বিদেশি পর্যটক পেতে সমন্বয়-দল

২০১৮ সালে কেন্দ্রীয় সরকারের পর্যটন-তথ্য অনুযায়ী গোটা দেশে পর্যটনকেন্দ্রিক আয় গত ১৮ বছরে বেড়েছে লাফিয়ে লাফিয়ে।

Advertisement

চন্দ্রপ্রভ ভট্টাচার্য

কলকাতা শেষ আপডেট: ০১ এপ্রিল ২০১৯ ০৪:০৭
Share:

বিদেশি পর্যটকদের বাংলায় আনার জন্য এখন থেকেই প্রস্তুতি শুরু করে দিয়েছে সরকার।

অন্যান্য রাজ্যের পাশাপাশি পর্যটন শিল্পে আয় বাড়ছে পশ্চিমবঙ্গেও। দেশের ভ্রমণার্থীদের সঙ্গে সঙ্গে বিদেশি পর্যটকদের আনাগোনা উল্লেখযোগ্য হারে বাড়ছে। বৃদ্ধির সেই হার অব্যাহত রাখতে কোমর বাঁধছে রাজ্য সরকার। দুর্গাপুজোর ঢের দেরি। তবু উৎসবে বিদেশি পর্যটকদের বাংলায় আনার জন্য এখন থেকেই প্রস্তুতি শুরু করে দিয়েছে সরকার। এই লক্ষ্যে আন্তর্জাতিক স্তরে একটি সমন্বয়কারী দল তৈরি করেছে রাজ্য। ১৪টি দেশের প্রতিনিধিদের নিয়ে তৈরি সেই দলটি বিদেশি পর্যটকদের আনার ক্ষেত্রে রাজ্যের সঙ্গে সহযোগিতা করবে বলে পর্যটন দফতর সূত্রের খবর।

Advertisement

২০১৮ সালে কেন্দ্রীয় সরকারের পর্যটন-তথ্য অনুযায়ী গোটা দেশে পর্যটনকেন্দ্রিক আয় গত ১৮ বছরে বেড়েছে লাফিয়ে লাফিয়ে। ২০১৭ সালে পর্যটন থেকে আয় হয়েছিল প্রায় এক লক্ষ ৭৮ হাজার কোটি টাকা। ২০১৬ সালের নিরিখে সেই বৃদ্ধি ছিল ১৫.৪%। ২০১৮ সালের জানুয়ারি থেকে জুনের মধ্যে দেশে পর্যটন ক্ষেত্রে ৯৫,৭১৩ কোটি টাকা আয় হয়েছে। এই তথ্যই বলছে, ২০১৭-য় অন্তর্দেশীয় পর্যটকদের আনাগোনায় প্রথম ১০টি রাজ্যের মধ্যে পশ্চিমবঙ্গের স্থান ছিল সপ্তম। মধ্যপ্রদেশ, গুজরাত এবং রাজস্থানকে পিছনে ফেলে দেয় বাংলা। ওই বছরেই বিদেশি পর্যটকদের আনাগোনায় এ রাজ্যের অবস্থান ছিল ষষ্ঠ।

স্বরাষ্ট্র তথা পর্যটন দফতরের সচিব অত্রি ভট্টাচার্য বলেন, ‘‘মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় দীর্ঘদিন ধরেই পর্যটনবান্ধব পরিবেশ গড়ে তুলতে সচেষ্ট। আরও দেশি-বিদেশি পর্যটক এলে প্রচারের পাশাপাশি এখানকার পর্যটন শিল্পে বিনিয়োগ উল্লেখযোগ্য হারে বাড়বে, হবে কর্মসংস্থানও। পর্যটনে সরকারের বিশেষ নজরই এই সাফল্যের চাবিকাঠি।’’

Advertisement

দিল্লি দখলের লড়াই, লোকসভা নির্বাচন ২০১৯

কেমন সেই বিশেষ নজর?

পর্যটনকর্তাদের দাবি, তারকা-মুখের প্রচার ছেড়ে স্থান এবং রাজ্যের সংস্কৃতিমাহাত্ম্যকে বিদেশি পর্যটকদের সামনে তুলে ধরা হচ্ছে। ইটালি, লেবানন, আমেরিকা, ইংল্যান্ড, তাইল্যান্ড, মালয়েশিয়া, স্লোভানিয়া, পূর্ব ইউরোপ, দক্ষিণ আফ্রিকা, অস্ট্রেলিয়া, চিনের মতো দেশের প্রতিনিধিদের নিয়ে সমন্বয়-দলটি গড়া হয়েছে। প্রতিনিধিরা নিজের নিজের দেশের পর্যটকদের মধ্যে প্রচারের কাজ চালানোর পাশাপাশি সরকারি স্তরেও তদ্বির-তদারক করবেন।

পর্যটন দফতর সূত্রের খবর, এই মুহূর্তে কলকাতার তারামার্কা হোটেলগুলিতে ঘরের সংখ্যা প্রায় ৩৮০০। আরও প্রায় ১৬০০ ঘর প্রস্তুত হওয়ার পথে। এই পরিকাঠামো ছাড়াও রাজ্যের নিজস্ব হোটেলগুলিকে তারকা-মর্যাদা দেওয়ার কাজ চলছে। এ ছাড়াও রয়েছে হোম-স্টে। ফলে বিদেশি অতিথিদের রুচি অনুযায়ী থাকার ক্ষেত্রে সমস্যা হবে না বলেই আশা করছেন পর্যটনকর্তারা।

বিদেশি পর্যটকদের আস্থা অর্জনের জন্য প্যাকেজ টুর, গাড়ি, গাইড, হোটেল, রেস্তরাঁর মতো পর্যটনকেন্দ্রিক সংস্থাগুলিকে একটি অ্যাপের মাধ্যমে সরকারি ছত্রচ্ছায়ায় এনেছে রাজ্য। বিদেশিদের চাহিদা, মানসিকতা এবং রাজ্যে সেগুলির পূরণের সম্ভাবনা যাচাই করে সরকারকে রিপোর্ট দেবে একটি বিশেষজ্ঞ সংস্থা। সেই রিপোর্টের ভিত্তিতে পদক্ষেপ করবে সরকার।

অতীতে বিদেশি দূতাবাসগুলির মাধ্যমে বিদেশি পর্যটকদের এ রাজ্যে আনার চেষ্টা করেছিল সরকার। এখন বিদেশি পত্রপত্রিকা এবং বৈদ্যুতিন মাধ্যমে রাজ্যের পর্যটন-প্রচার চলছে সমান্তরাল ভাবে। এ বার আন্তর্জাতিক সমন্বয়-দল বিদেশি পর্যটক টানতে আরও কার্যকর হবে বলেই আশা করছেন পর্যটনকর্তারা।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement