যে-কোনও হাসপাতালে ক্যানসার চিহ্নিত হলে নথিভুক্ত করতে হবে রেজিস্ট্রারে। প্রতীকী ছবি।
দূরদূরান্তের ক্যানসার রোগী এবং তাঁদের স্বজনদের জেলা বা শহরে দৌড়ঝাঁপের হয়রানি অনেকাংশে কমাতে উদ্যোগী হয়েছে রাজ্য। শুক্রবার স্বাস্থ্য ভবনের এক বৈঠকে সিদ্ধান্ত হয়েছে, এ বার থেকে প্রতি মঙ্গল ও শুক্রবার ক্যানসার বহির্বিভাগ চালু থাকবে সব স্তরের হাসপাতালেই। মহকুমা, জেলা স্তরের হাসপাতালে এবং যে-সব মেডিক্যাল কলেজে ক্যানসার চিকিৎসার আলাদা বিভাগ নেই, সেখানে ক্যানসার চিহ্নিতের জন্য সপ্তাহের ওই দু’দিন বহির্বিভাগ চালু করতে হবে।
স্বাস্থ্য দফতর বিভিন্ন স্তরের সরকারি হাসপাতালে ক্যানসার চিহ্নিতকরণ থেকে অস্ত্রোপচার পর্যন্ত সব পরিষেবা দিতে চাইছে। সুসংহত সেই ব্যবস্থাপনা চালুর লক্ষ্যেই এ দিন বৈঠক করেন স্বাস্থ্যসচিব নারায়ণস্বরূপ নিগম। সেখানে রাজ্যের মহকুমা, জেলা, মেডিক্যাল কলেজ, সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালের কর্তৃপক্ষ, জেলার মুখ্য স্বাস্থ্য আধিকারিক, বিভিন্ন হাসপাতালের রেডিয়োলজি ও ক্যানসার শল্যচিকিৎসার বিভাগীয় প্রধানেরা ছিলেন। নীলরতন সরকার মেডিক্যাল কলেজের রেডিয়োথেরাপির (রেডিয়েশন অঙ্কোলজি) বিভাগীয় প্রধান তথা রাজ্যের ক্যানসার চিকিৎসার নোডাল অফিসার শ্রীকৃষ্ণ মণ্ডল বলেন, ‘‘ধরা যাক রঘুনাথপুর মহকুমা হাসপাতালে কোনও রোগীর টিউমার দেখে চিকিৎসকের ক্যানসার বলে সন্দেহ হল। সে-ক্ষেত্রে ওই হাসপাতালেই ‘এফএনএসি’ পরীক্ষা হবে। রিপোর্ট পজ়িটিভ এলে রোগীকে পাঠানো হবে স্থানীয় বা পার্শ্ববর্তী জেলা হাসপাতালে। সেখানে পুরো চিকিৎসা পাবেন। যদি মনে হয় যে, টিউমারটিতে অস্ত্রোপচার দরকার, তখন কলকাতার কোনও ক্যানসার শল্যচিকিৎসার সুবিধাযুক্ত হাসপাতালে পাঠানো হবে।’’ স্বাস্থ্য সূত্রের খবর, রাজ্যের ‘টিউমার রেজিস্ট্রারে’ জেলার সব হাসপাতাল যুক্ত হবে। যে-কোনও হাসপাতালে ক্যানসার চিহ্নিত হলে নথিভুক্ত করতে হবে রেজিস্ট্রারে।
স্বাস্থ্য ভবন সূত্রের খবর, ওই চিহ্নিতকরণের সময়েই রোগীর একটি ইউনিক আইডি নম্বর তৈরি হবে। পরে তা ধরেই সব তথ্যে নজর রাখবে স্বাস্থ্য দফতর। চিহ্নিতকরণ থেকে চিকিৎসা, অস্ত্রোপচার কী হয়েছে, সবই জানা যাবে ওই নথি থেকে। স্বাস্থ্যকর্তারা জানাচ্ছেন, দেশে মহিলাদের মধ্যে স্তন ক্যানসারে আক্রান্তের সংখ্যা সব চেয়ে বেশি। তার পরেই রয়েছে জরায়ুমুখের ক্যানসার। পুরুষদের মধ্যে ফুসফুসের ক্যানসারে আক্রান্তের সংখ্যা সর্বাধিক। কামারহাটি সাগরদত্ত, মুর্শিদাবাদ ও বর্ধমান মেডিক্যালে ‘টার্শিয়ারি ক্যানসার কেন্দ্র’ গড়ে তোলা হচ্ছে।