প্রতীকী ছবি।
গ্রামে সামাজিক উন্নয়নের নিরিখে ৩৬টি রাজ্য ও কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলের মধ্যে ১৬তম স্থান পেল পশ্চিমবঙ্গ। ২০১৮-১৯ সালে কেন্দ্রের ১৫ দফা কর্মসূচি রূপায়ণের ভিত্তিতে সম্প্রতি এই র্যাঙ্কিং তৈরি করেছে কেন্দ্রীয় গ্রামোন্নয়ন মন্ত্রক। প্রতিটি রাজ্যকে রিপোর্টটি পাঠিয়ে পরিকল্পনা বাস্তবায়নে আরও উন্নতি করার অনুরোধ জানানো হয়েছে।
এই রিপোর্ট অবশ্য বিশেষ আমল দিতে নারাজ রাজ্যের পঞ্চায়েতমন্ত্রী সুব্রত মুখোপাধ্যায়। তিনি বলেন, ‘‘আমরা মধ্যম নয়, উত্তম মানের। কেন্দ্রীয় সরকারই ১০০ দিনের কাজ, কৃষিকর্মণ, পাকা রাস্তা তৈরি-সহ নানা প্রকল্পে রাজ্য সরকারকে পুরস্কার দিয়েছে। এগিয়ে বাংলাকে জোর করে পিছিয়ে দিতে চাইছে কেন্দ্র। তাই মনগড়া রিপোর্ট দিয়েছে। রিপোর্ট দেখে প্রয়োজন হলে কেন্দ্রকে চিঠি লিখব।’’
যদিও গ্রামোন্নয়ন মন্ত্রকের দাবি, রাজ্যের থেকে আসা বিভিন্ন কেন্দ্রীয় প্রকল্প সংক্রান্ত পরিসংখ্যান পর্যালোচনা করেই এই রিপোর্ট তৈরি হয়েছে। কেন্দ্র নিজে কোনও সমীক্ষা করেনি। মন্ত্রকের এক কর্তার কথায়, ‘‘অনেক বিজেপি-শাসিত রাজ্যের অবস্থান পশ্চিমবঙ্গেরও নীচে। তারা রিপোর্ট মেনে নিয়ে পরের বছরে উন্নতির জন্য চেষ্টা করছে। রিপোর্টকে উড়িয়ে দেয়নি।’’
নবান্নের খবর, রাজ্যভিত্তিক তুলনার জন্য গণবণ্টন ব্যবস্থা, শিক্ষা, স্বাস্থ্য, কৃষি, নারী ও শিশুকল্যণ, জমির উন্নয়ন, গ্রামীণ আবাস, গ্রামীণ বিদ্যুৎ, পানীয় জল, রাস্তা, পশুপালন, অচিরাচরিত শক্তি, গরিবি হঠানোর মতো ১৫টি কর্মসূচি বাছাই করেছিল কেন্দ্র। কেন্দ্রীয় বরাদ্দ খরচ এবং খরচের গুণগত মানই মূলত দেখা হয়েছে। সর্বোচ্চ স্থানে রয়েছে কেন্দ্রশাসিত চণ্ডীগড়। এর পরে রয়েছে পুদুচেরি, কেরল, গুজরাত, দমন দিউ, অন্ধ্রপ্রদেশ, তেলঙ্গনা, হরিয়ানা, সিকিম, পঞ্জাব, গোয়ার মতো রাজ্য বা কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল। পশ্চিমবঙ্গের স্থান হয়েছে ১৬ নম্বরে। সবচেয়ে খারাপ রাজ্য হিসেবে বিবেচিত হয়েছে অরুণাচল। ঘটনাচক্রে পিছনের সারিতে থাকা বেশির ভাগ রাজ্যই বিজেপি-শাসিত।
মন্ত্রকের রিপোর্ট বলছে, এ রাজ্যের শোচনীয় অবস্থা গ্রামীণ স্বাস্থ্য, জমির উন্নয়ন, কৃষির বিকাশ, গ্রামীণ রাস্তা, সামগ্রিক গরিবি দূরীকরণ কর্মসূচিতে। তুলনায় ভাল কাজ হয়েছে গ্রামীণ আবাস, পানীয় জল, পশুপালন, নারী শিশুকল্যাণের মতো সামাজিক প্রকল্পে। আধার সংযুক্তিকরণ না করায় গণবণ্টনের কাজেও ভাল নম্বর পায়নি রাজ্য। তবে সুব্রতবাবুর কথায়, ‘‘যে সব প্রকল্পের বিচার হয়েছে, তা সব আমার দফতরের নয়। শুধু কেন্দ্রীয় প্রকল্পগুলি নিয়েই বিচার হয়েছে। সামাজিক উন্নয়নে অনেক রাজ্যের প্রকল্পও আছে। কন্যাশ্রী, সবুজ সাথী, খাদ্য সাথী, সমব্যাথী এই সব প্রকল্পগুলির বিচার হলে দেখা যাবে আমরাই সেরার সেরা।’’