Mamata Banerjee on Temple Renovation

বাংলায় মন্দিরের সংরক্ষণ, নির্মাণ এবং সংস্কারে ৭০০ কোটি খরচ করেছে সরকার, হিসাব মুখ্যমন্ত্রীর

কালীঘাটের কালীমন্দির থেকে শুরু করে জল্পেশের শিবমন্দির এবং রাজ্যের বিভিন্ন জেলায় তীর্থক্ষেত্রের উন্নয়নকল্পে এখনও পর্যন্ত মোট ৭০০ কোটি টাকা খরচ করেছে সরকার। নবান্ন থেকে তেমনটাই জানালেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা।

Advertisement

আনন্দবাজার অনলাইন সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ১১ জানুয়ারি ২০২৪ ১৯:২৯
Share:

মন্দির সংস্কার এবং নতুন মন্দির তৈরির জন্য ৭০০ কোটি টাকা খরচ করেছে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সরকার। —ফাইল চিত্র।

বাংলায় বিভিন্ন মন্দির সংরক্ষণ, নির্মাণ এবং সংস্কারের জন্য এখনও পর্যন্ত মোট ৭০০ কোটি টাকা খরচ করা হয়েছে। বৃহস্পতিবার নবান্ন থেকে তার হিসাব দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি জানান, রাজ্যে বিভিন্ন তীর্থস্থানের উন্নয়নের খাতে এখনও পর্যন্ত ৭০০ কোটি টাকা খরচ করেছে সরকার। কালীঘাটের মন্দির সংস্কার থেকে শুরু করে দিঘায় নতুন জগন্নাথ মন্দিরের নির্মাণ— তালিকাটি দীর্ঘ।

Advertisement

কালীঘাটে কালীমন্দির সংস্কারের কাজ চলছে। ওই কাজের কিছু দায়িত্ব মুকেশ অম্বানীর রিলায়্যান্স গোষ্ঠীর হাতে আগেই তুলে দিয়েছিল রাজ্য সরকার। বৃহস্পতিবার মমতা জানান, কালীঘাটে সংস্কারের সব কাজ রিলায়্যান্স করছে না। বরং সেখানে রাজ্যের খরচই অধিক। হিসাব দিয়ে তিনি বলেন, ‘‘কালীঘাটে কিন্তু রিলায়্যান্স একা কাজ করছে না। আমরা সেখানে ১৬৫ কোটি টাকা খরচ করেছি। ওদের খরচ হচ্ছে ৩৫ কোটি টাকা। হকার সরিয়ে সব দিক বজায় রেখে মন্দির সংস্কারের কাজটি করানো হচ্ছে। আমি মেয়রকে (ফিরহাদ হাকিম) বলব, দ্রুত যেন সেই কাজ শেষ হয়। পুলিশকেও সহযোগিতা করতে বলব।’’ কালীঘাটে মন্দির সংস্কারের কাজ অনেকটাই এগিয়েছে বলে জানান মমতা। তাঁর আশা, পয়লা বৈশাখের আগেই নতুন রূপে কালীঘাটের মন্দির তৈরির কাজ শেষ হবে।

প্রসঙ্গত, রামমন্দির উদ্বোধনে তাঁর কাছে আমন্ত্রণ এসেছে কি না, সে বিষয়ে এখনও কিছু জানাননি মমতা। বৃহস্পতিবারেও তাঁকে ওই বিষয়ে প্রশ্ন করা হয়েছিল। কিন্তু মুখ্যমন্ত্রী সরাসরি তার কোনও জবাব দেননি। তবে তৃণমূল ওই উদ্বোধনে যাবে না বলেই এখনও পর্যন্ত খবর। আগামী ২২ জানুয়ারি অযোধ্যায় ওই মন্দিরের উদ্বোধন করবেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। কংগ্রেস এবং সিপিএম ওই অনুষ্ঠানে অংশ নেবে না বলে ইতিমধ্যেই আনুষ্ঠানিক ভাবে জানিয়ে দিয়েছে। তবে তৃণমূলের একাংশের মধ্যে এমন উদ্বেগও রয়েছে যে, রামমন্দিরের উদ্বোধনে আমন্ত্রিত হয়েও অংশ না নিলে লোকসভা ভোটে হিন্দু ভোটারদের মধ্যে তার ‘প্রভাব’ পড়তে পারে। অনেকের মতে, সেই কারণেই মুখ্যমন্ত্রী মমতা হিসাব দিয়ে জানিয়ে দিয়েছেন, তাঁরা রাজ্যে বিবিধ মন্দির সংস্কার, নির্মাণ এবং সংরক্ষণের জন্য কত ব্যয় করেছেন।

Advertisement

পুরীর মন্দিরের আদলে দিঘায় একটি জগন্নাথ মন্দির তৈরি করছে রাজ্য সরকার। মমতা জানান, সেই মন্দিরের জন্য ২০৫ কোটি টাকা খরচ করা হয়েছে। দিঘার মন্দির হবে পুরীর মন্দিরের সম উচ্চতা বিশিষ্ট। চলতি বছরের এপ্রিলে সেই মন্দির উদ্বোধন করার কথা মুখ্যমন্ত্রীরই। রাজ্যের বিভিন্ন জেলায় বিভিন্ন মন্দির এবং তীর্থক্ষেত্রের প্রসঙ্গ তুলে খরচের হিসাব জানিয়েছেন মমতা। কচুয়া এবং চাকলার লোকনাথ মন্দিরের সংস্কারে যথাক্রমে ৯ এবং ১৫ কোটি টাকা খরচ করা হয়েছে। মায়াপুরে ইস্কনের মন্দিরে ৭০০ একর জমির অনুমতি দিয়েছে সরকার। জলপাইগুড়ির জল্পেশের মন্দিরে সরকারের খরচ ৩১ কোটি ৭০ লক্ষ টাকা।

এ ছাড়াও হুগলির তারকেশ্বর, বীরভূমের তারাপীঠ, কঙ্কালীতলা, বক্রেশ্বর, ফুল্লরা মন্দির, জলপাইগুড়ির দেবী চৌধুরাণী মন্দির, কোচবিহারের মদনমোহন, কান্তেশ্বরী মন্দিরের নাম উল্লেখ করে সেখানে সরকারের উন্নয়নমূলক কাজের কথা জানান মুখ্যমন্ত্রী। রাজ্যের বাইরেও মন্দির সংস্কার এবং উন্নয়নের জন্য খরচ করেছে সরকার। মমতা জানান, ঝাড়খণ্ডের দেওঘরে অনুকূল ঠাকুরের আশ্রমে পাঁচ একর জমি দান করা হয়েছে। বারাণসীর কালী মন্দিরের সংস্কারের জন্যও বেশ কিছু টাকা খরচ করেছে বাংলার সরকার।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement