জমি আন্দোলনের জেলাতে এখন জমি হাতড়াচ্ছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়! কোথাও রেলের ওভারব্রিজ তৈরি করতে, কোথাও রেললাইন পাততে, কোথাও আবার বিশ্ববিদ্যালয় গড়তে।
এক দশকের কিছু আগে হুগলির সিঙ্গুরে টাটা কারখানার জমি ফেরাতে তাঁর আন্দোলন ইতিহাসের পাঠ্য বইয়ে জায়গা করেছে। বিরোধী নেত্রী মমতার সেই আন্দোলনের জেরে কারখানা করতে পারেনি টাটারা। সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশে সেই জমি ফিরিয়েও দিতে হয়েছে টাটাদের।
সেই সিঙ্গুরের অনতিদূরে সরকারি প্রকল্প করতে গিয়ে এখন জমি-জটে আটকে পড়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা!
বৃহস্পতিবার তারকেশ্বরে জেলা প্রশাসনিক বৈঠকে মুখ্যমন্ত্রী জানতে পারেন, পূর্ত দফতরের জমি থেকে জবরদখলকারী তিন-চার জন দোকানদার উঠে যেতে রাজি না হওয়ায় কামারকুণ্ডুতে রেলওয়ে ওভারব্রিজের কাজ আটকে গিয়েছে। যদিও এলাকার মানুষের অন্যতম দাবি ওই রেলওয়ে ওভারব্রিজ। কারণ, ওই লাইন দিয়ে রাজধানী-সহ বহু দূরপাল্লার ট্রেন যায়। ফলে, একবার রেলগেট পড়লে গাড়ির লাইন চলে যায় দুর্গাপুর এক্সপ্রেসওয়ে পর্যন্ত।
এ দিন বিষয়টি শোনার পরে স্থানীয় বিধায়ক বেচারাম মান্নাকে মুখ্যমন্ত্রী নির্দেশ দেন, ওই দোকানগুলিকে পথের সাথী কিংবা কিষাণ বাজারে পুনর্বাসন দেওয়ার ব্যবস্থা করতে। বেচারামকে অনুরোধ করে তাঁকে বলতে শোনা যায়, ‘‘বেচা, তুই একটা ব্যবস্থা করে দে।’’
একই ভাবে তারকেশ্বর থেকে বিষ্ণুপুর ১২৪ কিলোমিটার পথে রেললাইন পাতার কাজও আটকে জমিজটে। রেলমন্ত্রী থাকাকালীন মমতা প্রকল্পটি ঘোষণা করেছিলেন। কিন্তু গোঘাটের কাছে ভাবাদিঘিতে দু’একরের মতো জমি অধিগ্রহণ না হওয়ায় আটকে গিয়েছে গোটা প্রকল্প। রেলের তরফে অনিচ্ছুক পরিবারগুলিকে পুনর্বাসন প্যাকেজ দিলেও তা নিতে রাজি নয় কেউ। সব জেনে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘‘কোনও কথা শুনব না। যা চাইবেন দেব। কিন্তু প্রকল্পের কাজ আটকে রাখা যাবে না।’’ গোঘাট থানার ওসি অবশ্য মুখ্যমন্ত্রীকে এই বলে আশ্বস্ত করেন যে, প্রকল্প করতে সমস্যা হবে না।
হুগলি জেলায় ৫ একর জমিতে একটি নতুন বিশ্ববিদ্যালয় করতে চান মুখ্যমন্ত্রী। কিন্তু মুখ্যমন্ত্রীর সাধের জায়গায় একলপ্তে ওই জমি পাওয়া যাবে কি না, তা নিয়ে চিন্তায় জেলা প্রশাসন। জেলাশাসক সঞ্জয় বনসলের অবশ্য দাবি, ৪-৫টি জায়গা তিনি দেখে রেখেছেন। মুখ্যমন্ত্রীর সামনে ওই সব প্রস্তাব রাখা হবে।