মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
‘এক রাজ্য এক বাজার’ নীতিতে চলতে চাইছে রাজ্য সরকার। এই অবস্থায় কৃষিপণ্যবাহী গাড়ি পরীক্ষার জন্য বিভিন্ন জেলার সীমানায় থাকা চেকপোস্ট তুলে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে বলে বুধবার নবান্নে জানান মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
মুখ্যমন্ত্রী জানান, বিভিন্ন জেলায় এত দিন ১০৯টি চেকপোস্টে কৃষিপণ্যের গাড়িকে নির্দিষ্ট কর দিয়ে এবং পণ্য যাচাই করিয়ে গন্তব্যে রওনা হতে হত। চেকপোস্টে গাড়ির লাইন পড়ে যেত। অনেক ক্ষেত্রে গাড়ির পণ্য নষ্ট হয়ে যেত বলে অভিযোগ আসছিল। প্রশাসনিক কর্তারা জানান, বেশির ভাগ জায়গাতেই এই ধরনের চেকপোস্ট ছিল খাতায়-কলমে। কিছু চেকপোস্টে কৃষিপণ্য থেকে টাকা তোলার অভিযোগও উঠছিল।
মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘‘কৃষকদের ব্যাপারটা আমরা গুরুত্ব দিয়ে দেখি। এ রাজ্যে কৃষকেরা যে-সব সুযোগ-সুবিধা পান, তা অন্য কোনও রাজ্যে মেলে না। রাজ্যে ১০৯টি চেকপোস্টে সময় বেশি লাগায় অনেক ক্ষেত্রে শস্য নষ্ট হয়ে যায়। এমন অভিযোগ আমরা অনেক পেয়েছি ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে। এই ধরনের অভিযোগ যাতে আর না-আসে এবং কৃষিপণ্যের গাড়ির গতি যাতে অবাধে চলে, সেই জন্যই এই ব্যবস্থা করা হচ্ছে।’’
এত দিন চেকপোস্টগুলি চালাত ২২টি রেগুলেটরি মার্কেটিং কমিটি। মুখ্যমন্ত্রী জানান, চেকপোস্ট তুলে দেওয়ায় সরকারের প্রায় ২০০ কোটি টাকা ক্ষতি হবে। চেকপোস্টগুলিতে অন্তত ৬৫০ জন কাজ করতেন। মমতার কথায়, ‘‘টাকার থেকে আমার কাছে মানুষের প্রয়োজন বেশি। কৃষিপণ্যের গাড়ির কোনও চেকিং থাকবে না। যাঁরা চেকপোস্টগুলিতে কাজ করতেন, তাঁদের কারও চাকরি যাবে না। তাঁদের নিকটবর্তী কৃষক বাজারে কাজের ব্যবস্থা করা হবে।’’
কৃষি দফতরের আধিকারিকেরা জানান, পচনশীল কৃষিপণ্যে আগেই কর তুলে দেওয়া হয়েছে। যে-সব পণ্য পচনশীল নয়, এ বার সেগুলিকেও করমুক্ত করা হল। যে-সব বড় আড়তদার এক জেলার কৃষিপণ্য অন্য জেলায় নিয়ে যান, তাঁদের কৃষি বিপণন পর্ষদের একটি লাইসেন্স নিলেই চলবে। অন্যত্র কর দিতে হবে না। দফতরের এক কর্তা বলেন, ‘‘এতে রাজ্যের আড়তদারদের সুবিধা হবে। এই ব্যবস্থা গ্রহণযোগ্য হবে ভিন্ রাজ্যের ব্যবসায়ীদের কাছেও।’’