—প্রতীকী ছবি।
চলতি আর্থিক বছর শেষ হতে বাকি আর মাত্র চার মাস। কিন্তু মালদহ জেলায় বাংলা আবাস যোজনায় গত ২০১৯-২০ আর্থিক বছরেরই অর্ধেক বাড়ি তৈরির কাজ এখনও শেষ হয়নি। প্রশাসনিক সূত্রে খবর, এখনও পর্যন্ত গত আর্থিক বছরে এই প্রকল্পে বাড়ি তৈরির কাজের গড় হার মাত্র ৪৯.২৪ শতাংশ। আর চলতি আর্থিক বছরের সাড়ে সাত মাসে মঞ্জুর হওয়া প্রায় ৩৬ হাজার বাড়ির মধ্যে মাত্র ৫৮১টি বাড়ি তৈরির কাজ শেষ হয়েছে।
প্রকল্পের কাজে কেন এত বিলম্ব? উঠেছে প্রশ্ন। প্রশাসন অবশ্য জানিয়েছে, এই প্রকল্পে উপভোক্তারা নিজেরাই বাড়ি তৈরি করে থাকেন। কিন্তু প্রায় চার মাস ধরে প্রকল্পের নির্দিষ্ট পোর্টালে টাকা না আসাতেই বাড়ি তৈরির কাজ ঝুলে আছে।
প্রশাসনিক সূত্রে জানা গিয়েছে, বাংলা আবাস যোজনায় পাকা বাড়ি তৈরি করতে উপভোক্তাকে এক লক্ষ কুড়ি হাজার টাকা দেওয়া হয়। এর মধ্যে প্রথম কিস্তিতে ৬০ হাজার টাকা, দ্বিতীয় কিস্তিতে ৫০ হাজার টাকা ও শেষ কিস্তিতে ১০ হাজার টাকা দেওয়া হয়। প্রথম কিস্তির টাকার কাজ শেষ হলে ‘জিও ট্যাগিং’ করে সুনির্দিষ্ট পোর্টালে আপলোড করা হয় বাড়ি তৈরির ছবি, তার পরেই দ্বিতীয় কিস্তির টাকা মেলে। তৃতীয় কিস্তির টাকা পাওয়ার ক্ষেত্রেও একই নিয়ম। আরও জানা গিয়েছে, এই প্রকল্পের ৬০ শতাংশ অর্থ বরাদ্দ করে কেন্দ্রীয় সরকার ও বাকি ৪০ শতাংশ রাজ্য সরকার।
জেলা প্রশাসন সূত্রে খবর, ২০১৯-২০ আর্থিক বছরে মালদহ জেলায় বাংলা আবাস যোজনা তৈরির লক্ষ্যমাত্রা নেওয়া হয়েছিল ১ লক্ষ ৫ হাজার ২২০টি। তার মধ্যে প্রশাসনিক অনুমোদন মেলে ১ লক্ষ ৩ হাজার ২৬৫টির। কিন্তু সেই আর্থিক বছর শেষ হয়ে চলতি আর্থিক বছরের প্রায় আট মাস পার হলেও জেলায় বাংলা আবাস যোজনায় সেই কাজের অগ্রগতি মাত্র ৪৯.২৪ শতাংশ। এখনও পর্যন্ত মাত্র ৫০ হাজার ৮৫০টি বাড়ি তৈরির কাজ শেষ হয়েছে। সব চেয়ে কম অগ্রগতি কালিয়াচক ৩ ব্লকে— ২৮.৬৪ শতাংশ, পুরাতন মালদহ ব্লকে ২৮.৬৯ শতাংশ। জেলায় এই কাজে এগিয়ে কালিয়াচক ১ ব্লকে ৭৮.১০ শতাংশ।
প্রশাসনিক সূত্রে আরও জানা গিয়েছে, চলতি ২০২০-২১ আর্থিক বছরে এই জেলায় বাংলা আবাস যোজনা প্রকল্পে বাড়ি তৈরির লক্ষ্যমাত্রা নেওয়া হয়েছে ৫৫ হাজার ৮৩৭টি। তার মধ্যে মঞ্জুর হয়েছে ৩৬ হাজার ৫১টি। কিন্তু এখনও পর্যন্ত মাত্র ৫৮১টি বাড়ি তৈরির কাজ শেষ হয়েছে। প্রায় ১০ হাজার উপভোক্তা বাড়ি তৈরির জন্য প্রথম কিস্তির টাকা পাননি। প্রথম কিস্তির টাকা পেয়েছেন ২৬ হাজার ৩১০ জন উপভোক্তা।
বাংলা আবাস যোজনায় যেই জেলায় অগ্রগতির হার এত কম কেন? জেলা প্রশাসনের এক কর্তা বলেন, "এই প্রকল্পের নিজস্ব যে পোর্টাল আছে তাতে কাজের অগ্রগতির নিরিখে পর্যায়ক্রমে বাড়ি তৈরির তথ্য তুলে দেওয়া হয়েছে। জিও ট্যাগিং হয়েছে। কিন্তু গত প্রায় চার মাস ধরে সেই পোর্টালে টাকা আসছে না। ফলে উপভোক্তারাও তা পাচ্ছেন না। উপভোক্তারা টাকা না পাওয়ায় বাড়ি তৈরির কাজ ঝুলে আছে।"