বাগদায় রেশন বিলির সেই নোটিস
নমশূদ্র ? তা হলে আসুন অমুক তারিখে। আদিবাসী? তা হলে রেশন পাবেন তমুক দিন। পালেরা আসবেন অন্য তারিখে।
লকডাউনে ভিড় এড়াতে এই পদ্ধতিতে কুপন বিলি করছিলেন এক রেশন ডিলার। বিষয়টি প্রশাসনের কানে ওঠার পরে বন্ধ করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে জাতপাতের ভিত্তিতে রেশন বিলির কাজ। খোঁজখবর করে ব্যবস্থা নেওয়া হতে পারে বলে জানিয়েছেন খাদ্যমন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক।
ঘটনাটি বাগদা থানার বাগদা পুরনো বাজার এলাকার। মঙ্গলবার সকালে সেখানে যান উত্তর ২৪ পরগনা জেলা পরিষদের খাদ্য কর্মাধ্যক্ষ রতন ঘোষ। রেশন দোকানি ভবেশ বিশ্বাসকে এ কাজের জন্য ভর্ৎসনা করে পদক্ষেপ করার কথা বলেন রতনবাবু। খাদ্য দফতর ও প্রশাসনের নজরেও আনেন বিষয়টি।
আরও পড়ুন: কলকাতার বাইরে রাজ্যের কন্টেনমেন্ট জোন কী কী, দেখে নিন
আরও পড়ুন: লকডাউন যুঝতে ডিজিটাল লাইব্রেরি খুলে দিল কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়
দফতর ও স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, রেশন দোকানের সামনে সাদা কাগজে লাল কালির নোটিসে লেখা ছিল, কোন দিন কাদের রেশন দেওয়া হবে! ১ এবং ২ মে আদিবাসী সম্প্রদায়। ৩ এবং ৪ মে দাস, ৫ এবং ৬ মে নমশূদ্র, ৭ এবং ৮ মে পাল, ৯ এবং ১০ মে অন্যেরা।
রতনবাবু জানান, সোশ্যাল মিডিয়া থেকেই বিষয়টি নজরে আসে তাঁর। মঙ্গলবার ঘটনাস্থলে গিয়ে তিনি দেখেন, নমশূদ্র সম্প্রদায়ের মানুষজন এসেছেন রেশন তুলতে। তাঁর পৌঁছনোর আগেই অবশ্য নোটিস ছিঁড়ে ফেলা হয়েছিল। রেশন দোকানের অন্য গ্রাহকেরা অভিযোগ জানান, নির্দিষ্ট দিন ছাড়া তাঁদের রেশন দেওয়া হচ্ছে না। আর জাতপাতের পদ্ধতিতেই ভাগ করা হয়েছে গ্রাহকদের। রতনবাবু বলেন, ‘‘এ ভাবে জাতপাতের ভিত্তিতে রেশন দেওয়া বেআইনি কাজ। ডিলারকে বলা হয়েছে, যাঁরাই রেশন নিতে আসবেন, ভেদাভেদ না-করে রেশন দিতে হবে। উনি ভুল স্বীকার করে নিয়েছেন।’’
স্থানীয় বাসিন্দা কালীপদ বিশ্বাস ছিলেন রেশন ডিলার। তাঁর মৃত্যুর পরে ছেলে ভবেশ রেশন দোকান চালান। ডিলার অবশ্য অন্য এক ব্যক্তি। ভবেশ বলেন, ‘‘পঞ্চায়েত থেকে বলা হয়েছে। তাই এ ভাবে মালপত্র দিচ্ছিলাম।’’
পঞ্চায়েত অবশ্য এমন কথা মানেনি। বাগদার জেলা পরিষদ সদস্য পরিতোষ সাহা বলেন, ‘‘পঞ্চায়েত থেকে বলা হয়েছিল, গরিবদের আগে খাদ্যসামগ্রী দিতে হবে। জাতপাতের ভিত্তিতে দিতে বলা হয়নি। উনি নিজের মতো সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন।’’
বনগাঁর মহকুমাশাসক কাকলি মুখোপাধ্যায় জানান, ঘটনার সমাধান করা গিয়েছে। অনুচিত কাজ হয়েছিল। তাঁর কথায়, ‘‘ওই ব্যক্তির বিরুদ্ধে ব্যবস্থাগ্রহণের ব্যাপারে ভাবনাচিন্তা চলছে।’’ পর্যায়ক্রমে যাত্রীদের নিয়ে বিভিন্ন জেলার উদ্দেশে পাড়ি দেয় বাস।
(অভূতপূর্ব পরিস্থিতি। স্বভাবতই আপনি নানান ঘটনার সাক্ষী। শেয়ার করুন আমাদের। ঘটনার বিবরণ, ছবি, ভিডিয়ো আমাদের ইমেলে পাঠিয়ে দিন, feedback@abpdigital.in ঠিকানায়। কোন এলাকা, কোন দিন, কোন সময়ের ঘটনা তা জানাতে ভুলবেন না। আপনার নাম এবং ফোন নম্বর অবশ্যই দেবেন। আপনার পাঠানো খবরটি বিবেচিত হলে তা প্রকাশ করা হবে আমাদের ওয়েবসাইটে।)