প্রশান্ত কিশোর। —ফাইল চিত্র
তিনি এখন এ রাজ্যে শাসক তৃণমূলের নির্বাচনী পরামর্শদাতা। গত লোকসভা ভোটের পর থেকে তৃণমূলের এই কাজের দায়িত্ব নিয়েছেন তিনি। পুরভোটের আগে তাই বিভিন্ন জেলায় সফর করতে চান ভোটকুশলী প্রশান্ত কিশোর (পিকে)। পুরভোটের পরে সেই সফরের সংখ্যা আরও বাড়বে। ২০২১-এর বিধানসভা নির্বাচনের আগে গোটা রাজ্য কার্যত চষে ফেলতে চান তিনি। তৃণমূলের নির্বাচনী পরামর্শদাতা হিসাবে সেই সময় তিনি ‘সফট টার্গেট’ হতে পারেন। এমনটাই আশঙ্কা রাজ্য গোয়েন্দা দফতরের। সে কারণেই প্রশান্ত কিশোরের জন্য ‘জেড’ স্তরের নিরাপত্তা দিচ্ছে রাজ্য সরকার।
সরাসরি রাজ্য রাজনীতি বা প্রশাসনের সঙ্গে যুক্ত না হয়েও এ ধরনের নিরাপত্তা পাওয়ার নজির এ রাজ্যে খুব একটা আছে বলে মনে করতে পারছেন না পুলিশ কর্তারাও। তবে রাজ্য গোয়েন্দা দফতরের কর্তাদের দাবি, নিরাপত্তা কাকে দেওয়া হবে এবং কোন স্তরের দেওয়া হবে সেটা নির্ভর করে ওই ব্যক্তির উপর হামলা এবং ঝুঁকির আশঙ্কা উপর নির্ভর করে। ব্যক্তির পদাধিকারের উপর নির্ভর করে না।
রাজ্য গোয়েন্দা দফতরের দাবি, প্রশান্ত কিশোরের উপর হামলার আশঙ্কা রয়েছে। আগামী দিনে জেলা সফরের সময়ে তা আরও বাড়বে। সেই মর্মেই রাজ্য গোয়েন্দা দফতর একটি রিপোর্ট দেয় স্বরাষ্ট্র দফতরকে, এমনটাই জানা গিয়েছে। নবান্ন সূত্রের খবর, ঝুঁকির নিরিখেই প্রশান্তকে জেড স্তরের নিরাপত্তা দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে রাজ্য।
আরও পড়ুন: ‘নীতীশকে তো কেউ প্রশ্নই করে না’, বিতর্কে আহ্বান করে বললেন প্রশান্ত কিশোর
জেড স্তরের নিরাপত্তা যাঁরা পান, তাঁদের জন্য ২২ জনের একটি বাহিনী মোতায়েন করা হয়। কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের পক্ষ থেকে যাঁদের ওই বিশেষ নিরাপত্তা দেওয়া হয়, তাঁদের ক্ষেত্রে ওই ২২ জনের মধ্যে ৪-৫ জনের একটি কমান্ডো বাহিনী থাকে। বাকিরা সাধারণত কেন্দ্রীয় পুলিশ বাহিনী থেকে নিযুক্ত হন। তবে কোনও রাজ্যও যে কাউকেই এই নিরাপত্তা দিতে পারে। সে ক্ষেত্রে রাজ্য গোয়েন্দা দফতর ওই ব্যক্তির ক্ষেত্রে কতটা নিরাপত্তা সংক্রান্ত ঝুঁকি রয়েছে, তার উপর নির্ভর করে বাহিনী মোতায়েন করে থাকে। এ রাজ্যে যাঁরা জেড স্তরের নিরাপত্তা পান তাঁদের সর্ব ক্ষণের পাইলট এবং এসকর্ট গাড়ি দেওয়া হয়। ১২ থেকে ১৬ জনের নিরাপত্তা বাহিনী নিয়োগ করা হয়। এঁরা মূলত সবাই রাজ্য পুলিশের। ওই দলে রাজ্য পুলিশ বা কলকাতা পুলিশের কমান্ডোরাও থাকেন।
আরও পড়ুন: বিদ্রোহ, কেলেঙ্কারি সব ছাপিয়ে তাপসের জন্য রয়ে গেল চোখের জল
বর্তমানে রাজ্যে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এবং অভিষের বন্দ্যোপাধ্যায় জেড প্লাস স্তরের নিরাপত্তা পেয়ে থাকেন। জেড নিরাপত্তা পান রাজ্যপাল জগদীপ ধনখড়, কলকাতার মেয়র ফিরহাদ হাকিম, পরিবহণ মন্ত্রী শুভেন্দু অধিকারী এবং আইনমন্ত্রী মলয় ঘটক। সেই তালিকায় যোগ হল প্রশান্ত কিশোরের নাম।