মোকা নিয়ে কী জানাল আবহাওয়া দফতর? ফাইল চিত্র।
ঘূর্ণিঝড় ‘মোকা’ কোথায় আছড়ে পড়তে পারে আর রাজ্যে তার প্রভাব কতটা পড়তে পারে, তা নিয়ে নানা জল্পনা চলছে। তবে রবিবার আলিপুর আবহাওয়া দফতরের তরফে জানিয়ে দেওয়া হল, আগামী বৃহস্পতিবার পর্যন্ত রাজ্যে মোকার কোনও প্রত্যক্ষ পড়বে না। তবে পরোক্ষ প্রভাব হিসাবে আগামী বুধবার পর্যন্ত রাজ্যের বিভিন্ন জেলায় সর্বোচ্চ তাপমাত্রা আরও বাড়তে পারে বলে জানিয়েছে হাওয়া অফিস। ঘূর্ণিঝড় হিসাবে মোকা কখন এবং কোথায় স্থলভাগে আছড়ে পড়তে পারে, তা সোমবারের আগে নিশ্চিত ভাবে বলা সম্ভব নয় বলে জানিয়েছে হাওয়া অফিস।
আপাতত আবহাওয়া দফতরের তরফে জানানো হয়েছে, দক্ষিণ-পূর্ব বঙ্গোপসাগরে সোমবার নিম্নচাপ তৈরি হবে। মঙ্গলবার সেটি গভীর নিম্নচাপে পরিণত হবে। এর প্রভাবে সোমবার থেকেই আন্দামান এবং নিকোবর দ্বীপপুঞ্জে হালকা থেকে মাঝারি বৃষ্টিপাত শুরু হয়ে যাবে। বৃষ্টির প্রাবল্য বাড়়বে মঙ্গলবারে। বুধ এবং বৃহস্পতিবার দুর্যোগ আরও বাড়বে। আন্দামানে বুধবারের পর ঘণ্টায় ৬০ থেকে ৭০ কিলোমিটার বেগে হাওয়া বইতে পারে বলে পূর্বাভাস দিয়েছে হাওয়া অফিস। সোমবার থেকে শুক্রবার পর্যন্ত বঙ্গোপসাগরে যেতে নিষেধ করা হয়েছে মৎস্যজীবীদের। যাঁরা গভীর সমুদ্রে গিয়েছেন, তাঁদের সোমবার রাতের মধ্যেই ফিরে আসার অনুরোধ করা হয়েছে।
আলিপুর আবহাওয়া দফতরের পূর্বাঞ্চলীয় অধিকর্তা সঞ্জীব বন্দ্যোপাধ্যায় রবিবার জানান, আপাতত আন্দামান সাগর মধ্য বঙ্গোপসাগর এবং দক্ষিণ-পূর্ব বঙ্গোপসাগর উত্তাল থাকার সম্ভাবনা দেখা যাচ্ছে। অবশ্য গভীর নিম্নচাপ ঘূর্ণিঝড়ে পরিণত হলে তার অভিমুখ কোন দিকে হবে, তা এখনই বলা সম্ভব নয়। আপাতত সুন্দরবন কিংবা সাগরদ্বীপে এই দুর্যোগের প্রত্যক্ষ প্রভাব পড়ার আশঙ্কা নেই বলে আশ্বস্ত করেছে হাওয়া অফিস।
আবহবিদদের একাংশ জানিয়েছেন, অতীতে অনেক ক্ষেত্রেই বঙ্গোপসাগরে তৈরি হওয়া সাইক্লোন শেষ পর্যন্ত ওড়িশা বা বাংলাদেশের দিকে মুখ ঘুরিয়ে নিয়েছে। পরিসংখ্যান বলছে, গত ৪ বছরে মে মাসে মোট ৪টি বড় মাপের ঘূর্ণিঝড় তৈরি হয়েছে বঙ্গোপসাগরে। তার মধ্যে আমপান এবং ইয়াস আছড়ে পড়েছিল এ রাজ্যে। হয়েছিল বিস্তর ক্ষয়ক্ষতি। তবে এ বার শেষ পর্যন্ত ঘূর্ণিঝড় বাংলায় আসুক বা না আসুক, এই সপ্তাহে শুক্রবার পর্যন্ত রাজ্য জুড়ে ঝোড়ো হাওয়া এবং সেই সঙ্গে বৃষ্টির অনুকূল পরিবেশ থাকবে বলে পূর্বাভাস দিয়েছে হাওয়া অফিস।