West Bengal Day

‘দেশভাগ দিবস’-এর পাল্টা ‘বাংলা দিবস’

ঠিক কোন দিনটি রাজ্যের গুরুত্বপূর্ণ দিন হিসেবে মর্যাদা পাবে তা এখনও বলা না গেলেও কেন্দ্র তথা রাজভবনের পছন্দের ২০ জুন দিনটিকে যে নস্যাৎ করা হবেই তাতে সন্দেহ নেই।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ২১ অগস্ট ২০২৩ ০৭:১৮
Share:

মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। —ফাইল চিত্র।

সব কিছু ঠিক থাকলে আজ, সোমবারই রাজ্যের প্রতিষ্ঠা দিবস চিহ্নিত করার বিষয়টি চূড়ান্ত করে ফেলতে পারে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকার। রাজ্য বিধানসভার প্রতিষ্ঠা দিবস সংক্রান্ত কমিটির আজই তাদের প্রস্তাবের খসড়া জমা দেওয়ার কথা।

Advertisement

কমিটির সদস্যদের পরামর্শদাতা হিসেবে এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিতে সাহায্য করছেন ইতিহাসবিদ সুগত বসু। তবে রাজ্যের সম্ভাব্য ‘প্রতিষ্ঠা দিবস’ নিয়ে এখনই কোনও মন্তব্যে নারাজ তিনি।

অবশ্য ঠিক কোন দিনটি রাজ্যের গুরুত্বপূর্ণ দিন হিসেবে মর্যাদা পাবে তা এখনও বলা না গেলেও কেন্দ্র তথা রাজভবনের পছন্দের ২০ জুন দিনটিকে যে নস্যাৎ করা হবেই তাতে সন্দেহ নেই। ১৯৪৭ সালের ২০ জুন বঙ্গীয় প্রাদেশিক আইনসভার ভোটাভুটিতে বাংলা ভাগের বিষয়টি ঠিক হয়েছিল। আইনসভার প্রতিনিধিদের বেশির ভাগ বাংলা ভাগের বিরুদ্ধে মত দেন। তবে তৎকালীন অখণ্ড বাংলার পশ্চিম অংশের প্রতিনিধিরা দুই বাংলাকে ভাগ করতেই চেয়েছিলেন।

Advertisement

মাউন্টব্যাটনের দেশভাগ সংক্রান্ত প্রস্তাব অনুযায়ী, এর ভিত্তিতেই বাংলা ভাগের বিষয়টিতে সিলমোহর পড়ে। সুগতের বক্তব্য, “২৩ জুন পঞ্জাব ভাগের ভোটাভুটির দিনটি পঞ্জাব দিবস হিসেবে পালন করা হয় না। বাংলা ভাগের দিনটিতে রাজভবনে নাচ, গানের অনুষ্ঠান হওয়া অত্যন্ত দৃষ্টিকটূ ছিল। ২০ জুন দিনটি ইতিহাসের এক দুঃখজনক পাদটীকা হিসেবেই দেখা উচিত।” ২০ জুন নিয়ে উৎসব করার মধ্যে দুই বাংলার সাংস্কৃতিক ঐক্য অস্বীকার করার প্রবণতা রয়েছে বলেও অনেকে মনে করেন। সরকারি সূত্রের খবর, রাজ্যের প্রতিষ্ঠা দিবসটিকে ‘বাংলা দিবস’ বলে চিহ্নিত করা হতে পারে। প্রসঙ্গত রাজ্যের নাম ‘বাংলা’ করার প্রস্তাব বিধানসভায় গৃহীত হওয়ার পরে ২০১৮ থেকে দিল্লিতে ফাইল-বন্দি হয়ে আছে। এখনও কেন্দ্রের সাড়া মেলেনি। ১৯৪৭-এ সুভাষচন্দ্র বসুর মেজদা শরৎচন্দ্র বসু, আবুল হাশেম প্রমুখ অখণ্ড বাংলার একটি প্রস্তাবও মেলে ধরেন। ১০০ বছর আগে দেশবন্ধু চিত্তরঞ্জন দাশের ‘বেঙ্গল প্যাক্ট’-এর শর্ত অনুযায়ী, হিন্দু ও মুসলিমদের মধ্যে সমানাধিকারের ভিত্তিতে সেই বাংলার কথা ভাবা হয়। অখণ্ড বাংলা পরে স্বাধীন ভারতের সঙ্গে তার সম্পর্ক ঠিক করত।

সুভাষচন্দ্রও ১৯৩৩-এর একটি লেখায় তাঁর দৃষ্টিভঙ্গিতে ভারতের জাতীয় জীবনে বাংলার আদর্শের কথা তুলে ধরেন। তাতেও ধর্মের ঊর্ধ্বে উঠে সব ধর্মের মানুষজনকে নিয়ে চলতে দায়বদ্ধ বাংলার কথা বলা হয়। রাজ্যের প্রতিষ্ঠা দিবসটি চিহ্নিত করার সময়ে বাংলার ইতিহাসের এমন কোনও অনুষঙ্গ মাথায় রাখা যেতে পারে বলেও সরকারি সূত্রের খবর।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement