ফাইল চিত্র।
কলেজে এবং বিশ্ববিদ্যালয়ে আসন্ন সিমেস্টার অনলাইন নাকি অফলাইন, কোন পদ্ধতিতে হবে, তা নিয়ে বিতর্ক রয়েছে। পড়ুয়াদের একটি অংশ বিক্ষোভেও নেমেছে। তার নেতৃত্বে দেখা গিয়েছে তৃণমূল ছাত্র পরিষদের (টিএমসিপি) নেতৃত্বকে। তবে প্রশাসনের খবর, রাজ্য সরকার চাইছে যে আসন্ন সিমেস্টারের পরীক্ষা অফলাইনে হোক। খোদ মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এ বিষয়ে সহমত প্রকাশ করেছেন।
সূত্রের খবর, অনলাইন পরীক্ষার দাবিতে রাজ্য জুড়ে ছাত্র আন্দোলনের পরিপ্রেক্ষিতে ইতিমধ্যেই শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসুর সঙ্গে উপাচার্যদের একাংশ যোগাযোগ করেছেন। এ ক্ষেত্রে বিশ্ববিদ্যালয়গুলি যে স্বশাসিত, তা শিক্ষামন্ত্রীর তরফ থেকে উপাচার্যদের মনে করিয়ে দিয়ে বলা হয়েছে, বর্তমান পরিস্থিতিতে পরীক্ষা অফলাইনেই নেওয়া উচিত বলে সরকার মনে করে। প্রসঙ্গত, সম্প্রতি অনলাইন পরীক্ষার দাবি জানিয়ে শিক্ষামন্ত্রীকে চিঠি দিয়েছিলেন তৃণমূলের ছাত্র সংগঠনের (টিএমসিপি) রাজ্য সভাপতি তৃণাঙ্কুর ভট্টাচার্য।
পরীক্ষা অনলাইন নাকি অফলাইনে হবে, সেই সিদ্ধান্তের ভার বিশ্ববিদ্যালয়গুলির হাতেই ছেড়ে দিয়েছিল উচ্চশিক্ষা দফতর। অনেক বিশ্ববিদ্যালয় অফলাইনে পরীক্ষার সিদ্ধান্ত নিয়েও নিয়েছিল। কিন্তু তুমুল ছাত্র বিক্ষোভে তারা পিছিয়ে আসে। অনেকে অফলাইন পরীক্ষার সিদ্ধান্ত নিয়েও ছাত্র বিক্ষোভে তা ঘোষণা করতে পারেনি। তবে রাজ্যের মনোভাব জানার পরে বিশ্ববিদ্যালয়গুলি অফলাইনে পরীক্ষার সিদ্ধান্ত ঘোষণা করতে পারে বলে অনেকে মনে করছেন।
গত দু’বছর করোনার কারণে পড়ুয়াদের বাধ্য হয়েই বাড়িতে বসে পরীক্ষা দিতে হয়েছে। কিন্তু পরিস্থিতি এখন বদলেছে। রাজ্য সরকার মনে করছে, ক্যাম্পাসে এসে পরীক্ষা দেওয়ার মতো পরিস্থিতি এখন তৈরি হয়েছে। তাই অফলাইন পরীক্ষাই হওয়া উচিত। তা ছাড়াও, শিক্ষা জগতের অনেকেই বারবার দাবি করছেন, অনলাইন পরীক্ষায় কোনও রকম স্বচ্ছতা নেই। বাড়িতে বসে বই দেখে অনেকে পরীক্ষা দিচ্ছেন। কেউ কেউ একেবারে কোচিংয়ের নোটস-ই উত্তরপত্রে আপলোড করে দিচ্ছেন। এতে শুধু ওই পড়ুয়াদেরই ভবিষ্যৎ নষ্ট হচ্ছে না, পরীক্ষার ফলাফলে কার্যত ‘মুড়ি-মুড়কি এক দর’ হয়ে যাচ্ছে। এই পরিস্থিতি মেধাবী পড়ুয়াদের ক্ষেত্রেও উপযুক্ত নয়। কারণ, কোন পড়ুয়া পরিশ্রম করে পড়াশোনা দিয়েছেন এবং কে পরিশ্রম না করেই টুকে দিয়েছেন তা ফলাফল থেকে বোঝা যাবে না।
প্রসঙ্গত, পড়ুয়াদের একাংশের অনলাইন পরীক্ষার দাবির মধ্যেই যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয় অফলাইনে পরীক্ষা নেওয়া শুরু করে দিয়েছে। এই বিশ্ববিদ্যালয়ের ইঞ্জিনিয়ারিং ফ্যাকাল্টির অফলাইন পরীক্ষা ইতিমধ্যে শেষও হয়ে গিয়েছে। রবীন্দ্রভারতী বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষও বিক্ষোভ উপেক্ষা করে অফলাইনেই পরীক্ষা নিয়ে যাচ্ছেন।
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, Twitter এবং Instagram পেজ।