রবীন্দ্র জয়ন্তীর এই দৃশ্য এ বার দেখা যাবে না বিশ্বভারতীতে।
কাল, শুক্রবার ‘অন্য রকম’ পঁচিশে বৈশাখও দেখবে বিশ্বভারতী। সৌজন্যে, লকডাউন!
লকডাউনের জেরে বন্ধ দেশের সমস্ত শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। বিশ্বভারতীও ব্যতিক্রম নয়। বসন্ত উৎসব, বর্ষবরণ অনুষ্ঠান, সাপ্তাহিক মন্দির-এর মতো ঐতিহ্যশালী অনুষ্ঠান বাতিল হয়ে গিয়েছে এই কেন্দ্রীয় বিশ্ববিদ্যালয়ে। তালিকায় সংযোজন রবীন্দ্র জন্মোৎসবের। বর্তমান পরিস্থিতিতে উৎসবের আয়োজন করা নিয়মগত ভাবেই অসম্ভব—এ কথা মেনে নিচ্ছেন ছাত্রছাত্রী, আশ্রমিক থেকে অধ্যাপকেরা। তবু রবীন্দ্রনাথ প্রতিষ্ঠিত বিশ্ববিদ্যালয়ে তাঁর জন্মোৎসবই পালন হবে না, এ কথা ভেবে তাঁরা বিমর্ষও। প্রবীণ আশ্রমিক সুপ্রিয় ঠাকুরের কথায়, ‘‘মানছি, এই পরিস্থিতিতে অনুষ্ঠান করার কোনও উপায় নেই। সঙ্গে খারাপ লাগাও রয়েছে। প্রতীকী অনুষ্ঠান কিছু করা যায় কিনা, তা একান্তই উপাচার্যের সিদ্ধান্ত।’’
একাধিক রবীন্দ্র গবেষক এবং বিশ্বভারতীর অধ্যাপকদের কাছ থেকে জানা যাচ্ছে, প্রচণ্ড গরমের জন্য ২৫ বৈশাখের আগেই গরমের ছুটি দেওয়ার চল শুরু হয় শান্তিনিকেতনে। তাই ১৯৩৬ সাল থেকে নিরবচ্ছিন্ন ভাবে পয়লা বৈশাখের দিনই রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের জন্মদিন পালন করে এসেছে বিশ্বভারতী। বর্ষবরণ এবং রবীন্দ্র জয়ন্তীর অনুষ্ঠান এক সঙ্গেই হত। তবে ২৫ বৈশাখ নিয়মিত ভাবে কাচমন্দিরে বিশেষ উপাসনার রীতি ছিল। যদিও প্রাক্তন উপাচার্য সুজিত বসুর সময় থেকে পয়লা বৈশাখের পরিবর্তে জন্ম দিবসের অনুষ্ঠান ২৫ বৈশাখে নিয়ে আসা হয়।
২৫ বৈশাখ সকালে কাচমন্দিরে বৈদিক মন্ত্রপাঠ, ব্রহ্ম উপাসনা, রবীন্দ্রসঙ্গীতের মধ্য দিয়ে জন্ম দিবস উদ্যাপনের সূচনা হয়। এর পরে উত্তরায়ণের ‘উদয়ন বাড়ি’তে রবীন্দ্রনাথের ব্যবহৃত আসনে পুষ্পস্তবক প্রদান করা হয়। তার পরে কোনও কোনও বছর বিশেষ বই প্রকাশের অনুষ্ঠান আবার কখনও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান আয়োজিত হয়। সন্ধ্যাবেলায় পাঠভবন বা শিক্ষাসত্রের নবম ও একাদশ শ্রেণির ছাত্রছাত্রীদের ব্যবস্থাপনায় নাটক অথবা নৃত্যনাট্য অনুষ্ঠিত হয়। এ বছর কোনও অনুষ্ঠান বা রীতি পালন হবে কিনা, তা জানতে চেয়ে বিশ্বভারতীর জনসংযোগ আধিকারিককে মেসেজ করা হলেও তিনি উত্তর দেননি।
(অভূতপূর্ব পরিস্থিতি। স্বভাবতই আপনি নানান ঘটনার সাক্ষী। শেয়ার করুন আমাদের। ঘটনার বিবরণ, ছবি, ভিডিয়ো আমাদের ইমেলে পাঠিয়ে দিন, feedback@abpdigital.in ঠিকানায়। কোন এলাকা, কোন দিন, কোন সময়ের ঘটনা তা জানাতে ভুলবেন না। আপনার নাম এবং ফোন নম্বর অবশ্যই দেবেন। আপনার পাঠানো খবরটি বিবেচিত হলে তা প্রকাশ করা হবে আমাদের ওয়েবসাইটে।)