প্রতীকী ছবি।
অভিযোগ এবং কিছু কিছু ব্যবস্থাগ্রহণ সত্ত্বেও রাজ্যে রেশন নিয়ে গোলমাল থামছে না। শনিবার মুর্শিদাবাদের পরে রবিবার ঝামেলা হয় পূর্ব মেদিনীপুরের নন্দীগ্রামে। সেখানে ছুটির দিনে রেশনে চাল-ডাল বিলি নিয়ে বিক্ষোভ দেখান গ্রাহকদের একাংশ। ১ মে প্রধানমন্ত্রী গরিব কল্যাণ অন্ন যোজনার চাল বিলি শুরু হয়েছে। তার পরে এ-পর্যন্ত সালার, লালগোলা, কুলপি-সহ অন্তত ১৭টি জায়গায় বিক্ষোভ হয়েছে গ্রাহকদের। প্রশাসন জানিয়েছে, ১৭ জন রেশন ডিলারের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। রেশন দোকানে গিয়ে যাঁরা হিংসা ছড়াচ্ছেন, তাঁদের বিরুদ্ধেও ব্যবস্থা নেবে পুলিশ।
খাদ্যমন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক বলেন, ‘‘সরকার দোষীদের শাস্তি দেবে। আসলে বিরোধীরা মানুষকে উস্কে দিয়ে এই মহামারির সময়ে অরাজকতার সৃষ্টি করতে চাইছে।’’
রবিবার দুপুরে নন্দীগ্রাম-২ ব্লকের সাঁইবাড়ি গ্রামে রেশন দোকানে ওজনে কম দেওয়ার অভিযোগে এক শ্রেণির গ্রাহক রেশন ডিলার তপনকুমার সাহুর দোকানে তালা লাগিয়ে দেন। ডিলারের বাইক ভাঙচুর করে পুকুরে ফেলে দেওয়া হয়। নন্দীগ্রাম-২ ব্লকের বিডিও সুরজিৎ রায় বলেন, ‘‘অভিযোগের ভিত্তিতে দোকানটি বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। রেশন দেওয়ার হচ্ছে পাশের একটি দোকান থেকে।’’ অভিযুক্ত রেশন ডিলার সব অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, ‘‘ওজন ঠিক ছিল কি না, তদন্ত হলেই বোঝা যাবে।’’ গ্রাহকদের কাছ থেকে রেশনসামগ্রী কিনে নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে পাঁশকুড়ার কয়েক জন ডিলারের বিরুদ্ধে। অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণের আশ্বাস দিয়েছে খাদ্য দফতর। স্থানীয় এক গ্রাহক বলেন, ‘‘বাড়িতে চাষের ধান থেকে তৈরি চাল আছে। তাই রেশনের চাল বাইরে কোথায় বিক্রি করব! ডিলার চালের বদলে টাকা দিচ্ছেন।’’
আরও পড়ুন: গাইঘাটায় আক্রান্ত, তবু ফিরল না হুঁশ
রেশনকে ঘিরে ক্ষোভ-বিক্ষোভ প্রশমনে মুর্শিদাবাদের পুলিশ-প্রশাসন ও খাদ্য দফতরের প্রতিনিধিরা এ দিন জেলার বিভিন্ন রেশন দোকানে ঘোরেন। রেশন ডিলার ও গ্রাহকদের সঙ্গে কথা বলেন। দেরিতে দোকান খোলায় দুই ডিলারকে শো-কজ় করা হয়েছে। জেলাশাসক জগদীশপ্রসাদ মিনা বলেন, ‘‘কয়েক জন ডিলারকে সাসপেন্ড, শো-কজ় করা হয়েছে। রেশনে গরমিল করলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’’ মুর্শিদাবাদের অনেক এলাকায় ডিজিটাল রেশন কার্ডের তথ্যে ভুল নিয়েও ক্ষোভ ছড়িয়েছে। কার্ড না-পাওয়া গ্রাহকদের যে-সব কুপন দেওয়া হয়েছে, তাতেও ভুলের অভিযোগ উঠেছে। এর দায় কার্যত গ্রাহকদের কাঁধে চাপিয়ে জেলা খাদ্য নিয়ামক সাধন পাঠক বলেন, ‘‘গ্রাহকেরা আবেদনপত্র জমা দেওয়ার সময়েই ভুল করেছেন। লকডাউনের পরে অফিস থেকে অথবা ওয়েবসাইট থেকে নির্দিষ্ট ফর্ম পূরণ করলেই ভুল ঠিক করে দেওয়া যাবে।’’
আরও পড়ুন: ব্যারাকপুরে আক্রান্ত আরও দুই, বসিরহাটে রিপোর্ট নেগেটিভ
খাদ্যমন্ত্রী জানান, শনিবার পর্যন্ত এক কোটি ৬৭ লক্ষ মানুষ রেশনের চাল তুলেছেন। কেন্দ্রীয় সরকার সাড়ে ১৪ হাজার টন ডাল দিতে না-পারায় ডাল বিলি করা যায়নি।
(অভূতপূর্ব পরিস্থিতি। স্বভাবতই আপনি নানান ঘটনার সাক্ষী। শেয়ার করুন আমাদের। ঘটনার বিবরণ, ছবি, ভিডিয়ো আমাদের ইমেলে পাঠিয়ে দিন, feedback@abpdigital.in ঠিকানায়। কোন এলাকা, কোন দিন, কোন সময়ের ঘটনা তা জানাতে ভুলবেন না। আপনার নাম এবং ফোন নম্বর অবশ্যই দেবেন। আপনার পাঠানো খবরটি বিবেচিত হলে তা প্রকাশ করা হবে আমাদের ওয়েবসাইটে।)