কাটোয়া প্রকল্পের জট কাটাতে চিঠি

জমি, জল-সহ বিভিন্ন পরিকাঠামো প্রায় প্রস্তুত। তবু কাটোয়ায় এনটিপিসি-র তাপবিদ্যুৎ প্রকল্পের কাজ বন্ধ। আটকে থাকা সেই কাজ ফের চালু করার আর্জি জানিয়ে কেন্দ্রকে চিঠি দিয়েছে রাজ্য সরকার।

Advertisement

পিনাকী বন্দ্যোপাধ্যায়

কলকাতা শেষ আপডেট: ২৯ নভেম্বর ২০১৭ ০৪:০৭
Share:

জমি, জল-সহ বিভিন্ন পরিকাঠামো প্রায় প্রস্তুত। তবু কাটোয়ায় এনটিপিসি-র তাপবিদ্যুৎ প্রকল্পের কাজ বন্ধ। আটকে থাকা সেই কাজ ফের চালু করার আর্জি জানিয়ে কেন্দ্রকে চিঠি দিয়েছে রাজ্য সরকার।

Advertisement

নবান্নের খবর, দ্রুত জট ছাড়িয়ে কাটোয়া প্রকল্পের নির্মাণকাজ শুরু করার জন্য রাজ্যের বিদ্যুৎসচিব সুনীল গুপ্ত সম্প্রতি কেন্দ্রীয় বিদ্যুৎসচিব অজয়কুমার ভাল্লাকে চিঠি দিয়ে আবেদন জানিয়েছেন। ওখানে কাজ বন্ধ রয়েছে কেন?

প্রশাসনের এক কর্তা জানান, কাটোয়ায় বছরে প্রায় ৮০ লক্ষ টন কয়লা লাগবে। কিন্তু তার জোগান অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে। সমস্যা মেটাতে বিদ্যুৎ ও কয়লা মন্ত্রক নিজেদের মধ্যে আলোচনা শুরু করেছে। নবান্ন মৌখিক ভাবে দিল্লিকে জানিয়েছে, কেন্দ্র ছাড়পত্র দিলে কাটোয়া প্রকল্পে কয়লার ঘাটতি মেটাতে রাজ্য সাহায্য করতে প্রস্তুত।

Advertisement

কোন পথে জট কাটতে পারে?

বিদ্যুৎ শিবির সূত্রের খবর, এনটিপিসি তাদের বদরপুর (দিল্লিতে) তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রের কয়লা কাটোয়ায় নিয়ে আসতে চাইছে। কারণ ৭২০ মেগাওয়াটের বদরপুর তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রটি অনেক পুরনো এবং দূষণ সংক্রান্ত কারণে সেখানে উৎপাদন বন্ধের মুখে। ঝাড়খণ্ডের ঝরিয়া খনি থেকে কয়লা যেত সেখানে। সেই কয়লা সহজেই কাটোয়ায় আনা যায় বলে মনে করছে এনটিপিসি। তবে তার জন্য কেন্দ্রের ছাড়পত্র লাগবে।

রাজ্য প্রতিশ্রুতি দিচ্ছে, ঝরিয়া থেকে কয়লা নেওয়ার পরেও ঘাটতি থেকে গেলে পশ্চিমবঙ্গের দেউচা পাঁচামি খনি থেকে সেটা দেওয়া হবে। দুইয়ে মিলিয়ে কয়লার জোগান দ্রুত নিশ্চিত করতে চাইছে উভয় পক্ষ। কিন্তু দু’পক্ষের কর্তারা এটাও
জানেন যে, এনটিপিসি-র পরিচালন পর্ষদ আর কেন্দ্রের সবুজ সঙ্কেত না-মিললে প্রকল্পের কাজ এগোবে না।

প্রায় আট মাস আগে কাটোয়া প্রকল্প থেকে তাদের অধিকাংশ আধিকারিককে অন্যত্র সরিয়ে নিয়েছে এনটিপিসি। ১৩২০ মেগাওয়াটের এই তাপবিদ্যুৎ প্রকল্পের জন্য সামান্য জমি কেনার কাজ বাকি আছে। কিন্তু কয়লার জোগান অনিশ্চিত বলে এই প্রকল্পের জন্য পরিবেশ সংক্রান্ত কিছু ছাড়পত্র পাওয়া যাচ্ছে না। সব মিলিয়ে কাটোয়া প্রকল্পের ভবিষ্যৎ নিয়েই প্রশ্ন উঠছে বিভিন্ন মহলে।

এনটিপিসি অবশ্য জানিয়েছে, তাদের অন্য প্রকল্পে কাজের প্রয়োজনেই কাটোয়া থেকে কিছু আধিকারিক ও ইঞ্জিনিয়ারকে তুলে নেওয়া হয়েছে। কাটোয়ায় কাজ শুরু হলে তাঁরা ফিরে আসবেন। এই অবস্থায় কয়েক মাস চুপ থাকার রাজ্য এখন ফের নড়েচড়ে বসেছে। কারণ, নিছক কয়লার জটেই আটকে রয়েছে ১০ হাজার কোটি টাকার বিনিয়োগ।

রাজ্যের এক বিদ্যুৎকর্তা জানান, ২০১৮ সালে কাটোয়ায় নির্মাণকাজ শুরু করতে পারলে বিদ্যুৎকেন্দ্র তৈরি করতে বছর চারেক লাগবে। তত দিনে দেউচা পাঁচামি খনিতে কয়লা তোলা শুরু হয়ে যাবে। সেই কয়লা রাজ্যের বিদ্যুৎকেন্দ্রগুলি যেমন পাবে, কাটোয়াকে দিতেও সমস্যা হবে না।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement