গর্ত বুজিয়ে মসৃণ রাস্তা চান মমতা

নবান্নের একটি সূত্রের খবর, পর্যালোচনা বৈঠকে বলা হয়, চিত্তরঞ্জন অ্যাভিনিউ, আচার্য জগদীশচন্দ্র বসু রোড, শরৎ বসু রোড, রাজা সুবোধ মল্লিক রোড, নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসু রোডের মতো কলকাতার বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ রাস্তার যত্রতত্র গর্ত, কোথাও উঁচু-নিচু।

Advertisement

সোমনাথ চক্রবর্তী ও অনুপ চট্টোপাধ্যায়

শেষ আপডেট: ২৬ ডিসেম্বর ২০১৭ ০২:০১
Share:

হাল ফিরতে চলেছে এই সব রাস্তারই। বাইপাসে। ফাইল চিত্র

এবড়ো-খেবড়ো, উঁচু-নিচু রাস্তা একেবারেই পছন্দ নয় মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের। সড়কপথে বিভিন্ন সময় জেলা সফরে গিয়ে তাঁর যে অভিজ্ঞতা হয়েছে, তা মোটেই সুখের নয়। তিনি চান, শহর ও জেলার সব বড় রাস্তার গর্ত বুজিয়ে ফেলা হোক। তাতে দ্রুত যান চলাচলে সুবিধা হবে। আবার, যাত্রাপথে কষ্টও লাঘব হবে।

Advertisement

রাজ্যে রাস্তা দেখভালের দায়িত্বে যে সব সরকারি দফতর রয়েছে, তারা এ বার মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশ পালন করতে মাঠে নামার প্রস্তুতি নিচ্ছে। রাস্তা নিয়ে সম্প্রতি নবান্নে মন্ত্রী ও সচিবদের এক পর্যালোচনা-বৈঠক থেকে পূর্ত ও সেচ দফতর, কেএমডিএ, এইচআরবিসি, জেলা পরিষদ এবং কলকাতা পুরসভাকে বলা হয়েছে, রাস্তাকে মসৃণ ও গর্তশূন্য করার কাজে নেমে পড়তে হবে। কলকাতা-সহ রাজ্যে রাস্তা দেখভালের দায়িত্বে রয়েছে এই সংস্থাগুলি। প্রশাসন সূত্রের খবর, পূর্ত দফতর তাদের অধীনে থাকা রাস্তা মেরামতির কাজ শুরুও করে দিয়েছে।

নবান্নের একটি সূত্রের খবর, পর্যালোচনা বৈঠকে বলা হয়, চিত্তরঞ্জন অ্যাভিনিউ, আচার্য জগদীশচন্দ্র বসু রোড, শরৎ বসু রোড, রাজা সুবোধ মল্লিক রোড, নেতাজি সুভাষচন্দ্র বসু রোডের মতো কলকাতার বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ রাস্তার যত্রতত্র গর্ত, কোথাও উঁচু-নিচু। এতে যে কোনও সময়ে বিপদের আশঙ্কা রয়েছে। কলকাতার মতো মেট্রোপলিটন শহরে এমন রাস্তা যে বেমানান, তা বোঝানো হয় সবাইকে। এ-ও বলা হয়, বিভিন্ন সময়ে মুখ্যমন্ত্রী সিঙ্গাপুর, লন্ডন, নেদারল্যান্ডস সফরে গিয়ে সেখানকার রাস্তা দেখে মুগ্ধ। রাস্তায় কোনও ধুলো নেই, ফুটপাথ জুড়ে হকার নেই। মমতার সেই অভিজ্ঞতার কথা জানিয়ে প্রশ্ন তোলা হয়, কলকাতা রাস্তাও মসৃণ হবে না কেন? তার পরেই ওই নির্দেশ।

Advertisement

কলকাতা পুরসভার মেয়র পারিষদ (রাস্তা) রতন দে জানান, রাস্তা নিয়ে সরকারি-বেসরকারি সব সংস্থার সঙ্গে বৈঠক হয়েছে। সিইএসসি, রিলায়্যান্স, বিএসএনএল-সহ যে সব সংস্থা রাস্তা কেটে কেব্‌ল লাইনের তার পাতে, তাদের প্রতিনিধিরাও হাজির ছিলেন বৈঠকে। রতনবাবুর কথায়, ‘‘কলকাতার মোট ৯৩টি রাস্তার কাজ হাতে নেওয়া হয়েছে। এর মধ্যে প্রথম পর্যায়ে ৩১টির কাজ হবে। গর্ত বুজিয়ে মসৃণ করতে সব রাস্তা ম্যাস্টিক করা হবে। খরচ হবে প্রায় ৬৫ কোটি টাকা। এ ছাড়া শহরের যে সব রাস্তা দিয়ে ট্রাম চলে, সেগুলিও মেরামত করা হবে।’’

ট্রামলাইনের কয়েকটি রাস্তা আগেই কংক্রিট করা হয়েছে। বাকি রয়েছে শিয়ালদহ উড়ালপুল এবং আরজিকর হাসপাতালের সামনের ট্রামলাইনের রাস্তা। ওই দুই রাস্তার কাজ তাড়াতাড়ি শুরু হবে বলে জানিয়েছেন পরিবহণ নিগমের এক শীর্ষ কর্তা। শহরের রাস্তার কাজ আগামী আর্থিক বছরের গোড়াতেই শেষ করার পরিকল্পনা রয়েছে পুর কর্তৃপক্ষের।

রাজ্যের পূর্তমন্ত্রী অরূপ বিশ্বাস বলেন, ‘‘আমার হাতে থাকা পূর্ত দফতরের তৈরি রাস্তার হাল ভাল। খানাখন্দ তেমন নেই। কিছু রাস্তার জন্য টেন্ডার প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। শীঘ্রই কাজ শুরু হবে।’’ নবান্নের খবর, উত্তর, দক্ষিণ ও পশ্চিম— পূর্ত দফতরের এই তিনটি জোনের ইঞ্জিনিয়ারেরা নবান্নের বার্তা মেনে নিজেদের মধ্যে বৈঠকও করেছেন। দফতরের এক কর্তা বলেন, ‘‘সম্প্রতি জেলা পরিষদগুলির হাতে থাকা প্রায় এক হাজার রাস্তা মেরামতির দায়িত্ব পূর্ত দফতরকে দেওয়া হয়েছে। সেগুলি দুর্বল এবং ভাঙাচোরা।’’জেলার কিছু রাস্তাও সাত মিটার পর্যন্ত চওড়া করা হচ্ছে বলে খবর।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement