— ফাইল চিত্র।
নদীবক্ষ থেকে অবৈধ ভাবে বালি তোলার প্রবণতা রুখতে কড়া বার্তা দিয়েছে রাজ্য মিনারেল ডেভেলপমেন্ট ও ট্রেডিং নিগম। অবৈধ ভাবে বালি, পাথর বা মাটি পাচার নিয়ে তৎপর হয়েছে জেলা প্রশাসনগুলিও। প্রশাসন সূত্রের দাবি, এই পদক্ষেপের ফলে কোটি কোটি টাকা আয় বেড়েছে সরকারের। তবে এই পদক্ষেপের পিছনে ভিন্ন তাৎপর্য খুঁজে পাচ্ছেন অনেকে। তাঁদের মতে, অবৈধ ভাবে বালি-পাথর পাচার নিয়ে উত্তপ্ত হয়েছিল রাজ্য-রাজনীতি। সে সব বিষয়গুলি এখনও কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থাগুলির অনুসন্ধানের আওতায় রয়েছে। সামনে লোকসভা ভোট। তাই আর্থিক গতিবিধি সংক্রান্ত
নজরদারিতে বিশেষজ্ঞ কেন্দ্রীয় সংস্থাগুলি আরও সক্রিয় হবে। সে দিক থেকে অবৈধ বালি তোলায় রাশ বিশেষ বার্তাবহ।
প্রাথমিক ভাবে অবৈধ ভাবে বালি তোলার উপরে পূর্ব বর্ধমানের জন্য দেওয়া হয়েছে। তবে প্রশাসনের মতে, এই নির্দেশ সব জেলার ক্ষেত্রেই বলবৎ হবে। নিগম তাদের লিখিত বার্তায় জানিয়েছে, অবৈধ ভাবে খননের (বিশেষত বালি) বহু অভিযোগ তারা পেয়েছে। যেখানে যান্ত্রিক পদ্ধতিতে (মোটর এবং নেট ব্যবহারে) নদীবক্ষে সেই কাজ চালানো হচ্ছে। তাই বিষয়গুলি খতিয়ে দেখে দ্রুত আইনি পদক্ষেপ করতে হবে। কী পদক্ষেপ করা হচ্ছে, তার তথ্য চাওয়া হয়েছে।
বিশেষজ্ঞদের অনেকে জানাচ্ছেন, সাধারণ খাদানের থেকেও নদীবক্ষের খনন অনেক বেশি বিপজ্জনক। এ ভাবে বালি তুললে নদীখাতের স্বাভাবিক চরিত্র বদলে যায়। ভাঙন এবং প্লাবনের আশঙ্কা বাড়ে।
প্রশাসনিক সূত্রের খবর, খনন কার্যের দিক থেকে গুরুত্বপূর্ণ দুই বর্ধমান, বাঁকুড়া, বীরভূম। সেই সব জেলায় ভূমি দফতর বালি, মাটি, পাথর ইত্যাদির পাচার ঠেকাতে তল্লাশি-হানা বাড়ানো হয়েছে। জরিমানা থেকে কোটি কোটি টাকা আয় হচ্ছে। শুধু পশ্চিম বর্ধমানে ২০২২-২৩ অর্থবর্ষে যেখানে প্রায় ১.৩২ কোটি টাকা আদায় হয়েছিল, সেখানে ২০২৩-২৪ আর্থিক বছরে আয় এখনও পর্যন্ত দ্বিগুণ হয়েছে। পূর্ব বর্ধমানে ডিসেম্বর থেকে জানুয়ারি, এক মাসে বালি পাচারের গাড়ি ধরে ২.২০ কোটি টাকা জরিমানা আদায় হয়েছে।
প্রশাসনিক মহলের একাংশের ধারণা, তল্লাশি-হানার এমন গতি বজায় থাকলে অন্তত রাজ্যের কোষাগারে বিকল্প আয়ের আরও একটি উৎস খুলে যাবে। তবে ভূমির সঙ্গে পরিবহণ, সেচ দফতর এবং পুলিশের যৌথ পদক্ষেপ হলে এই কাজ আরও দৃঢ় হবে বলে মনে করা হচ্ছে।