কলকাতায় লকডাউন। ছবি- পিটিআই।
করোনা সংক্রমণের তীব্রতার নিরিখে গোটা রাজ্যকে তিন ভাগে ভাগ করে অর্থনীতির থেমে থাকা চাকা গড়ানোর পরিকল্পনা তৈরির কাজ শুরু করে দিল রাজ্য সরকার। রেড, অরেঞ্জ এবং গ্রিন— এই তিন জ়োনে রাজ্যকে ভাগ করার কথা সোমবারেই জানিয়েছিল নবান্ন। রেড জ়োনে জনতার গতিবিধির উপরে নিয়ন্ত্রণ বজায় থাকবে। কিছু ছাড় মিলবে অরেঞ্জ জ়োনভুক্ত এলাকাগুলিতে। আর গ্রিন জ়োনে মোটের উপরে স্বাভাবিক কাজকর্মের অনুমতি দেওয়া হবে। তবে কড়া নজরদারি থাকবে সব জ়োনের উপরেই। রাজ্য প্রশাসনের শীর্ষ মহল জানিয়েছে, গ্রিন বা অরেঞ্জ জ়োনে নতুন করে কোনও করোনা রোগীর খোঁজ মিললেই সেই এলাকায় চূড়ান্ত নিয়ন্ত্রণ করা হবে। আবার অরেঞ্জ জ়োন থেকে ২৮ দিন আক্রান্তের কোনও তথ্য পাওয়া না-গেলে সেই এলাকা গ্রিন জ়োনে ঢুকে পড়বে। এই ব্যবস্থা চলবে ২১ মে পর্যন্ত।
সংক্রমণহীন এলাকায় কোন ধরনের অর্থনৈতিক কাজকর্ম শুরু করা যাবে, সেই ব্যাপারে চলতি মাসের মাঝামাঝি নির্দেশিকা দিয়েছে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক। শপিং মল বাদে নথিভুক্ত একক দোকান খুলে দেওয়ার কথা বলেছে তারা। কিন্তু দোকান খুলে দিলে লকডাউন শিথিল হতে বাধ্য। সেই কারণে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের কাছে এ নিয়ে স্পষ্ট নির্দেশিকা চেয়েছে রাজ্য। মুখ্যসচিব বলেন, ‘‘আমি নিজে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রসচিবের সঙ্গে কথা বলেছি। আরও সাতটি রাজ্যের মুখ্যসচিবদের সঙ্গে কথা বলেছি। কেউই এখনও দোকান খুলে দেয়নি। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক স্পষ্ট নির্দেশ দিলে দোকান খোলা হবে। আমরাও চাই, রাজ্যের দোকানপাট খুলে যাক। কিন্তু সে-ক্ষেত্রে লকডাউন বলবৎ করা মুশকিল হয়ে দাঁড়াবে।’’
কেন্দ্রের ব্যাখ্যা এলে গ্রিন জ়োনের আওতায় থাকা রাজ্যের আটটি জেলায় নিয়ন্ত্রণ অনেকটাই শিথিল হতে পারে বলে নবান্ন সূত্রের খবর। বহু মানুষের জমায়েত হন, এমন পরিষেবা বাদ দিয়ে বাকি প্রায় সব কাজের অনুমতি দেওয়া হতে পারে। পাশাপাশি, অত্যাবশ্যক নয়, এমন পণ্যের হোম ডেলিভারি চালু করার নির্দেশিকাও বেরিয়েছে।
আরও পড়ুন: নিয়মের রকমফেরে ধোঁয়াশা লক্ষ্মণরেখায় বন্দি শহরে
কী ধরনের কাজের অনুমতি মিলবে গ্রিন জ়োনে? কেন্দ্রীয় নির্দেশিকা অনুযায়ী, পারস্পরিক দূরত্ব এবং স্বাস্থ্যবিধি মেনে ও সব এলাকায় চাষের কাজ করা যাবে। কৃষি বাজারগুলিও চলবে। কৃষিকাজের সঙ্গে যুক্ত যন্ত্রাংশ বিক্রি বা এক জায়গা থেকে অন্য জায়গায় নিয়ে যাওয়ার উপরে বিধিনিষেধ থাকবে না। কফি বা রবার চাষও করা যাবে ৫০ শতাংশ কর্মী নিয়ে। পশুখাদ্য তৈরি এবং সরবরাহ চলতে পারে।
একশো দিনের কাজেও ছাড় দেওয়া হয়েছে। রাজ্যের সিদ্ধান্ত, এ ক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট প্রকল্পের আওতায় থাকা শ্রমিকদের ৫০ শতাংশ করে পর্যায়ক্রমে ব্যবহার করা হবে। সড়ক, সেচ, জনস্বাস্থ্য কারিগরির কাজ করা চলবে। চটকল ও চা-বাগান চালানো যাবে কর্মী-সংখ্যা নিয়ন্ত্রণ করে। বিবেচনাসাপেক্ষে শিল্প সংস্থাগুলিও কাজ শুরু করতে পারে।
আরও পড়ুন: স্মৃতিতে মন্বন্তর, করোনার ত্রাণে দান বৃদ্ধ-বৃদ্ধার
নবান্ন সূত্র জানাচ্ছে, গ্রিন জ়োনের সঙ্গে অরেঞ্জ জ়োনের ছাড়ে কিছুটা ফারাক থাকবে। অরেঞ্জ জ়োনের ১১টি জেলায় পরিস্থিতি বুঝে সিদ্ধান্ত নেবে সরকার। রেড জ়োনে অবশ্য লকডাউন বিধি কঠোর ভাবেই মেনে চলা হবে।
(অভূতপূর্ব পরিস্থিতি। স্বভাবতই আপনি নানান ঘটনার সাক্ষী। শেয়ার করুন আমাদের। ঘটনার বিবরণ, ছবি, ভিডিয়ো আমাদের ইমেলে পাঠিয়ে দিন, feedback@abpdigital.in ঠিকানায়। কোন এলাকা, কোন দিন, কোন সময়ের ঘটনা তা জানাতে ভুলবেন না। আপনার নাম এবং ফোন নম্বর অবশ্যই দেবেন। আপনার পাঠানো খবরটি বিবেচিত হলে তা প্রকাশ করা হবে আমাদের ওয়েবসাইটে।)