সব রাজ্যেই বাড়ি ফেরার লোক কমেছে বলেই মত রেলের। ছবি: পিটিআই।
দিল্লি থেকে পশ্চিমবঙ্গে যাওয়ার জন্য পরপর সাতটি ট্রেন চালিয়েছিল দিল্লি সরকার। কিন্তু অষ্টমটি চালাতে গিয়ে হোঁচট খাওয়ার দশা। জুটছে না যথেষ্ট যাত্রী। রেল সূত্রের খবর, অষ্টম ট্রেনটি বুধবারের পরিবর্তে বৃহস্পতিবার চালানোর কথা ভাবা হচ্ছে। অতীতে হাওড়া ও উত্তরবঙ্গ-দু’প্রান্তের জন্যই ট্রেন চালানো হয়েছিল। যাত্রীদের পশ্চিমবঙ্গে বাসস্থানের ভিত্তিতে ভাগ করে দেওয়া হয়েছিল দু’প্রান্তের ট্রেনে। কিন্তু হাওড়ামুখী অষ্টম ট্রেনটিতে যাত্রীর স্বল্পতার কারণে রাজ্যের সব প্রান্তের লোকেদের এক সঙ্গে বাড়ি ফেরানোর পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে।
পুণে থেকে ট্রেনে দিল্লিতে এসে আটকে গিয়েছেন আকাশ ও কিটন রায়। সরাসরি পশ্চিমবঙ্গের ট্রেন না-পেয়ে দিল্লিতে মাসির বাড়িতে আসতে বাধ্য হন মালদহের ডাঙাপাড়ার এই দুই ভাই। গত তিন দিন চেষ্টা করছেন টিকিট কেটে কলকাতা ফেরার। কিন্তু সব ট্রেনের টিকিট ওয়েটিং তালিকায় থাকায় মাথায় হাত পড়ে গিয়েছিল দু’জনের। শ্রমিক স্পেশাল ছাড়বে শুনে তড়িঘড়ি নাম লিখিয়েছেন যাত্রী-তালিকায়।
দিল্লি সরকার সূত্রের খবর, পশ্চিমবঙ্গ ফেরার লোকের ভিড় অনেক কমে গিয়েছে। প্রতিটি ট্রেনে অন্তত ১৪০০ যাত্রী যেতে পারেন। ট্রেনে অন্তত ৯০% যাত্রী থাকতে হবে বলে নীতি রয়েছে রেলের। কোনও কোনও ক্ষেত্রে ৭৫% যাত্রী নিয়েও গিয়েছে শ্রমিক ট্রেন। কিন্তু গত সপ্তাহে ঝাড়খণ্ডগামী একটি ট্রেনে ৫০০-রও কম যাত্রী থাকায় ক্ষোভ জানায় রেল। রেল সূত্রের খবর, প্রথমে বুধবার ছাড়ার কথা ছিল হাওড়াগামী ট্রেনটির। কিন্তু গত কাল পর্যন্ত খুব কম যাত্রীর নাম আসায়, যাত্রার দিন পিছিয়ে বৃহস্পতিবার করা হয়। দিল্লি সরকার জানিয়েছে, যাত্রী হলে তবেই সম্ভবত বৃহস্পতিবার ট্রেন ছাড়বে। যাত্রীদের দিনক্ষণ জানিয়ে দেওয়া হবে ফোনে। যাত্রার দিনে যাত্রীরা একটি স্থানে জমা হবেন। শারীরিক পরীক্ষার পরে টোকেন দেওয়া হবে।
আরও পড়ুন: ওই সব শ্রমিকের তালিকা ছিল না কেন, প্রশ্ন প্রশাসনে
সব রাজ্যেই বাড়ি ফেরার লোক কমেছে বলেই মত রেলের। রাজধানী ও অন্যান্য দূরপাল্লার ট্রেন পরিষেবা শুরু হওয়ায় অনেক শ্রমিকই স্পেশাল ট্রেনের ভরসা না-করে নিজেরাই টিকিট কেটে ঘরে ফিরে গিয়েছেন। শ্রমিক স্পেশালের চাহিদা কমার বিষয়টি সুপ্রিম কোর্টকেও জানিয়েছে রেল। গত সপ্তাহে একটি মামলার শুনানিতে সুপ্রিম কোর্ট রেলকে নির্দেশ দেয় ১৫ দিনের মধ্যে শ্রমিকদের ঘরে পৌঁছে দেওয়ার। তখনই কেন্দ্র সুপ্রিম কোর্টকে জানিয়েছিল, অধিকাংশ পরিযায়ী শ্রমিক ঘরে ফিরে গিয়েছেন।
লকডাউন কার্যত উঠে যাওয়ায় শিল্প ক্ষেত্রে শ্রমিকদের চাহিদা বাড়তে শুরু করেছে। এখন বরং পরিযায়ী শ্রমিকেরা নিজেদের কাজের জায়গায় ফিরতে শুরু করেছেন। সে কারণেও ঘরে ফেরানোর জন্য যথেষ্ট শ্রমিক পাচ্ছে না শ্রমিক স্পেশাল ট্রেনগুলি।