Hard Disk

হার্ড ডিস্কে সাক্ষ্য ও তথ্য অটুট রাখতে নয়া প্রযুক্তি

সম্প্রতি জিয়াগঞ্জের একটি খুনের ঘটনায় এবং বহরমপুরে তরুণীর হত্যাকাণ্ডে রাইট ব্লকারের মাধ্যমে আদালতে ভিডিয়ো ফুটেজ পেশ করা হয়েছে বলে সংশ্লিষ্ট সূত্রের খবর।

Advertisement

কুন্তক চট্টোপাধ্যায়

কলকাতা শেষ আপডেট: ০২ জানুয়ারি ২০২৩ ০৬:৪৫
Share:

নতুন বৈদ্যুতিন প্রযুক্তি-পুরুষের ব্যবহার শুরু করেছে রাজ্য সরকার। ফাইল চিত্র।

আদতে সে এক ‘মিডলম্যান’ বা মধ্যপুরুষ। তার কাজ পেন ড্রাইভ, হার্ড ডিস্কের মতো যন্ত্রাংশে রক্ষিত তথ্যাদির শুদ্ধতা অটুট রাখা। ‘রাইট ব্লকার’ নামে ওই প্রযুক্তি-যন্ত্রাংশের মধ্যপৌরুষেয় ক্ষমতার ব্যবহার ক্রমশ বাড়ছে। কারণ, ফৌজদারি মামলায় কার্যত রোজই বিভিন্ন আদালতে নানা বৈদ্যুতিন সাক্ষ্যপ্রমাণ পেশ করতে হচ্ছে। সেই সব প্রমাণ যাতে বিচারের সময় কোনও ভাবে নষ্ট বা বিকৃত হয়ে না-যায়, তা নিশ্চিত করতেই এই নতুন বৈদ্যুতিন প্রযুক্তি-পুরুষের ব্যবহার শুরু করেছে রাজ্য সরকার।

Advertisement

কী ভাবে কাজ করে এই প্রযুক্তি? সরকারি সূত্রের খবর, বিভিন্ন মামলায় কোনও পেন ড্রাইভে বা হার্ড ডিস্কে থাকা তথ্য, সাক্ষ্যপ্রমাণ আদালতের কম্পিউটারে ব্যবহৃত হয়। সেই সব পেন ড্রাইভ বা হার্ড ডিস্ক সরাসরি কম্পিউটারে গুঁজে দিলে বিকৃতি ঘটার আশঙ্কা থাকে। তখনই প্রয়োজন পড়ে রাইট ব্লকারের। ওই মধ্যপুরুষের মাধ্যমে পেন ড্রাইভ বা হার্ড ডিস্ক ব্যবহার করলে তার অন্তর্গত তথ্যাদি নষ্ট বা বিকৃত হওয়ার আশঙ্কা থাকে না। সম্প্রতি জিয়াগঞ্জের একটি খুনের ঘটনায় এবং বহরমপুরে তরুণীর হত্যাকাণ্ডে রাইট ব্লকারের মাধ্যমে আদালতে ভিডিয়ো ফুটেজ পেশ করা হয়েছে বলে সংশ্লিষ্ট সূত্রের খবর।

ওই দু’টি মামলাতেই বিশেষ সরকারি কৌঁসুলি হিসেবে নিযুক্ত হয়েছেন সাইবার আইন-বিশেষজ্ঞ বিভাস চট্টোপাধ্যায়। তিনি বলছেন, দু’টি ঘটনাতেই সিসি ক্যামেরার ফুটেজ অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ প্রমাণ। তাই এই ধরনের প্রমাণকে অবিকৃত অবস্থায় রক্ষা করার জন্য এই প্রযুক্তি ব্যবহার করা হয়। এখন প্রায় সব ঘটনাতেই বড় প্রমাণ হিসেবে উঠে আসছে ভিডিয়ো ফুটেজ। তাই ভবিষ্যতে এই মধ্যপৌরুষেয় প্রযুক্তির ব্যবহার বাড়বে বলেই মনে করেন বিভাস।

Advertisement

বহরমপুরে সুতপা চৌধুরীর হত্যাকাণ্ডে ওই তরুণীকে যে একটানা কোপ মারা হয়েছিল, সেই দৃশ্য পেন ড্রাইভে পুরে ফরেন্সিক পরীক্ষার পরে আদালতে পেশ করা হয়। কাজেই সেটিকে অতি গুরুত্বপূর্ণ তথ্যপ্রমাণ হিসেবে গণ্য করা হচ্ছে। জিয়াগঞ্জের খুনের ঘটনায় ফেরিঘাটে অভিযুক্তের যাতায়াতের ছবি উঠেছে সিসি ক্যামেরার ফুটেজে। তাই সেটিও ওই খুনের মামলার অন্যতম বড় প্রমাণ বলে তদন্তকারীদের দাবি।

বিভাসের ব্যাখ্যা, কম্পিউটারে কোনও পেন ড্রাইভ বা হার্ড ডিস্ক যত বার গোঁজা হয়, তত বার একটি করে অ্যাকসেস পয়েন্ট তৈরি হয়ে যায়। তার ফলে ফুটেজ বিকৃত হয়েছে বলে অভিযোগ উঠতে পারে। এ ছাড়াও, যদি কম্পিউটারে কোনও রকমের ম্যালওয়ার বা ভাইরাস থাকে, তা হলে পেন ড্রাইভ বা হার্ড ডিস্ক গুঁজলে সেটিও ক্ষতিগ্রস্ত হবে। কিন্তু মধ্যবর্তী প্রযুক্তি-পুরুষ হিসেবে রাইট ব্লকার সক্রিয় থাকলে অ্যাকসেস পয়েন্ট তৈরি হবে না, সুরক্ষিত থাকবে তথ্য।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement