খাদ্য প্রক্রিয়াকরণ শিল্পে বিনিয়োগ টানতে এ বার আন্তর্জাতিক সম্মেলন ‘ওয়ার্ল্ড ফুড ইন্ডিয়া’য় যোগ দিচ্ছে পশ্চিমবঙ্গ। নভেম্বরে দিল্লিতে কেন্দ্রের উদ্যোগে এই সম্মেলন হচ্ছে।
মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নির্দেশ দিয়েছেন, খাদ্য প্রক্রিয়াকরণ ও সংশ্লিষ্ট শিল্পে আরও বেশি বেসরকারি বিনিয়োগ টেনে আনতে হবে। নবান্ন সূত্রের খবর, মুখ্যসচিব মলয় দে খাদ্য প্রক্রিয়াকরণ-সহ রাজ্যের চারটি দফতরকে ওই সম্মেলনে অংশগ্রহণ করতে চিঠি পাঠিয়েছেন।
রাজ্য প্রশাসনের দাবি, রাজনৈতিক ভাবে কেন্দ্র-রাজ্য সংঘাত থাকলেও বিনিয়োগের ক্ষেত্রে বিভেদ রাখতে নারাজ মুখ্যমন্ত্রী। সম্প্রতি কেন্দ্রের উদ্যোগে গুজরাতে বস্ত্রশিল্পের যে আন্তর্জাতিক মেলা (টেক্সটাইল ইন্ডিয়া) বসেছিল, সেখানে মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশেই ‘বিশ্ব বাংলা’ ব্র্যান্ডের আওতায় রাজ্যের খাদি, তাঁত-সহ বিভিন্ন হস্তশিল্পকে বিদেশি সংস্থাগুলির কাছে তুলে ধরা হয়েছে। ‘ওয়ার্ল্ড ফুড ইন্ডিয়া’-র ক্ষেত্রেও নবান্নের সবুজ সঙ্কেত পেয়ে কেন্দ্রের আগ্রহে ‘ফোকাস স্টেট’ হিসেবে অংশগ্রহণ করতে রাজি হয়েছে পশ্চিমবঙ্গ।
মুখ্যসচিবের নির্দেশ মতো খাদ্য প্রক্রিয়াকরণ দফতরের সঙ্গে কৃষি, কৃষি বিপণন, মৎস্য ও প্রাণী সম্পদ বিকাশ দফতরও ওয়ার্ল্ড ফুড ইন্ডিয়ার মাঠে হাজির হতে চলেছে। আম বা আনারসের জ্যাম-জেলি, টোম্যাটো সস, বিভিন্ন আচার, আলুর চিপস, মাছ বা মাংস প্রক্রিয়াকরণ-সহ বিভিন্ন ক্ষেত্রগুলিকে লগ্নিকারীদের আকর্ষণের কেন্দ্রবিন্দুতে আনার চেষ্টা হবে।
রাজ্যের বক্তব্য, আনাজ থেকে ফুল-ফল— ফলন হয় প্রচুর। কিন্তু রক্ষণাবেক্ষণ বা প্রক্রিয়াকরণের অভাবে প্রায় ৪০ শতাংশই নষ্ট হয়। পণ্য পরিবহণ ব্যবস্থা, পরিকাঠামো, আধুনিক পাইকারি বাজার, শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত বহুমুখী হিমঘরের যথেষ্ট ঘাটতি থাকার ফলে মার খান কৃষকরা। এই সব ক্ষেত্রেই বিদেশি লগ্নি টানতে চাইছে রাজ্য। কারণ ‘ওয়ার্ল্ড ফুড ইন্ডিয়া’য় শুধু ২০টি দেশ নয়, বহু বিদেশি সংস্থাও ওই সময়ে লগ্নির সুযোগ খতিয়ে দেখতে ভারতে হাজির হবে। কারণ, জার্মানি ও দুবাইয়ের সম্মেলনের আদলে ভারতে এই প্রথম এত বড় মাপের খাদ্যশিল্পের আসর বসতে চলেছে।