নিয়ম ভেঙে: লকডাউন চলছে। তার মধ্যেই শিলিগুড়ির রাস্তায় গাড়ির ভিড়। রাস্তায় নেমেছে পুলিশও। শুক্রবার। ছবি: বিশ্বরূপ বসাক
শিলিগুড়িতে একেবারেই ঠিকঠাক লকডাউন মানা হচ্ছে না বলে শিলিগুড়ির পুলিশ কমিশনার ত্রিপুরারি অথর্বকে রীতিমত ধমক দিলেন খোদ মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। শুক্রবার বিকালে নবান্নের সভাঘর থেকে রাজ্যের সমস্ত জেলাশাসক, পুলিশ কমিশনার এবং পুলিশ সুপারদের সঙ্গে ভিডিয়ো কনফারেন্সে বৈঠক করেন মুখ্যমন্ত্রী। সেখানেই তিনি শিলিগুড়ির পুলিশ কমিশনারকে জরুরি ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ দেন, ধমকও দেন। কয়েকদিন ধরে লকডাউনের মধ্যেও শিলিগুড়িতে নানা এলাকায় ভিড় হচ্ছে। সেই বিষয়ে খবর টানা আনন্দবাজার পত্রিকায় প্রকাশিত হয়েছে।
এ দিন মুখ্যমন্ত্রীকে বলতে শোনা গিয়েছে, শিলিগুড়ি খুব গুরুত্বপূর্ণ। বিহারের সীমানা রয়েছে। নর্থ ইস্টের গেটওয়ে। বাইরে থেকে বহু লোকজন এখানে আসে। তাই শিলিগুড়িতে কঠোরভাবে লকডাউন করতে হবে। অনেকে ফোন করছেন বাইরে থেকে বন্ধুরা চলে আসছেন। এটা চলবে না। এর পরেই পুলিশ কমিশনারকে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘‘ত্রিপুরারি আপনাকে কঠোর হতে হবে। আগেও অনেক সময় দেখেছি আপনি সঠিক সময় কিছু কিছু আমাদের জানাননি। এটা আর চলবে না। দেশের সেবা, মানুষের সেবা অনেক বড় বিষয়।’’ কয়েকদিন আগেও একইভাবে ভিডিয়ো কনফারেন্স থেকে পুলিশ কমিশনারকে সতর্ক করেন মুখ্যমন্ত্রী। সেইদিনই অভিজ্ঞ আইপিএস অফিসার অজয় কুমারকে দার্জিলিং, কালিম্পঙের পাহাড় দেখার সঙ্গে সঙ্গে শিলিগুড়ি কমিশনারেট এলাকা দেখার জন্য বলা হয়। কিন্তু তাতেও খুব একটা বদলায়নি শহরের অবস্থা। লকডাউন ভেঙে, মাস্ক ছাড়া বাইরে ঘুরে বেড়ানো চলছেই।
পুলিশ সূত্রের খবর, লকডাউনের মধ্যে শিলিগুড়ির পরিস্থিতির খবর ধাপে ধাপে নবান্নে পৌঁছয়। সেখানে পুলিশের একাংশের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন ওঠে। ডিসি, এসিপিদের একাংশ এবং খোদ সিপি-র ভূমিকা নিয়ে নবান্ন অসন্তোষ প্রকাশ করেছে বলে সূত্রের খবর। মহিলা অফিসারেরা কেন রাস্তায় নেই সেই প্রশ্নও ওঠে। বৃহস্পতিবার মুখ্য সচিব জেলাশাসক এবং পুলিশ কমিশনারকে কঠোরভাবে লকডাউন করানোর উপর জোর দিতে বলেন।
বৃহস্পতিবার বিকাল থেকে ময়দানে নামে পুলিশ। শুক্রবার বিকাল অবধি লকডাউনে বিধি ভাঙার জন্য শিলিগুড়িতে গ্রেফতার হয়েছেন ১১৮ জন। গাড়ি, বাইক আটক হয়েছে ৫৪টি। শুক্রবার সকাল থেকে হাসমিকচক, দার্জিলিং মোড়, স্টেশন ফিডার রোড, মহাত্মা গাঁধী মোড়, চেকপোস্ট, জলপাইমোড়ের মত গুরুত্বপূর্ণ মোড়ে পুলিশি অভিযান হয়েছে। শিলিগুড়ির ডিসি (সদর) নিমা নরবু ভুটিয়া বলেন, ‘‘সব থানা এলাকাতেই কড়া নজরদারি চলছে। প্রয়োজনে গ্রেফতার করা হচ্ছে। গাড়ি আটক হচ্ছে।’’