প্রতীকী ছবি।
ডিএ বা মহার্ঘ ভাতা ২০১৬ সালের জুলাই থেকে বাকি থাকায় প্রবল ক্ষোভ রয়েছে সরকারি বিদ্যুৎকর্মীদের মধ্যে। এই পরিস্থিতিতে রাজ্য বিদ্যুৎ বণ্টন সংস্থা কর্তৃপক্ষ সম্প্রতি তাঁদের গ্রাহক পরিষেবা কেন্দ্রগুলির কর্তাদের এক বৈঠকে জানিয়েছেন, সাত শতাংশ হারে ক্ষতি কমাতে পারলে কর্মীদের একটি বিশেষ হারে ‘ইনসেন্টিভ’ বা ভাতা দেওয়া হবে।
যাঁরা মিটার দেখেন, তাঁদের জন্যও একই সুবিধা দেওয়ার কথা ঘোষণা করা হয়েছে। আগামী দিনে মিটার রিডিংয়ে যদি দেখা যায় যে, বিদ্যুতের চাহিদা (৩-৫ শতাংশ হারে) বাড়ছে, তা হলে ওই কর্মীরাও একটি বিশেষ হারে আর্থিক সুবিধা পাবেন। মিটার রিডিংয়ের ক্ষেত্রে অভিযোগ, গ্রাহকের ঘরে গিয়ে অনেক সময় মিটার দেখাই হয় না! গড়ে একটা রিডিং বসিয়ে দেওয়া হয়। ফলে গ্রাহকের চাহিদা বোঝা যায় না। ঠিক হয়েছে, এ বছর ১ অক্টোবর থেকে ২০১৯ সালের মার্চ পর্যন্ত ক্ষতির হার কমাতে পারলে মিলবে আর্থিক সুবিধা।
এখন বিদ্যুৎ পরিষেবা দিতে বণ্টন সংস্থার ক্ষতি হয় গড়ে ২৮-৩০ শতাংশ। কোনও কোনও গ্রাহক পরিষেবা কেন্দ্রে এই হার আরও বেশি। গত কয়েক বছরে গ্রামীণ বিদ্যুদয়নের দরুন বণ্টন সংস্থার গ্রাহক-সংখ্যা বহু গুণ বেড়ে গিয়েছে। ফলে ক্ষতির বহর বেড়েছে। ক্ষতির হার মাত্রা ছাড়ানোয় বণ্টন সংস্থা সহজ শর্তে কেন্দ্রীয় ঋণ থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। কেন্দ্রের শর্ত হল, ক্ষতির হার রাখতে হবে ১৫ শতাংশের মধ্যে।
বিদ্যুৎকর্তারা জানাচ্ছেন, এক শতাংশ ক্ষতির হার কমাতে পারলে সংস্থার ঘরে ৬০-৮০ কোটি টাকা আসবে। ফলে বিদ্যুৎকর্মীরা ক্ষতি কমাতে পারলে আর্থিক সুবিধা দিতে সমস্যা হবে না। বরং অর্থের জোগান বাড়বে, লাভবান হবে দু’পক্ষই।
ক্ষতি কমানোর উদ্যোগের সঙ্গে সঙ্গে খরচে রাশ টানতে বিভিন্ন বিভাগকে ১৩ দফা নির্দেশ মেনে চলতে বলেছেন রাজ্য বিদ্যুৎ বণ্টন সংস্থার চেয়ারম্যান রাজেশ পাণ্ডে। চলতি আর্থিক বছরের (২০১৮-’১৯) বাজেটে বিভিন্ন ক্ষেত্রে যে-অর্থ অনুমোদন করা হয়েছে, সেই খাতেও রাশ টানার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। বিদ্যুৎ ভবনের কর্তাদের একাংশ জানাচ্ছেন, ব্যাপক বিদ্যুৎ চুরি, বিল বকেয়া রাখার ফলে লোকসানের বহর যে-ভাবে বেড়েছে, তাতে ক্ষতি কমানোর পাশাপাশি খরচে রাশ টানতে না-পারলে সংস্থার ঘাড়ে ঋণের বোঝা বেড়েই চলবে।