প্রতীকী ছবি।
কলকাতা-সহ রাজ্যের শতাধিক পুরসভার আসন্ন নির্বাচনে ইভিএম বা বৈদ্যুতিন ভোটযন্ত্রে বোতাম টিপতে হবে, নাকি ছাপ দিতে হবে ব্যালট পেপারে— সেই বিষয়ে আনুষ্ঠানিক কোনও সিদ্ধান্ত প্রকাশ্যে আসেনি। তবে ইভিএম ব্যবহারের জন্য প্রস্তুতির সময় ক্রমশ ফুরিয়ে আসছে বলে মনে করছেন দীর্ঘদিন ভোট প্রক্রিয়ার সঙ্গে যুক্ত আধিকারিকেরা। তাঁদের মতে, এপ্রিলের তৃতীয় সপ্তাহে কলকাতা বা অন্যান্য পুরসভার ভোট হলে ইভিএম ব্যবহারের সম্ভাবনা কার্যত ক্ষীণ।
কেন ক্ষীণ? ১) রাজ্য নির্বাচন কমিশনের হেফাজতে (বিভিন্ন জেলায় থাকা ওয়্যারহাউস) থাকা ইভিএমের ধুলো ঝাড়া হয়নি। ফলে তার ক’টি ব্যবহারযোগ্য হবে, সেই প্রশ্ন থাকছে। ২) রাজনৈতিক দলের প্রতিনিধিদের উপস্থিতিতে ইভিএমের পরীক্ষা হয়। যাকে বলা হয় ‘ফার্স্ট লেভেল অব চেকিং’ (এফএলসি)। পরে প্রার্থীদের নাম সংবলিত ব্যালট পেপার দেওয়া হয় ইভিএমে। এফএলসি বেশ সময়সাপেক্ষ। বিশেষজ্ঞদের মতে, ইভিএমে ভোট হলে এফএলসি জরুরি, কিন্তু এ ক্ষেত্রে এফএলসি-র সময় কার্যত নেই। ৩) কমিশনের কাছে থাকা ‘এম-টু’ সংস্করণের ইভিএমে নতুন করে ভিভিপ্যাট যুক্ত করতে হবে। তাই প্রযুক্তিগত বদল দরকার, যা সময়সাপেক্ষ। পুরভোটে ইভিএমের বরাত নিয়ে প্রস্তুতকারক সংস্থা ইলেকট্রনিক্স কর্পোরেশন অব ইন্ডিয়া লিমিটেডের (ইসিআইএল) সঙ্গে এখনও আলোচনা হয়নি। এই অবস্থায় কী ভাবে ইভিএম ব্যবহার সম্ভব, সেই প্রশ্নই এখন ঘুরপাক খাচ্ছে প্রশাসন থেকে রাজনীতির ময়দানে।
বিশেষজ্ঞদের মতে, এপ্রিলের তৃতীয় সপ্তাহে যেখানে পুরভোটের সম্ভাবনা রয়েছে, সেখানে ইভিএম ব্যবহারের সম্ভাবনা ক্ষীণ। ফলে ব্যালট পেপারেরই পাল্লা ভারী হচ্ছে। কমিশন বলছে, দ্রুত সিদ্ধান্ত জানানো হবে।
প্রশাসনের অন্য একাংশের মতে, লোকসভা ভোটে ‘এম-থ্রি’ ভার্সানের ইভিএমের জন্য ইসিআইএল যে-অর্থ জাতীয় নির্বাচন কমিশন থেকে নিয়েছিল, পুরভোটে তার থেকে অনেক বেশি চাইছে তারা। ফলে রাজ্যের ভাঁড়ার থেকে বেশ কিছু টাকা খরচ হতে পারে। ইসিআইএলের বক্তব্য, অনেক বেশি ইভিএম একসঙ্গে নেওয়ায় খরচ কম হয়েছিল। পুরভোটে কম ইভিএম নেবে রাজ্য কমিশন। ফলে টাকা তো বেশি লাগবেই।
২০১৯ সালের একুশে জুলাইয়ের মঞ্চ তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেছিলেন, ‘‘পুরসভা-পঞ্চায়েতে ব্যালটে ভোট করে আমরা পথ দেখাব।’’ পুরভোটে ব্যালট পেপারের পাল্লাই ভারী বলে পর্যবেক্ষকদের অভিমত। সিদ্ধান্তের ভার কমিশনের।