কৃষক স্বার্থের প্রশ্নে ফের রাজ্যপালের নিশানা মুখ্যমন্ত্রীকে— ফাইল চিত্র।
‘কৃষক স্বার্থ’ নিয়ে এ বার তরজায় রাজ্য সরকার বনাম রাজ্যপাল। মঙ্গলবার সকালে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে লেখা চিঠি টুইটারে প্রকাশ করে ‘যুদ্ধের সূচনা’ করেন রাজ্যপাল জগদীপ ধনখড়। অভিযোগ করেন, দেশের সব ক’টি রাজ্যে কৃষকরা ‘পিএমকিসান’ (প্রধানমন্ত্রী কিসান সম্মান নিধি) প্রকল্পের সুবিধা পেলেও পশ্চিমবঙ্গের কৃষকদেরকে সেই টাকা পেতে দিচ্ছে না রাজ্য সরকার।
রাজ্যপালের সেই টুইটের কয়েক ঘণ্টা পরেই সক্রিয় হয় তৃণমূল। ৯ সেপ্টেম্বর কেন্দ্রকে লেখা চিঠি টুইটারে প্রকাশ করে জানানো হয়, এ ক্ষেত্রে রাজ্যের অবস্থান স্পষ্ট, ‘পিএমকিসান’ প্রকল্প পশ্চিমবঙ্গে চালু করতে কোনও বাধা নেই। কিন্তু সেই প্রকল্পের দায়িত্ব দিতে হবে রাজ্যকেই।
রাজ্যের শাসকদলের সেই টুইটের জবাব দিতে এ দিন সন্ধ্যায় সাংবাদিক বৈঠক করেন রাজ্যপাল। ফের রাজ্য সরকারকে ‘কৃষক বিরোধী’ হিসেবে চিহ্নিত করে তাঁর মন্তব্য, ‘‘এমন দাবি (রাজ্য সরকারের মাধ্যমে ‘পিএমকিসান’ প্রকল্প চালু) কেউ কী ভাবে করতে পারে!’’ ভারতের সব ক’টি রাজ্য ‘ডাইরেক্ট ট্রান্সফার’ নীতি (সরাসরি কৃষকদের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে কেন্দ্রীয় সহায়তার টাকা পাঠানো) মেনে নিলেও পশ্চিমবঙ্গ সরকার কেন তা মানছে না, সে প্রশ্নও তুলেছেন ধনখড়।
রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের অনেকেই অবশ্য রাজ্যপালের এ দিনের ‘তৎপরতা’কে রাজনৈতিক কৌশল বলেই মনে করছেন। তাঁদের মতে, রাজ্যসভায় তৃণমূল সক্রিয় ভাবে কৃষি বিলের প্রতিবাদ করায় পাল্টা ‘কৃষক স্বার্থে’র কথা তুলে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকারকে বিড়ম্বনায় ফেলতে চাইছেন প্রাক্তন বিজেপি নেতা ধনখড়। সেই উদ্দেশ্যেই মুখ্যমন্ত্রীকে লেখা দু’পাতার চিঠি টুইটারে প্রকাশ করে তাতে মুখ্যমন্ত্রীকেই ট্যাগ করেছেন রাজ্যপাল।
আরও পড়ুন: ‘কৃষক বিরোধী’ মমতা: চিঠি লিখে, টুইট করে তোপ ধনখড়ের
টুইটের বক্তব্য নিয়ে একটি ভিডিয়োও এ দিন প্রকাশ করেন জগদীপ ধনখড়। সেখানে মুখ্যমন্ত্রীর উদ্দেশে তাঁর প্রশ্ন, ‘‘পশ্চিমবঙ্গের ৭০ লক্ষ চাষি ৮ হাজার ৪০০ কোটি টাকার সুবিধা পেলেন না কেন? পিএমকিসান সম্মান নিধি প্রকল্পে কেন যোগ দিলেন না?’’ এ দিন সন্ধ্যায় সাংবাদিক সম্মেলনে রাজ্যপাল বলেন, ‘‘এত দিনে রাজ্যের কৃষকেরা ১২ হাজার টাকা করে পেয়ে যেতেন। কিন্তু সেই পথ রাজ্য সরকার বন্ধ করে রেখেছে।’’
আরও পড়ুন: তিন দাবিতে রাজ্যসভা বয়কট বিরোধীদের, ধর্না তুললেন সাংসদরা