কাবাবে এক টুকরো হাড়ের মতো মাঝখানে শুধু সোমবারটা। কোনও ভাবে একটা ক্যাজুয়াল লিভ বা সিএল ম্যানেজ করতে পারলেই কেল্লা ফতে। পরপর পাঁ-আ-চ দিন ছুটি!
৬ এবং ৭ মে শনি এবং রবিবার। মঙ্গল (৯ মে) আর বুধবার (১০ মে) যথাক্রমে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের জন্মদিন আর বুদ্ধপূর্ণিমা। এই পোড়া গরমকে তুড়ি মারতে এর থেকে আহ্লাদের বন্দোবস্ত আর কী-ই বা হতে পারে!
মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ১৫ ফেব্রুয়ারি কালিম্পংয়ে বুদ্ধপূর্ণিমায় ছুটি ঘোষণা করার পর থেকে রাজ্য সরকারি কর্মীদের মুখে মুখে এই আহ্লাদেরই উচ্ছলতা। জনান্তিকে অনেক কর্মীই ইচ্ছে প্রকাশ করছেন, ‘পাঁচ দিনের ছুটি কাজে লাগিয়ে কোথাও বেড়িয়ে আসি!’ আবার অনেক কর্মীর বক্তব্য, এই সরকারের আমলে এমন টানা ছুটি তো আকছার মেলে। ভ্যাপসা গরমের মধ্যে এই পাঁচ দিনের ছুটিতে তাই কোথাও না-গিয়ে বরং বাড়িতে বসে পরিবারের সঙ্গে একটু জিরিয়ে নেওয়াই ভাল।
ছুটির ব্যাপারে তৃণমূল সরকারের উদারতার ব্যাপারে কর্মীদের দাবি অবশ্য একেবারে ভুল নয়। মমতার সরকার এ রাজ্যে ক্ষমতায় আসার পর থেকে কোনও কোনও পুজোয় এ-দিক ও-দিক করে টানা ১০-১২ দিন পর্যন্ত ছুটি মিলেছে। চলতি বছরের কথাই ধরা যাক। ২৬ সেপ্টেম্বর থেকে ৬ অক্টোবর পুজোর ছুটি। তার পরে ৭ এবং ৮ অক্টোবর শনি এবং রবিবার। অর্থাৎ পুজোর পরে সরকারি অফিস খুলবে একেবারে ৯ অক্টোবর। আরও আছে। একই ভাবে ২৩ এবং ২৪ সেপ্টেম্বর শনি এবং রবিবার। পঞ্চমীর দিন, ২৫ সেপ্টেম্বর একটা সিএল ম্যানেজ করতে পারলে টানা ১৬ দিন পুজোর ছুটি মিলতে পারে।
এই দফার মতো একটানা পাঁচ দিন না-হলেও এ বছরে টানা চার দিন ছুটির সুযোগ আছে বেশ কয়েক বার। যেমন ১৬ এবং ১৭ সেপ্টেম্বর শনি এবং রবিবার। ১৯ তারিখ মহালয়া। মধ্যে ১৮ তারিখ সিএল নিলে টানা চার দিন ছুটি। একই ভাবে গত ১২ জানুয়ারি (বিবেকানন্দের জন্মদিন) এবং ২৬ জানুয়ারি (প্রজাতন্ত্র দিবস) পড়েছিল বৃহস্পতিবার। মধ্যে শুক্রবারটা ছুটি নিলেই টানা চার দিন ছুটি। আবার অগস্টে ১২ এবং ১৩ তারিখ শনি এবং রবিবার। ১৪ অগস্ট জন্মাষ্টমী। ১৫ই স্বাধীনতা দিবস। আবার সেই চার দিনের ছুটি।
বিরোধী দল প্রভাবিত সরকারি কর্মী সংগঠনগুলি অবশ্য দাবি করছে, এমন টানা ছুটিতে কর্মসংস্কৃতি নষ্ট হচ্ছে। কারও কারও মতে, ‘কর্মীদের বকেয়া ডিএ, পে কমিশন কিছুই দিতে পারছে না এই সরকার। ঢালাও ছুটি দিয়ে তারা ভাবছে, কর্মীরা ভুলে থাকবেন। সে গুড়ে কিন্তু বালি!’
শাসক দলের কর্মীদের যুক্তি, ‘চার দিকে ধর্মীয় অসহিষ্ণুতার বাতাবরণ। তার মধ্যে মুখ্যমন্ত্রী সব ধর্মকে সমান সম্মান দিচ্ছেন। এই নিয়ে বিতর্ক তৈরি না-করাই ভাল।’