্ষেত্রে প্রচার করা হবে—রমজানের কথা মাথায় রেখে ভোটের নির্ঘণ্ট ঠিক করা হল। কিন্তু চড়ক উৎসবের কথা ভাবা হল না। এতে মেরুকরণে সুবিধা হবে বলে মনে করছেন দলের নেতাদের অনেকে।
বাম এবং কংগ্রেস অবশ্য চায়, রাজ্য জুড়ে পুরভোট এক দিনেই হোক। সেই সঙ্গে তাদের দাবি, ভোটের দিনক্ষণ যখনই ধার্য করা হোক, প্রচারের জন্য পর্যাপ্ত সময় দিতে হবে। সিপিএমের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য সুজন চক্রবর্তীর কথায়, ‘‘ভোট এক দিনেই হওয়া উচিত। এক দিন হাওড়ায় গণ্ডগোল পাকিয়ে আর এক দিন সেই বাহিনী নিয়ে চলে গেলাম উত্তরপাড়া— এই জিনিস চলবে না! পুরভোট এক দিনে করা সম্ভব বলেই আমরা মনে করি।’’ আর প্রদেশ কংগ্রেসের পুরভোট সংক্রান্ত কমিটির আহ্বায়ক শুভঙ্কর সরকারের বক্তব্য, ‘‘আমরা চাই, রাজ্যের সর্বত্র এক দিনে ভোট এবং প্রচারের জন্য পর্যাপ্ত সময়। আমরা শুনেছি, কলকাতা, হাওড়ায় প্রথমে ভোট করে তার ফল ঘোষণার পর বাকি পুরসভাগুলিতে ভোটের কথা ভাবা হচ্ছে। এতে আইনি বাধা না থাকলেও এর ফলে পরের ভোটগুলি প্রভাবিত হবে। এটা হতে দেওয়া যাবে না।’’