উপনির্বাচন আজ, আশঙ্কায় বিরোধীরা

সাফল্যের ধারা ধরে রাখার পাশাপাশিই সামনে পঞ্চায়েত ও পরে লোকসভা নির্বাচনের কথা মাথায় রেখে বিজেপি-র উত্থান ঠেকানো এ বার রাজ্যের শাসক দলের লক্ষ্য।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ২৯ জানুয়ারি ২০১৮ ০৩:৪৩
Share:

রাজ্যে সাম্প্রতিক সব নির্বাচনেই তৃণমূলের সাফল্যের গতি অব্যাহত। সেই আবহেই আজ, সোমবার উলুবেড়িয়া লোকসভা ও নোয়াপাড়া বিধানসভা কেন্দ্রে উপনির্বাচন। সাফল্যের ধারা ধরে রাখার পাশাপাশিই সামনে পঞ্চায়েত ও পরে লোকসভা নির্বাচনের কথা মাথায় রেখে বিজেপি-র উত্থান ঠেকানো এ বার রাজ্যের শাসক দলের লক্ষ্য।

Advertisement

দুই কেন্দ্রের মধ্যে উলুবেড়িয়া ছিল তৃণমূলের হাতেই। সাংসদ সুলতান আহমেদের মৃত্যুর পরে তাঁর স্ত্রী সাজদা আহমেদকে প্রার্থী করে ওই আসন নিজের ঘরে রাখতে চাইছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। নোয়াপাড়ায় অবশ্য গত বিধানসভা ভোটে বামেদের সমর্থনে জয়ী হয়েছিলেন কংগ্রেসের মধুসূদন ঘোষ। তাঁর মৃত্যুর ফলে শূন্য আসন এখন বিরোধীদের হাত থেকে দখল করার অভিযানে নেমেছে শাসক দল। দুই কেন্দ্রেই ভোটের দিনে বেনিয়ম ও অশান্তির আশঙ্কা করছে বিরোধীরা। উলুবেড়িয়া লোকসভা কেন্দ্রে ৩০ ও নোয়াপাড়া বিধানসভা কেন্দ্রে পাঁচ কোম্পানি কেন্দ্রীয় বাহিনী মোতায়েন থাকার কথা। কিন্তু প্রতি বুথের সুরক্ষা নিশ্চিত করার জন্য এই বাহিনী পর্যাপ্ত নয় বলেই নির্বাচন কমিশনে দরবার করেছে বিরোধীরা।

দুই কেন্দ্রেই এ বার ভোটযন্ত্রের সঙ্গে ভি ভি প্যাট থাকছে। অর্থাৎ তাঁদের পছন্দের প্রার্থীকে ভোট দিতে পারলেন কি না, সেই তথ্য সংবলিত স্লিপ পাবেন ভোটারেরা। যদিও সেই স্লিপ হাতে পাওয়ার জন্য বুথ অবধি তাঁদের ভোটারেরা সকলে পৌঁছতে পারবেন কি না, তা নিয়েই বিরোধীদের আশঙ্কা!

Advertisement

নোয়াপাড়ায় তৃণমূলের তরফে ভোটের দায়িত্বে আছেন ভাটপাড়ার দোর্দণ্ডপ্রতাপ বিধায়ক অর্জুন সিংহ। নোয়াপড়া বিধানসভা কেন্দ্রের সীমানার বাইরে ব্যারাকপুর শিল্পাঞ্চলের একটি হোটেলে বসে অর্জুন আজ ভোট নজরদারি করবেন বলে তৃণমূল সূত্রের খবর। অর্জুন-বাহিনীকে ঠেকাতে এলাকার মানুষকে প্রতিরোধে এগিয়ে আসার ডাক দিয়েছেন সিপিএমের গার্গী চট্টোপাধ্যায়, বিজেপি-র সন্দীপ বন্দ্যোপাধ্যায় ও কংগ্রেসের গৌতম বসু। অর্জুন অবশ্য গোলমালের আশঙ্কা উড়িয়ে দিচ্ছেন। তাঁর মন্তব্য, ‘‘সিপিএম, কংগ্রেস বা বিজেপি কোথাও কেউ নেই! গণ্ডগোল হবে কার সঙ্গে!’’

উলুবেড়িয়ায় আবার মেরুকরণের হাওয়া নোয়াপাড়ার চেয়ে বেশি। সিপিএম প্রার্থী সাবিরউদ্দিন মোল্লা তৃণমূল-বিজেপি’র মেরুকরণের চেষ্টা রুখতেই দৌড়ঝাঁপ করেছেন। এলাকার একমাত্র কংগ্রেস বিধায়ক অসিত মিত্রও বলছেন, ‘‘নির্বাচনটা আমাদের কাছে আদর্শগত লড়াই। জয়-পরাজয়ের নিষ্পত্তি করার ভার মানুষের হাতে।’’ তবে রবিবার থেকেই উলুবেড়িয়ায় অশান্তির আঁচ পাচ্ছেন বিরোধীরা। সিপিএমের দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলা সম্পাদক শমীক লাহিড়ীর অভিযোগ, পূজালীর আছিপুর ফেরিঘাট দিয়ে নদী পেরিয়ে তৃণমূলের সশস্ত্র বাহিনী এ দিন সকাল থেকেই উলুবেড়িয়ায় ঢুকছে। তাদের ছবি তুলতে গিয়ে আক্রান্ত বজবজের সিপিএম কর্মী। দক্ষিণ ২৪ পরগনার পুলিশ দর্শক! তৃণমূলের হাওড়া (গ্রামীণ) জেলা সভাপতি পুলক রায় ও অন্য নেতারা অবশ্য বহিরাগত নিয়ে আসার অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। সিপিএম, কংগ্রেস, বিজেপি নেতারা দফায় দফায় প্রশাসন ও কমিশনের পর্যবেক্ষকের কাছে অভিযোগ জানিয়েছেন।

কমিশনের সিইও আরিজ আফতাবের সঙ্গে দেখা করে এ দিন বিজেপি নেতা মুকুল রায়, জয়প্রকাশ মজুমদার, প্রভাকর তিওয়ারিরা অভিযোগ করেছেন, বুথের ভিতরে রাজ্য পুলিশ ও বাইরে কেন্দ্রীয় বাহিনী রাখার পরিকল্পনা হয়েছে। বুথের ভিতরেও কেন্দ্রীয় বাহিনী মোতায়েনের দাবি জানিয়েছেন তাঁরা।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement