বন দফতরের স্পেশাল টাস্ক ফোর্স। —নিজস্ব চিত্র।
উত্তরবঙ্গের বিভিন্ন এলাকায় বণ্যপ্রাণীদের চোরাচালানকারীদের রুখতে গঠন করা হয়েছিল বন দফতরের স্পেশাল টাস্ক ফোর্স (এসটিএফ)। তবে তিন বছরের মাথায় সেই পদটি তুলে দিল রাজ্য় সরকার। বুধবার এই মর্মে সরকারের তরফে নির্দেশিকা জারি করা হয়েছে। কেন এই পদ বিলোপ করা হল, তা নিয়ে উঠছে প্রশ্ন। স্বপ্না বর্মণ-বিতর্কের ফলেই কি তা বিলোপ করা হল? প্রশ্ন তুলছেন অনেকে।
প্রশাসন সূত্রে খবর, ২০১৭ সালের ১৭ এপ্রিল একটি নির্দেশিকা জারি করে এই পদটি তৈরি করা হয়েছিল। মূলত চোরাচালানকারীদের গতিবিধির নজরদারিতে এবং পাচার রুখতেই এসটিএফ গঠিত হয়। ‘১৭-তে ওই পদ গঠনের পর তার প্রথম প্রধান ছিলেন বেলাকোবার প্রাক্তন রেঞ্জার সঞ্জয় দত্ত।
তিন বছরের স্বল্প সময়েও বিতর্কে জড়িয়েছিল এসটিএফ। সম্প্রতি এসটিএফ প্রধান সঞ্জয় দত্তের নেতৃত্বে অর্জুন পুরস্কারপ্রাপ্ত অ্যাথলিট জলপাইগুড়ির স্বপ্না বর্মণের বাড়িতে অভিযান চালিয়েছিল বন দফতর। অভিযোগ, ২০১৮ সালে হেপ্টাথলনে জাকার্তা এশিয়াডে সোনাজয়ী স্বপ্নাকে ফাঁসানো হয়েছিল। এ নিয়ে রীতিমতো তোলপাড় হয় জলপাইগুড়ি-সহ গোটা রাজ্য। রাজবংশী ওই অ্যাথলিটের পক্ষ নিয়ে উত্তরবঙ্গের বেশ কয়েকটি সংগঠন আন্দোলনেও নেমেছিল। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় স্বয়ং বিষয়টি নিয়ে বিবৃতি দিয়েছিলেন। এর পর টাস্ক ফোর্সের দায়িত্ব থেকে রেঞ্জার সঞ্জয় দত্তকে সরিয়ে দেওয়া হয়।
আরও পড়ুন: সৌম্যেন্দুর অপরাধ কী? ‘ন্যায়বিচার’ চেয়ে মমতাকে চিঠি মধ্যম অধিকারীর
আরও পড়ুন: আনন্দ করুন, বাড়াবাড়ি করবেন না, বর্ষবরণের আগে বার্তা রাজ্যের
অনেকের মতে, ওই বিতর্কের জন্য এই পদটি তুলে দেওয়া হল। এ বার থেকে শুধুমাত্র রেঞ্জার হিসেবেই দায়িত্ব পালন করবেন সঞ্জয়বাবু। প্রসঙ্গত, স্পেশাল টাস্ক ফোর্সের প্রধান হিসেবে সঞ্জয়বাবু সিকিউরিটি-সহ অত্যাধুনিক আগ্নেয়াস্ত্র নিয়ে অভিযান চালাতে পারতেন। তবে এসটিএফ পদটির বিলোপ ঘটায় এ বার থেকে সে সমস্ত সুযোগসুবিধা পাবেন না সঞ্জয়বাবু।
যদিও ওই বিতর্কের সঙ্গে পদবিলোপের কোনও সম্পর্ক নেই বলে দাবি রাজ্যের মুখ্য বনপাল রবিকান্ত সিন্হার। তিনি বলেন, “উত্তরবঙ্গের এক জন রেঞ্জারকে প্রধান করে এই পদটি গঠন করা হয়েছিল। তবে সেই রেঞ্জারের বদলি হওয়ায় পদটি তুলে দেওয়া হল। যাঁরা এসটিএফ টিমের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন, তাঁদেরকে নিজেদের আগের কাজে যোগ দিতে বলা হয়েছে। তবে ভবিষ্যতে আরও বড়সড় ভাবে এসটিএফ টিম গঠন করার চিন্তা-ভাবনা রয়েছে।”