প্রতীকী ছবি
করোনার কবলে প্রতি মাসে রাজ্যের রাজস্বে পাঁচ হাজার কোটি টাকা লোকসান হচ্ছে বলে নবান্নের হিসেব। কিন্তু কেন্দ্রের আর্থিক প্যাকেজের দেখা নেই। এই পরিস্থিতিতে পঞ্চদশ অর্থ কমিশনের সুপারিশ নতুন করে পর্যালোচনার দাবি জানাল রাজ্য। এক বছরের জন্য ঋণ পরিশোধে ‘মোরাটোরিয়াম’-এর আবেদনও জানিয়েছে তারা। আর্থিক অবস্থা সামাল দিতে কেন্দ্রের বিভিন্ন পদক্ষেপের সমালোচনা করেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
মুখ্যমন্ত্রীর বক্তব্য, এফআরবিএম তিন থেকে পাঁচ শতাংশ করার দাবি জানানো হয়েছে। কিন্তু কেন্দ্র কিছুই করেনি। সব রাজ্যেরই কথা বলা হচ্ছে। ‘‘পঞ্চদশ অর্থ কমিশন যে-রিপোর্ট দিয়েছে, তা তো আগের। কোভিডে পুরেপুরি অর্থনীতি বদলে গিয়েছে। তাই নতুন করে পর্যালোচনা করা উচিত বলে মনে করি। আমাদের যে-টাকা শোধ করতে হয়, তার মোরাটোরিয়াম এক বছরের জন্য করা উচিত। কিছুই দিচ্ছে না। সব টাকা আটকে রেখে দিয়েছে। ভাষণে তো হবে না। ভাষণের সঙ্গে রেশন দরকার। টাকা না-দিলে বেতন হবে কোথা থেকে? নো আর্নিং, অনলি বার্নিং। আর্নিং-এর সব রাস্তা বন্ধ করে দিয়েছে, রাজ্যগুলো চালাবে কী করে? কোভিডে খরচা হচ্ছে প্রচুর। কিছুই দিচ্ছে না। গরিবের সংসার, সাধ্যমতো চেষ্টা করছি,’’ বলেন মুখ্যমন্ত্রী।
সাংসদদের ৩০ শতাংশ বেতন কেটে নেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে কেন্দ্র। সাংসদ তহবিলের টাকাও কাটা হয়েছে। কেন্দ্রীয় কর্মীদের ডিএ বন্ধ করে দিয়েছে নরেন্দ্র মোদীর সরকার। কিন্তু সীমিত ক্ষমতার মধ্যেও রাজ্য সরকার বেতন-ভাতা-পেনশন দিচ্ছে বলে জানান মমতা। তাঁর কথায়, ‘‘আইএএস-আইপিএসদের মাইনের অনেক কিছু ফ্রিজ করেছে, বাড়াবে না বলেছে। আরও অনেক বিধিনিষেধ চালু করেছে। আমরা তো কিছু করিনি। মনে রাখবেন, মানবিক সরকার আমরাই। অনেক রাজ্য অর্ধেক বেতন দিয়েছে। চুরি-ডাকাতি করব না। এই ভান্ডারে যা আছে, সব ভাগ করে দেব, কার্পণ্য করব না।’’
মুখ্যমন্ত্রী জানান, প্রধানমন্ত্রীর কথাবার্তায় তাঁর মনে হয়েছে, করোনা-পরিস্থিতি অনেক দিন চলতে পারে। সেই জন্য বন্ধ থাকা অনেক জরুরি কাজ শুরু করার পক্ষে সওয়াল করেছেন মুখ্যমন্ত্রী। লকডাউনের সময় গরিব ও পিছিয়ে পড়া মানুষের দায়িত্ব কেন্দ্রের নেওয়ার কথা বলে মনে করেন মমতা। তাঁর কথায়, ‘‘২১ মে পর্যন্ত সাবধানে চলব। ৪৯ দিনের কথা আমরা আগেও বলেছি, এখনও বলছি। কিসে ছাড় দিলে মানুষের ক্ষতি হবে না, তা বুঝে সিদ্ধান্ত নিতে হবে।’’ তিনি জানান, চা-বাগানের শ্রমিক, ১০০ দিনের শ্রমিক, অসংগঠিত ক্ষেত্রের কর্মী— সকলের অ্যাকাউন্টে ১০ হাজার টাকা করে দেওয়া দরকার। কেন্দ্র তো বলেছিল ১৫ লক্ষ টাকা করে দেওয়া হবে! অনেক টাকা উঠেছে, তার থেকে দিয়ে দিতে পারে। ‘‘আরবিআই থেকে কম হারে টাকা ধার নিতে দাও রাজ্যকে। কিছু প্রকল্প আছে, শুধু প্রচারের জন্য হাজার হাজার কোটি টাকা রেখে দিয়েছেন, সেগুলো রিফর্ম করুন। রাজ্যগুলো তো করছে! রাজ্যের হাতে সুযোগ কম। সবটা কেন্দ্র স্পনসর করে। ব্যাঙ্ক-অর্থনীতি সব আপনারা নিয়ন্ত্রণ করেন। মুখের খাবার কেড়ে বড় বড় ভাষণ দেওয়াকে রিফর্ম বলে না,’’ এ ভাবেই কেন্দ্রকে বিঁধেছেন মমতা।
আরও পড়ুন: মুখ্যমন্ত্রীকে চিঠি
(অভূতপূর্ব পরিস্থিতি। স্বভাবতই আপনি নানান ঘটনার সাক্ষী। শেয়ার করুন আমাদের। ঘটনার বিবরণ, ছবি, ভিডিয়ো আমাদের ইমেলে পাঠিয়ে দিন, feedback@abpdigital.in ঠিকানায়। কোন এলাকা, কোন দিন, কোন সময়ের ঘটনা তা জানাতে ভুলবেন না। আপনার নাম এবং ফোন নম্বর অবশ্যই দেবেন। আপনার পাঠানো খবরটি বিবেচিত হলে তা প্রকাশ করা হবে আমাদের ওয়েবসাইটে।)