পুজোর আগে ভোট হতে পারে, নির্বাচনের কমিশনের বৈঠকের পর আশাবাদী তৃণমূল। নিজস্ব চিত্র
পুজোর আগেই রাজ্যে হতে পারে উপনির্বাচন। বুধবার নির্বাচন কমিশনের বৈঠকের পর তেমনটাই মনে করছে বিভিন্ন মহল। আশাবাদী রাজ্যের শাসক দল তৃণমূলও। তবে সে ক্ষেত্রে আগামী কয়েক দিনের মধ্যেই ভোটের দিন ক্ষণ ঘোষণা করতে হবে কমিশনকে।
পশ্চিমবঙ্গের দু’টি কেন্দ্রে নির্বাচন এবং পাঁচটি কেন্দ্রে উপনির্বাচন হওয়ার কথা। নিয়ম অনুযায়ী, কোনও কেন্দ্রে বিধায়কের মৃত্যু হলে বা ইস্তফা দিলে ছয় মাসের মধ্যে উপনির্বাচন হওয়া বাঞ্ছনীয়। তবে বিশেষ পরিস্থিতিতে তার অন্যথাও হয়েছে অনেক সময়। বাংলার পাঁচটি আসনের ক্ষেত্রে ছয় মাসের ওই সময় সীমা শেষ হচ্ছে নভেম্বরের প্রথম সপ্তাহে। ভবানীপুরের ক্ষেত্রে ওই সময়সীমা শেষ হবে ২১ নভেম্বর। আবার বিধানসভা ভোটের ফলপ্রকাশের পর চার মাস অতিক্রান্ত হয়ে গিয়েছে। নিয়ম অনুযায়ী, আর দু’মাসের মধ্যে ওই সব কেন্দ্রে নির্বাচন সেরে ফেলা দরকার। বুধবার উপনির্বাচন সংক্রান্ত বিষয়েই বিভিন্ন রাজ্যের মুখ্য নির্বাচনী আধিকারিকদের সঙ্গে বৈঠক করেন কেন্দ্রীয় নির্বাচন কমিশনের কর্তারা। সেখানে প্রতিটি রাজ্যের কাছে ভোট করার ব্যাপারে মতামত জানতে চাওয়া হয়।
বৈঠকে বাংলার নির্বাচনী আধিকারিকরা জানান, তাঁরা এখনই ভোট করতে প্রস্তুত। সূত্রের খবর, শুধু বাংলা নয় ওই বৈঠকে ১৭টি রাজ্যের মধ্যে বেশির ভাগই দ্রুত ভোট করার পক্ষপাতী। কমিশনে বাংলার আধিকারিকদের বক্তব্য, রাজ্যে অক্টোবর মাসে পুজোর ছুটি রয়েছে। ক্যালেন্ডার অনুযায়ী ১০ থেকে ২৪ অক্টোবর পর্যন্ত বন্ধ থাকবে রাজ্য নির্বাচনী দফতরও। তার আগে ছুটি রয়েছে গাঁধী জয়ন্তী ও মহালয়ায়। ফলে ভোট করতে হলে সেপ্টেম্বরেই করা উচিত। প্রয়োজনে অক্টোবরের প্রথম সপ্তাহে গণনা করা যেতে পারে।
এ নিয়ে রাজ্য মুখ্য নির্বাচনী অফিসের এক আধিকারিক বলেন, ‘‘ভোটের দিন ঘোষণা করার পর থেকে ন্যূনতম ২৪ দিন হাতে রাখা দরকার। এই মাসে ভোট হলে তা সম্ভব। কিন্তু পরের মাসে পুজোর ছুটির কারণে তা সম্ভব নয়। তাই আমার মনে হয় কমিশন যদি ভোট করার ইচ্ছে থাকে তবে এ মাসেই বিজ্ঞপ্তি ঘোষণা হতে পারে।’’ তবে আদৌ ভোট গ্রহণ হবে কি না নির্বাচন কমিশন থেকে এ ব্যাপারে এখনও কিছু জানা যায়নি। শেষ খবর অনুযায়ী, বুধবার রাতে মুখ্য নির্বাচন কমিশনার সুশীল চন্দ্র কমিশনের আধিকারিকদের নিয়ে বৈঠকে বসছেন। উপনির্বাচন সংক্রান্ত যে তথ্য রাজ্যগুলি থেকে কমিশনের কর্তারা পেয়েছেন, সে বিষয়েই আলোচনা হওয়ার কথা।
বুধবার উপনির্বাচন নিয়ে সংশ্লিষ্ট রাজ্যের মুখ্যসচিবদের সঙ্গেও বৈঠক করেন কমিশনের কর্তারা। সেখানে এখনই নির্বাচনের পক্ষে মত দেন পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যসচিব হরিকৃষ্ণ দ্বিবেদী। সব মিলিয়ে ভোট নিয়ে বুধবার দফায় দফায় কমিশনের বৈঠককে ইতিবাচক পদক্ষেপ হিসেবে দেখছে রাজ্যের শাসকদল। তৃণমূলের শীর্ষ স্থানীয় এক নেতা বলেন, ‘‘আমরা বার বার কমিশনের কাছে নির্বাচনের কথা বলেছি। কমিশনের এই উদ্যোগ ইতিবাচক বলেই মনে হচ্ছে। ফলে পুজোর আগেই ভোট পারে রাজ্যের সাতটি বিধানসভা আসনে।’’