ছবি: সংগৃহীত।
রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্তে রেশন বিলি নিয়ে নানান অনিয়মের অভিযোগ-বিক্ষোভের পাশাপাশি পুলিশ-প্রশাসনের তরফে ব্যবস্থা গ্রহণেরও খবর আসছে। তারই মধ্যে খাদ্যসচিব পারভেজ সিদ্দিকিকে সঙ্গে নিয়ে রাজ্যের স্বরাষ্ট্রসচিব আলাপন বন্দ্যোপাধ্যায় মঙ্গলবার নবান্নে দাবি করেন, চলতি মাসের প্রথম চার দিনে চার কোটি ৭৫ লক্ষ গ্রাহক রেশনের চাল তুলেছেন। ২৪.৯ লক্ষ কুইন্টাল চাল ও গম বিনামূল্যে নিয়ে গিয়েছেন তাঁরা। এটা মাসিক বরাদ্দের ৪৮%। ‘‘এই বিপুল কাজ কার্যত সম্পূর্ণ শান্তিপূর্ণ ভাবে করা সম্ভব হয়েছে। কোথাও রেশন ডিলারদের গলদ দেখলে সঙ্গে সঙ্গে ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে,’’ বলেন স্বরাষ্ট্রসচিব।
করোনা পরিস্থিতিতে রাজ্যে এপ্রিল থেকে সেপ্টেম্বর পর্যন্ত বিনামূল্যে রেশন বণ্টনের কথা ঘোষণা করেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ন’কোটি ৯৫ লক্ষ রেশন গ্রাহকের এই সুবিধা পাওয়ার কথা। তাঁদের মধ্যে ন’কোটি ৩০ লক্ষ গ্রাহকের ডিজিটাল রেশন কার্ড আছে। বাকি ৬৫ লক্ষ গ্রাহককে কুপন দেওয়া হয়েছে। স্বরাষ্ট্রসচিব জানান, বিনামূল্যে রেশন পাবেন সকলেই। বিরোধী শিবিরের অভিযোগ, প্রধানমন্ত্রী গরিব কল্যাণ অন্ন যোজনায় রাজ্যের ছ’কোটি মানুষকে তিন মাস পাঁচ কিলোগ্রাম চাল ও পরিবার-পিছু এক কিলোগ্রাম ডাল দেওযার কথা ঘোষণা করেছে কেন্দ্র। কিন্তু এ রাজ্যে সেই পরিমাণ রেশন মিলছিল না। সেই জন্যই রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্তে বিক্ষোভ-গোলমাল শুরু হয়েছিল। রাজ্যের দাবি, কেন্দ্রের দেওয়া চালের সঙ্গে রাজ্যের কোটার চালও পাওয়া যাবে।
বিজেপির রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ বলেন, ‘‘এ রাজ্যে রেশন এবং স্বাস্থ্য ব্যবস্থা ভেঙে পড়ছে। লকডাউনে গৃহবন্দি গরিব মানুষকে পর্যাপ্ত রেশন দিচ্ছে না রাজ্য সরকার। মানুষ করোনা পরীক্ষা করাতে গিয়েও তার সুযোগ না-পেয়ে ফিরে আসছেন। প্রকৃত তথ্য তুলে ধরায় আমাদের কর্মীদের নামে মিথ্যা মামলা দেওয়া হচ্ছে।’’
আরও পড়ুন: রাজ্য জুড়ে নজর রাখছেন ৬০ হাজার স্বাস্থ্যকর্মী, ফেসবুকে হিসাব দিলেন মমতা
আরও পড়ুন: অনিশ্চিত ভবিষ্যৎকে সঙ্গে নিয়ে ‘স্বস্তি’র ফেরা কিতাবুরের
তবে স্বরাষ্ট্রসচিবের বক্তব্য, কেন্দ্রীয় সরকারের কাছ থেকে প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী ডাল পাওয়া যায়নি। প্রতি মাসে ১৪,৫৩০ মেট্রিক টন ডালের প্রয়োজন। কিন্তু পাওয়া গিয়েছে ৬৫৫০ মেট্রিক টন। ফের ডাল এলে তা বিতরণের দিনক্ষণ জানানো হবে।
সরকার যে দুর্নীতিগ্রস্ত রেশন ডিলারদের বিরুদ্ধে কড়া অবস্থান নিচ্ছে, পরিসংখ্যান তুলে ধরে তা বোঝানোর চেষ্টা করেন স্বরাষ্ট্রসচিব ও খাদ্যসচিব। তাঁরা জানান, করোনা পর্বেই ৩৫৯ জন রেশন ডিলারকে ‘শো-কজ়’ করা হয়েছে। সাময়িক ভাবে বরখাস্ত করা হয়েছে ৬৪ জনকে। ২৫ জনের জরিমানা হয়েছে। পুলিশ ও খাদ্য দফতর ৪৫টি মামলা করেছে। স্বরাষ্ট্রসচিব জানান, মে-র প্রথম চার দিনেই ২১ জন ডিলারের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গৃহীত হয়েছে।
খাদ্য ভবন সূত্রের দাবি, মে মাসে রেশন বিলি নিয়ে রাজ্যের ২১টি জায়গায় বিক্ষোভ হয়েছে। যে-সব রেশন ডিলারের বিরুদ্ধে গ্রাহকেরা বিক্ষোভ দেখিয়েছেন, তাঁদের সকলকে শাস্তি দেওয়া হবে। পাশাপাশি রেশন বিলিবণ্টন নিয়ে গোলমাল বাধানোর পিছনে কারও ইন্ধন থাকলে পুলিশকে তার বা তাদের বিরুদ্ধেও উপযুক্ত ব্যবস্থা গ্রহণ করতে বলা হয়েছে।
(অভূতপূর্ব পরিস্থিতি। স্বভাবতই আপনি নানান ঘটনার সাক্ষী। শেয়ার করুন আমাদের। ঘটনার বিবরণ, ছবি, ভিডিয়ো আমাদের ইমেলে পাঠিয়ে দিন, feedback@abpdigital.in ঠিকানায়। কোন এলাকা, কোন দিন, কোন সময়ের ঘটনা তা জানাতে ভুলবেন না। আপনার নাম এবং ফোন নম্বর অবশ্যই দেবেন। আপনার পাঠানো খবরটি বিবেচিত হলে তা প্রকাশ করা হবে আমাদের ওয়েবসাইটে।)