Migrant Workers

মৃতদেহের সঙ্গে এক ট্রাকে তিন শ্রমিক

ট্রাকের ডালার ভিতরে মৃতদেহের সঙ্গে এক শ্রমিকের তোলা নিজস্বী সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়ানোয় ঘি পড়ে বিতর্কে।

Advertisement

প্রশান্ত পাল

পুরুলিয়া শেষ আপডেট: ১৯ মে ২০২০ ০৪:০৬
Share:

ট্রাকে মৃতদেহের পাশে শিবু। ছবি ওঁরই তোলা।

ট্রাকের ডালার মধ্যে ছ’টি মৃতদেহ এবং আহত তিন জন। উত্তরপ্রদেশের ঔরৈয়া থেকে প্রায় ১১ ঘণ্টা এ ভাবেই আসতে হয়েছে বলে অভিযোগ শনিবার ভোরের ট্রাক দুর্ঘটনায় আহত পুরুলিয়ার তিন জনের। সোমবার জেলায় পৌঁছে তাঁদের ক্ষোভ, ‘‘বহু বার বললেও ড্রাইভারের পাশে বসতে দেওয়া হয়নি। প্রচণ্ড গরমের মধ্যে গন্ধে বমি আসছিল!’’ ট্রাকের ডালার ভিতরে মৃতদেহের সঙ্গে এক শ্রমিকের তোলা নিজস্বী সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়ানোয় ঘি পড়ে বিতর্কে। ঔরৈয়ার জেলাশাসক অভিষেক সিংহ ফোন ধরেননি। জবাব আসেনি হোয়াটসঅ্যাপ-মেসেজের।

Advertisement

দুর্ঘটনায় মৃত শ্রমিকদের দেহ আনতে শনিবার রাতে উত্তরপ্রদেশে রওনা হয় পুরুলিয়া প্রশাসন। সেই খবর পেয়ে ফিরতে চেয়ে উত্তরপ্রদেশ প্রশাসনকে তাঁরা জানান বলে দাবি পুরুলিয়া মফস্সলের বোঙাবাড়ি গ্রামের শিবু কর্মকার, পাড়ার ভাঁউরিডি গ্রামের কৈলাস মাহাতো ও কোটশিলার উপরবাটরি গ্রামের গোপাল মাহাতোর। তাঁদের দাবি, রবিবার সকালে একটি ট্রাকের ডালায় ছ’টি মৃতদেহের সঙ্গে তিন জনকে তুলে দেওয়া হয়। দেহ তোলার কাজেও তাঁদের হাত লাগাতে হয়। শিবু বলেন, ‘‘রবিবার সকাল ৮টা নাগাদ রওনা হই ঔরৈয়া থেকে। যেখানে যেখানে ট্রাক থেমেছে, চালককে অনুরোধ করেছি কেবিনে বসতে দিতে। লাভ হয়নি।’’ কৈলাস বলেন, ‘‘এক বার চালক খুব সামান্য সময় দু’জনকে সামনে বসান। ফের পিছনে ফিরিয়ে দেন। ১১ ঘণ্টা পরে, ইলাহাবাদ ঢোকার আগে ট্রাক থেকে নামিয়ে দেহ আর আমাদের আলাদা আলাদা অ্যাম্বুল্যান্সে তোলা হয়।’’ পরে মুঘলসরাইয়ের একটি হাসপাতালে পুরুলিয়া প্রশাসনের প্রতিনিধিদের হাতে দেহগুলির সঙ্গে তাঁদেরও তুলে দেওয়া হয়। পুরুলিয়ার জেলাশাসক রাহুল মজুমদার বলেন, ‘‘আমরা যখন থেকে ওই শ্রমিকদের হাতে পেয়েছি, তখন থেকে তাঁদের যে সম্মান প্রাপ্য, তা দেওয়া হয়েছে।’’

উত্তরপ্রদেশের ঔরৈয়া জেলা কংগ্রেস সভাপতি শিববীর দুবে বলেন, ‘‘অমানবিক ঘটনা। তদন্তের দাবি জানিয়েছি।’’ পুরুলিয়া জেলা পরিষদের সভাধিপতি তৃণমূলের সুজয় বন্দ্যোপাধ্যায়ের মন্তব্য, ‘‘আহতদের সঙ্গে যা করা হল, তা থেকে স্পষ্ট, পরিযায়ী শ্রমিদের কী চোখে দেখে বিজেপির সরকার।’’ তবে বিজেপির রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষের বক্তব্য, ‘‘হতে পারে, হয় তো (আহতেরা) অজ্ঞান ছিলেন। যাঁরা গাড়িতে তুলেছেন, তাঁরা বুঝতে পারেননি।’’ তাঁর সংযোজন, ‘‘এমন হয়ে থাকলে, তদন্ত হওয়া উচিত। আমাদের রাজ্যের পক্ষ থেকে লেখাও উচিত।’’

Advertisement

আরও পড়ুন: মহা ঘূর্ণিঝড় আমপান: ঘণ্টায় ১৯৫ কিলোমিটারের অশনি সঙ্কেত

আরও পড়ুন: ‘২৯ দিন টানা হাঁটা, পায়ের যন্ত্রণায় ঘুম আসত না রাতে’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement