বোলপুরের রাঙাবিতান-সহ পাঁচটি সরকারি পর্যটন নিবাস খোলার ঘোষণা করল রাজ্য সরকার। ছবি: সংগৃহীত।
করোনা রুখতে লকডাউনের ফলে যে শিল্পক্ষেত্রগুলি সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে সেগুলির মধ্যে প্রথম সারিতেই রয়েছে পর্যটন। এখন রাজ্যে ধাপে ধাপে লকডাউন তোলার প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। এর মধ্যেই পাঁচটি সরকারি পর্যটন নিবাস খোলার ঘোষণা করল রাজ্য সরকার। পর্যটনমন্ত্রী গৌতম দেব জানিয়েছেন, ৮ জুন থেকে দক্ষিণবঙ্গের চারটি এবং উত্তরবঙ্গের ১টি পর্যটক নিবাসের বুকিং শুরু হবে। দফতর সূত্রের খবর, আপাতত বোলপুরের রাঙাবিতান, ডুয়ার্সের টিলাবাড়ির তিলোত্তমা, বিষ্ণুপুর পর্যটক নিবাস, মাইথন মুক্তধারা ও ডায়মন্ডহারবারে সাগরিকা খোলা হচ্ছে।
প্রশ্ন উঠেছে, গরমের মরসুমে যেখানে পাহাড়ে, ডুয়ার্সে যাওয়ার ঝোঁক বেশি থাকে সেখানে দক্ষিণবঙ্গের পর্যটক আবাসগুলি খোলা হল কেন? সূত্রের খবর রাজ্যের যে যে পর্যটক আবাসে প্রচুর জায়গা, দূরত্ব বিধি মানা সম্ভব হবে সেগুলি আপাতত খোলা হয়েছে। মন্ত্রী বলেন, ‘‘অল্প ঘর, প্রচুর জায়গা, সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখার কথা মাখায় রেখেই পাঁচটি পর্যটক আবাস আপাতত খোলা হচ্ছে। পরের ধাপে বাকিগুলির কথা ভাবা হবে।’’ টানা ক্ষতির ফলে পাহাড়ে প্রায় তিনশো হোটেল বন্ধ হওয়ার সম্ভাবনা। জিটিএ চেয়ারম্যান অনীত থাপা বলেন, ‘‘এমন হলে অন্তত ১০ হাজার কর্মী অসহায় হয়ে পড়বেন। হোটেল মালিক, কর্মী সংগঠনের সঙ্গে দ্রুত বৈঠকে বসছি।’’
কিছু দিন ধরেই দেশের নানা প্রান্তে আটকে থাকা এই রাজ্যের বাসিন্দারা ফিরতে শুরু করেছেন। তাঁদের মধ্যে রয়েছে বিশাল সংখ্যক পরিযায়ী শ্রমিক। রাজ্যে প্রতি দিনই বাড়ছে করোনা সংক্রমণের সংখ্যা। এই পরিস্থিতিতে পর্যটন আবাসে বুকিং আদৌও হবে কি না, উঠছে সেই প্রশ্নও। বীরভূমের রাঙাবিতান, বাঁকুড়ার বিষ্ণুপুর পর্যটক নিবাস খোলা হচ্ছে। এ দিকে এই জেলাগুলো থেকে প্রায়শই নতুন সংক্রমণের খবর মিলছে। একই পরিস্থিতি জলপাইগুড়িরও। এই জেলায় টিলাবাড়ি পর্যটন আবাস খোলা হচ্ছে। পর্যটন দফতর সূত্রের খবর, রাজ্যে পর্যটন ক্ষেত্রকে চাঙ্গা করতে সরকার এই পদক্ষেপ করেছে। সরকারের তরফে পর্যটন আবাস খোলার পরে যদি কিছু সাড়া পাওয়া যায় সে ক্ষেত্রে বেসরকারি তরফেও ভাবনাচিন্তা করা হবে বলে মনে করছেন দফতরের আধিকারিকরা। এখন লোকসানের বহর বৃদ্ধির আশঙ্কায় হোটেল-রিসর্ট খুলতে চাইছেন না বেসরকারি হোটেল মালিকরা। উত্তরবঙ্গের একটি পর্যটন সংস্থার তরফে সম্রাট সান্যাল বলেন, ‘‘সরকার অনিশ্চয়তার মধ্যে এগিয়ে এসেছে। ভাল উদ্যোগ। এতে পরিস্থিতি বদল হতে পারে বলে আমরা আশাবাদী।’’
আরও পড়ুন: অর্থ-সঙ্কট চরমে, বন্ধ বিধায়ক কোটার টাকা
আরও পড়ুন: ‘বাংলা’কে তুলে ধরে এ বার মাস্ক শাসকের