কমিশনের চেয়ারম্যান অভিরূপ সরকার।—ফাইল চিত্র।
ষষ্ঠ বেতন কমিশনের সুপারিশ নিয়ে মোটের উপর খুশি রাজ্যের কর্মচারী মহল। কিন্তু ভবিষ্যতে কেন্দ্রীয় হারে মহার্ঘ ভাতা পাওয়ার প্রশ্নে তাঁদের মনে সংশয় দানা বেঁধেছে। কারণ, বেতন কমিশন তার সুপারিশে বলেছে, মহার্ঘ ভাতা (ডিএ) দেওয়ার ক্ষেত্রে অল ইন্ডিয়া কনজিউমার্স প্রাইস ইনডেক্স (এআইসিপিআই) মানা বাধ্যতামূলক নয়।
এ প্রসঙ্গে কমিশনের চেয়ারম্যান অভিরূপ সরকার বলেন, ‘‘কমিশন মনে করে, ডিএ দেওয়ার ক্ষেত্রে সর্বভারতীয় খুচরো মূল্যবৃদ্ধি সূচকই একমাত্র বিবেচ্য নয়।’’ তা হলে রাজ্য সরকার ভবিষ্যতে কীসের ভিত্তিতে ডিএ ঠিক করবে? অভিরূপবাবুর মন্তব্য, ‘‘সেটা সরকারের ভাবার কথা। কমিশনের নয়।’’
কেন্দ্রীয় সরকার এআইসিপিআই মেনেই বছরে দু’বার, সাধারণ ভাবে জুলাই ও ডিসেম্বর মাসে, তার কর্মীদের ডিএ দেয়। রাজ্য সরকারি কর্মীরা বরাবরই কেন্দ্রীয় হারে ডিএ চেয়ে সরব। সম্প্রতি ডিএ মামলার রায়েও স্টেট অ্যাডমিনিস্ট্রেটিভ ট্রাইব্যুনাল (স্যাট) কেন্দ্রীয় হারে ডিএ দেওয়ার দাবি মেনে নিয়েছে। সেই রায়ে বলা হয়েছে, কর্মীদের বকেয়া ডিএ দেওয়ার ক্ষেত্রে রাজ্যকে তিন মাসের মধ্যে সিদ্ধান্ত নিয়ে, ছ’মাসের মধ্যে হিসাবনিকেশ করে এক বছরের মধ্যে বাস্তবায়িত করতে হবে। এই মামলায় কেন্দ্রীয় হারে ডিএ দেওয়ার ‘সূত্র’কেই চ্যালেঞ্জ করেছিল রাজ্য সরকার । কিন্তু আদালত তা মানেনি। স্যাটের রায়কে চ্যালেঞ্জ করে উচ্চ আদালতে যাওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছে নবান্ন।
এখন নতুন বেতন কমিশনের ফলে রাজ্য সরকারি কর্মীদের বেতন বৃদ্ধিও কেন্দ্রের সমতুল হতে চলেছে। কিন্তু নতুন বেতন কাঠামো তৈরি হওয়ার পরে যখন ডিএ দেওয়ার প্রশ্ন আসবে, তখন রাজ্য বেতন কমিশনের সুপারিশ মেনে নিলে তাঁদের কেন্দ্রীয় হারে ডিএ চাওয়ার অধিকার থাকবে না বলে মনে করা হচ্ছে।
অর্থ দফতরের এক কর্তা জানাচ্ছেন, ডিএ নির্ধারণের ক্ষেত্রে কমিশন যখন বলেই দিয়েছে যে এআইসিপিআই মানা বাধ্যতামূলক নয়, তখন কেন্দ্র ডিএ দিলেই রাজ্যকে দিতে হবে, এমন বাধ্যবাধকতা থাকছে না। রাজ্য সরকারি কর্মীদের উপর কেন্দ্রীয় মূল্যবৃদ্ধি সূচক আদৌ প্রযোজ্য হবে কি না, সে ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নিতে পারে রাজ্য। তারা চাইলে নিজের মুদ্রাস্ফীতি সূচকও তৈরি করতে পারে।