Swachh Bharat Mission

শৌচাগার তৈরির কাজে পিছিয়ে বঙ্গ

প্রশাসনিক পর্যবেক্ষকদের অনেকে মনে করছেন, ঘরে ঘরে জল সংযোগের মতো প্রত্যেক বাড়িতে শৌচাগার তৈরির কাজও গোটা দেশে চলছে দীর্ঘদিন ধরে। বিপুল বরাদ্দের এই প্রকল্পে এ রাজ্যের অগ্রগতি অনেকটাই পিছিয়ে।

Advertisement

চন্দ্রপ্রভ ভট্টাচার্য

কলকাতা শেষ আপডেট: ২১ অগস্ট ২০২৩ ০৭:০৬
Share:

বাড়িতে শৌচাগার তৈরির অগ্রগতি অনেকটাই পিছিয়ে রাজ্যে। —প্রতিনিধিত্বমূলক ছবি।

প্রায় আট মাস আগেই সতর্ক করেছিল কেন্দ্রীয় সরকার। তার পরে স্বচ্ছ ভারত মিশন প্রকল্প (গ্রামীণ)-এর কাজ জোরকদমে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার নির্দেশ জেলা প্রশাসনগুলিকে দিয়েছিল নবান্ন। কিন্তু প্রকাশ্যে শৌচ-মুক্ত (ওডিএফ) গ্রামীণ পরিবেশ নিশ্চিত করার কাজ নিয়ে কেন্দ্রের যে রিপোর্ট সম্প্রতি প্রকাশিত হয়েছে, তাতে এ রাজ্যের একটি মাত্র জেলা জায়গা পেয়েছে। বাকি কোনও জেলা কেন্দ্রীয় মানদণ্ডে পৌঁছতেই পারেনি।

Advertisement

প্রশাসনিক পর্যবেক্ষকদের অনেকে মনে করছেন, ঘরে ঘরে জল সংযোগের মতো প্রত্যেক বাড়িতে শৌচাগার তৈরির কাজও গোটা দেশে চলছে দীর্ঘদিন ধরে। বিপুল বরাদ্দের এই প্রকল্পে এ রাজ্যের অগ্রগতি অনেকটাই পিছিয়ে। তাই এতে গ্রামীণ কাজ নিয়ে প্রশ্ন ওঠার অবকাশথেকে যায়।

২০২০-২১ অর্থবর্ষ থেকে শুরু হয় স্বচ্ছ ভারত মিশনের দ্বিতীয় পর্যায়ের কাজ, চলবে ২০২৪-২৫ সাল পর্যন্ত। জলশক্তি মন্ত্রক সম্প্রতি রাজ্যকে লিখিত ভাবে জানিয়েছে, ঘরে ঘরে শৌচালয় তৈরি এবং কঠিন ও তরল বর্জ্য ব্যবস্থাপনা পরিকাঠামো গড়ার প্রশ্নে এ রাজ্যে একমাত্র পূর্ব মেদিনীপুর জেলার অগ্রগতিই ‘সেরা’-র তালিকায় জায়গা পেয়েছে। কেন্দ্রের ওই তালিকায় রাজ্যের আর কোনও জেলা জায়গা পায়নি। কেন্দ্রের মানদণ্ডে ৯০%-এর উপরে আবার ৯৯.৯৪%-এর নীচে যাদের অগ্রগতি, তাদের কাজকে ‘সেরা’ বলে চিহ্নিত করা হয়েছে। তাতে পূর্ব মেদিনীপুরে ২৯৮৮টির মধ্যে ২৯২৯টি গ্রামই ‘ওডিএফ-প্লাস’ হিসেবে চিহ্নিত হয়েছে। অগ্রগতির শতাংশের হিসাবে তা ৯৮.০৩%।

Advertisement

পঞ্চায়েত দফতরের তথ্য অনুযায়ী, রাজ্যে ৪০,৬০০টির মধ্যে এখনও পর্যন্ত ‘ওডিএফ-প্লাস’ তকমা পেয়েছে ১৮,১২৯টি গ্রাম। শতাংশের হিসাবে তা প্রায় ৪৫%। প্রশাসনিক পর্যবেক্ষকেরা জানাচ্ছেন, প্রধানমন্ত্রী আবাস বা একশো দিনের কাজের প্রকল্পে কেন্দ্রীয় বরাদ্দ এখনও বন্ধ থাকলেও, স্বচ্ছ ভারত মিশন-সহ অন্য একাধিক প্রকল্পে তা চালু রয়েছে। মিশন-ভিত্তিক এই প্রকল্পে অর্থের অভাবও নেই। ফলে সুনির্দিষ্ট পরিকল্পনা এবং লক্ষ্যে কাজ করলে গতি রুদ্ধ হবে না। প্রসঙ্গত, চলতি আর্থিক বছরের (২০২৩-২৪) বাজেটে এই প্রকল্পের জন্য ৭১৯২ কোটি টাকা বরাদ্দ করেছে কেন্দ্র।

আধিকারিকেরা জানাচ্ছেন, স্বচ্ছ ভারত মিশন প্রকল্পে ২০১৯ সালের ২ অক্টোবরের মধ্যে গোটা দেশের গ্রামীণ গৃহস্থালিগুলিতে শৌচালয় তৈরির সিদ্ধান্ত নেয় কেন্দ্র। এর সঙ্গে স্থির হয়, কঠিন এবং তরল বর্জ্য ব্যবস্থাপনা পরিকাঠামোও গড়ে তোলা হবে গ্রামে গ্রামে। একে সামনে রেখেই প্রকল্পের দ্বিতীয় পর্যায় শুরু হয়। প্রশাসনিক পরিভাষায় তাকে বলা হচ্ছে ‘ওডিএফ-প্লাস’। কোনও গ্রামে এই দুই ব্যবস্থাপনার সঙ্গে দৃশ্যত অন্তত ৮০% স্বচ্ছতা থাকলেই সেই গ্রামকে ‘মডেল’ ঘোষণা করে কেন্দ্র। পঞ্চায়েত দফতরের তথ্য অনুযায়ী, রাজ্যে তেমন মডেল গ্রামের সংখ্যা ৪৫টি।

এই অবস্থায় সব জেলা প্রশাসনকে ফের এক বার সতর্ক করেছে নবান্নের শীর্ষ মহল। সাম্প্রতিক একটি বৈঠকে প্রত্যেক জেলাশাসককে কাজে গতি বাড়ানোর বার্তা দেওয়া হয়েছে। প্রশাসনিক পর্যবেক্ষকেরা মনে করছেন, অগ্রগতির ঘাটতির কারণে এই প্রকল্পেও কেন্দ্রীয় বরাদ্দ অনিয়মিত হলে তা রাজ্য সরকারের পক্ষে মোটেই সুখকর হবে না।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement