মধ্যশিক্ষা পর্ষদ সিবিআই তদন্তের জন্য তথ্য ও নথি তলব করেছে ডিআইদের থেকে। গ্রাফিক: সনৎ সিংহ।
সিবিআই তদন্তের জন্য নিয়োগের নথি চাইল পশ্চিমবঙ্গ মধ্যশিক্ষা পর্ষদ। শুক্রবার এই সংক্রান্ত বিষয়ে একটি বিজ্ঞপ্তি জারি করেছে তারা। পর্ষদের তরফে বিজ্ঞপ্তি জারি করেছেন সেক্রেটারি সুব্রত ঘোষ। বিজ্ঞপ্তিটির জারি করা হয়েছে জেলার শিক্ষা আধিকারিকদের (ডিআই) উদ্দেশে। বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, নবম-দশম ও একাদশ-দ্বাদশ শ্রেণিতে নিয়োগ হওয়া শিক্ষকদের যাবতীয় তথ্য জানাতে হবে আগামী সোমবারের মধ্যে। ডিআইদের কী ভাবে এই তথ্য জানাতে হবে, তা-ও উল্লেখ করে দেওয়া হয়েছে ওই বিজ্ঞপ্তিতে। চাকরিপ্রাপ্ত শিক্ষকদের নাম, রোল নম্বর, চাকরিপ্রার্থীর মেমো নম্বর, নিয়োগপত্র ও চাকরিতে যোগদানের দিনক্ষণের উল্লেখ করতে বলা হয়েছে ওই বিজ্ঞপ্তিতে। বিজ্ঞপ্তির নীচে উল্লেখ করে দেওয়া হয়েছে মধ্যশিক্ষা পর্ষদ সিবিআই তদন্তের জন্য এই তথ্য ও নথি তলব করেছে ডিআইদের থেকে।
শুধু মাত্র চাকরি পাওয়া শিক্ষকদের তথ্য দিতে হবে এমনটা নয়, চাকরি পেয়ে চাকরিতে যোগদান না করা চাকরি প্রার্থীদেরও তথ্য জানাতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে এই বিজ্ঞপ্তিতে। এ ক্ষেত্রে চাকরিতে যোগ না দেওয়া ব্যক্তির নাম, রোল নম্বর, মেমো নম্বর, নিয়োগপত্র ও কোন স্কুলে কোন বিষয়ে শিক্ষকতার চাকরি পেয়েও যোগদান করেননি, সেই বিষয়টির উল্লেখ করতে বলা হয়েছে। তবে কোন বছরে চাকরি পাওয়া শিক্ষকদের তথ্য তলব করা হয়েছে, তা ওই বিজ্ঞপ্তিতে স্পষ্ট করে উল্লেখ না করায় বিভ্রান্তি তৈরি হয়েছে। যা নিয়ে ইতিমধ্যে প্রশ্ন তুলতে শুরু করেছে শিক্ষক সংগঠনগুলি। কারণ, ২০১২ সালের পর থেকে বেশ কয়েক বার উচ্চ প্রাথমিক, নবম-দশম ও একাদশ- দ্বাদশ শ্রেণিতে শিক্ষক নিয়োগ হয়েছিল। তাই স্বাভাবিক ভাবেই প্রশ্ন উঠেছে, কোন বছরে শিক্ষক নিয়োগে তথ্য জানতে চেয়েছে মধ্যশিক্ষা পর্ষদ? আর কোন বছরের নিয়োগের নথিই বা তুলে দেওয়া হবে সিবিআইয়ের হাতে?
এই বিজ্ঞপ্তি প্রসঙ্গে বঙ্গীয় শিক্ষক ও শিক্ষাকর্মী সমিতির স্বপন মণ্ডল বলেন, ‘‘বিজ্ঞপ্তিতে স্পষ্ট করে জানিয়ে দেওয়া হয়েছিল, সিবিআই তদন্তের জন্য এই নথি তলব করা হয়েছে। তাতেই স্পষ্ট যে রাজ্য সরকারের কোনও শিক্ষক নিয়োগের ক্ষেত্রেই স্বচ্ছতা ছিল না।’’ তবে এই বক্তব্যের পাল্টা তৃণমূল মাধ্যমিক শিক্ষক সমিতির সভাপতি দিব্যেন্দু মুখোপাধ্যায় বলেন, ‘‘শিক্ষক নিয়োগ নিয়ে যে দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছে, তার তদন্ত করছে সিবিআই। সেই তদন্তে যখন রাজ্য সরকার সব রকম সহযোগিতা করছে, তখন বিরোধীরা পাল্টা প্রশ্ন তুলে ঘোলা জলে মাছ ধরতে চাইছেন।’’