প্রতীকী ছবি।
বরাদ্দ বেড়েছে পরিকাঠামো খাতে। অথচ পরিকাঠামো গড়ার জমি নিয়ে জট পাকাচ্ছে প্রায়ই। এই অবস্থায় নিজেদের ভূসম্পত্তির হিসেব নিতে শুরু করেছে রাজ্যের পূর্ত দফতর। গোটা রাজ্যে প্রতিটি জেলার কোথায় পূর্ত দফতরের কত জমি আছে, তার পূর্ণাঙ্গ খতিয়ানই চাইছে রাজ্য সরকার। সংশ্লিষ্ট অফিসারদের একটি অংশের ধারণা, পরিকাঠামো উন্নয়ন সংক্রান্ত বিভিন্ন প্রকল্পের জন্য সহজে জমি পেতেই এই হিসেব নেওয়া হচ্ছে।
পরিকাঠামো খাতে প্রায় ১২ হাজার কোটি টাকা বরাদ্দ করছে রাজ্য সরকার। বিভিন্ন ধরনের পরিকাঠামো তৈরি করাই এর অন্যতম প্রধান উদ্দেশ্য। পরিকাঠামো প্রকল্পগুলি বাস্তবায়িত করতে গেলে জমির প্রয়োজন হবে। প্রশাসনের অন্দরের ব্যাখ্যা, অতীতে বিভিন্ন পরিকাঠামো প্রকল্পের কাজে বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছিল জমি। কখনও কখনও উপযুক্ত পরিমাণে জমি পাওয়া যাচ্ছিল না, আবার কখনও মালিকেরা জমি দিতে রাজি হচ্ছিলেন না। রাজ্য সরকার জমি অধিগ্রহণ নীতির বিরোধী। বরং ইচ্ছুক মালিকদের পূর্ণ সম্মতিতে সরাসরি জমি কেনার পক্ষপাতী তারা। রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্তে জমি-জটে অনেক প্রকল্পই সমস্যায় পড়েছে। কখনও সেই প্রকল্প সড়ক সংক্রান্ত, কখনও বা তা সেতু ও উড়ালপুলের মতো পরিকাঠামো তৈরির সঙ্গে সম্পর্কিত।
পূর্তকর্তাদের একাংশের ব্যাখ্যা, এই সমস্যার দরুন প্রকল্পের বাস্তবায়ন দীর্ঘায়িত হয়, অন্য দিকে তার খরচও অনেক বেড়ে যায়। এই পরিস্থিতিতে নিজেদের জমির তথ্য হাতে থাকলে সেই অনুযায়ী প্রকল্পের পরিকল্পনা করা সম্ভব। এক কর্তার কথায়, ‘‘নিজেদের জমি থাকলে প্রকল্পের জন্য অন্য জমির খোঁজ করার দরকার পড়বে না। আবার নিজেদের জমির পরেও অতিরিক্ত কিছু জমি লাগলে তা বুঝে পদক্ষেপ করা যাবে। এতে অযথা সময় নষ্ট হবে না।’’ তিনি জানান, নিজেদের জমি থাকায় ভিআইপি রোড রাতারাতি চওড়া করা গিয়েছে। এখন প্রতিদিন ওই রাস্তায় কমবেশি এক লক্ষ ২০ হাজার গাড়ি চলাচল করে। আবার ভবিষ্যতে ওই এলাকায় ইস্ট-ওয়েস্ট এবং গড়িয়া-বিমানবন্দর মেট্রোও চলবে।
আধিকারিকদের একাংশ জানান, বিভিন্ন জায়গায় পূর্ত দফতরের জমিতে জবরদখলের সমস্যা রয়েছে। সেই সব জমির তথ্য পাওয়া গেলে কী ভাবে তা ব্যবহারযোগ্য করে তোলা যাবে, সেই ভাবনাচিন্তা করা সম্ভব। ‘‘এমন অনেক পরিকাঠামো রয়েছে, যেগুলি তৈরি হয়েছে পূর্ত দফতরের জমিতে। কিন্তু বহু বছর আগে তৈরি হওয়ায় সেই তথ্য জানা ছিল না। সম্প্রতি এমন বেশ কিছু পরিকাঠামোর কথা জানা গিয়েছে,’’ বলেন দফতরের এক কর্তা।