নবান্ন। —ফাইল চিত্র।
চলতি আর্থিক বছরের প্রথম সাত মাসে ৩৭ লক্ষ পরিবারকে গড়ে ৫২ দিন করে কাজ দেওয়া হয়েছে। তাতেই শেষ হয়ে গিয়েছে বরাদ্দ ২৫ কোটি কর্মদিবসের প্রায় ৭৬ শতাংশ। এ বার ১০০ দিনের কাজ প্রকল্পের জন্য পাঁচ কোটি অতিরিক্ত কর্মদিবসের দাবি জানাল রাজ্য।
এই বাড়তি কর্মদিবসের ফলে অতিরিক্ত অন্তত আড়াই হাজার কোটি টাকা পেতে হবে রাজ্যকে। পঞ্চায়েত দফতর জানিয়েছে, কেন্দ্রীয় সরকার এখনও এই বিষয়ে কিছু বলেনি। তবে আগামী পাঁচ মাস মানুষের হাতে কাজ দিতে এ ছাড়া আর কোনও উপায় নেই। কাজের দাবি উঠলে কেন্দ্রও টাকা দিতে বাধ্য।
সরকারি সূত্রের খবর, এ বছর সব চেয়ে বেশি কাজের বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে পশ্চিমবঙ্গকেই। অন্য কোনও রাজ্যই বছরে ২৫ কোটি কর্মদিবস পূরণের লক্ষ্যমাত্রা পায়নি। এ ক্ষেত্রে বাংলার পরে রয়েছে অন্ধ্রপ্রদেশ ও রাজস্থান। তারা বছরে ২২ কোটি কর্মদিবসের লক্ষ্যমাত্রা নিয়ে কাজ করছে। কিন্তু পশ্চিমবঙ্গের পরিস্থিতি অন্যান্য রাজ্যের চেয়ে আলাদা।
২০১৮-’১৯ অর্থবর্ষের এই সাত মাসের মধ্যে এপ্রিল-মে-জুনে পঞ্চায়েত ভোটের জন্য ত্রিস্তর পঞ্চায়েতে কাজকর্ম প্রায় বন্ধ ছিল। অগস্টে শুরু হলেও পঞ্চায়েতের বোর্ড গঠনের কাজ এখনও শেষ হয়নি। চলছে বিজয়ী পঞ্চায়েত প্রার্থীদের প্রশিক্ষণের কাজ। এই সময়ে মাটি কাটা বা অন্যান্য কায়িক শ্রমের কাজের সুযোগ তেমন ছিল না বলে মনে করছেন পঞ্চায়েত দফতরের একাংশ। তা সত্ত্বেও এই সময়ে ১০০ দিনের কাজ প্রকল্পে গড়ে ৫২ দিন কাজ করেছে ৩৭ লক্ষ পরিবার। বরাদ্দ সাড়ে ছ’হাজার কোটি টাকার মধ্যে খরচ হয়ে গিয়েছে সাড়ে চার হাজার কোটি। এখন কাজের মরসুম। ফলে কী ভাবে কাজের দাবি মেনে সকলকে কাজ দেওয়া হবে, তা নিয়ে চিন্তায় রয়েছে পঞ্চায়েতকর্তারা।
পঞ্চায়েত দফতরের একাংশের মতে নভেম্বর থেকে মার্চেই ১০০ দিনের প্রকল্পে বেশি কাজের ব্যবস্থা করা যায়। কারণ, অগ্রহায়ণে আমন ধান কাটার পরে গ্রামে শ্রমিকদের হাতে টাকার জোগান কম থাকে। এক সময় শীতের শুরুতে পুবে খাটতে যাওয়ার প্রবণতাও ছিল রাজ্যের পশ্চিমাঞ্চলের বিভিন্ন জেলায়। এই সময়ে মাটি কাটার কাজ ভাল হয়। তাই কেন্দ্রের কাছে আরও পাঁচ কোটি কর্মদিবসের দাবি জানায় পঞ্চায়েত দফতর। পঞ্চায়েতমন্ত্রী সুব্রত মুখোপাধ্যায় বলেন, ‘‘বছর শেষে অন্তত ৪৫ লক্ষ পরিবারকে ৭৫ দিন কাজ দিতে পারব। বাড়তি কর্মদিবসের ব্যবস্থা কেন্দ্রকেই করতে হবে। এই প্রকল্পে কাজ চাইলে তা দেওয়া সরকারের সাংবিধানিক দায়িত্ব।’’