প্রতীকী ছবি।
মহারাষ্ট্র এবং হরিয়ানার বিধানসভা ভোটের ফলের পর পশ্চিমবঙ্গেও বিজেপির ভবিতব্য নিয়ে প্রশ্ন উঠতে শুরু করল। লোকসভা ভোটে এ রাজ্যে ১৮টি আসন জিতে চমক দেখিয়েছিল তারা। কিন্তু এ দিনের ওই দুই রাজ্যের ফলের পর প্রশ্ন উঠছে— ২০২১-এ এ রাজ্যের বিধানসভা ভোটে তারা ওই সাফল্য ধরে রাখতে পারবে তো?
আনুষ্ঠানিক ভাবে বিজেপির তরফে অবশ্য মহারাষ্ট্র এবং হরিয়ানার ধাক্কা স্বীকার করা হচ্ছে না। একই ভাবে এ রাজ্যেও বিজেপি নেতৃত্বে ওই দুই রাজ্যের ভোটের ফলকে ‘হাওয়া ঘোরা’ বলে মানছেন না। বিজেপির রাজ্য সভাপতি দিলীপ ঘোষ বলেন, ‘‘মহারাষ্ট্র এবং হরিয়ানায় বিজেপিই সরকার গড়বে। ওখানকার ভোটের ফলের উপর পশ্চিমবঙ্গের ফল নির্ভর করবে না। এখানে মানুষ ঠিক করে ফেলেছে, ২০২১-এ কাকে আনবে।’’
দিলীপবাবু এ কথা বললেও বিজেপির অন্দরের আলোচনায় নেতাদের কেউ কেউ বলেই থাকেন, রাজ্যের সব ব্লকে এখনও অত পোক্ত সংগঠন দলের নেই। অনেক জায়গাতেই গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের কাঁটায় বিদ্ধ দল। কোথাও কোথাও জেলা, ব্লক বা বুথ স্তরের কমিটিতে কাজের লোকের চেয়ে নেতৃত্বের কাছের লোক হওয়া বেশি গুরুত্বপূর্ণ যোগ্যতা বলে মনে করা হয়। বাঙালির কাছে ‘হিন্দি ভাষীদের দল’ তকমাটিও এখনও পুরোপুরি ঝেড়ে ফেলতে পারেনি বিজেপি।
এ দিন মহারাষ্ট্র এবং হরিয়ানার ভোটের ফলের পর তৃণমূলের মহাসচিব পার্থ চট্টোপাধ্যায় বলেন, ‘‘দুটি জায়গায় বিজেপি-বিরোধী আঞ্চলিক শক্তি অর্থবহ লড়াই করেছে। লোকসভা ভোটের আগে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ঠিক এই পথই দেখিয়েছিলেন।’’ পার্থবাবুর মতে, এই লাইন যথাযথ কার্যকর করা গেলে লোকসভা ভোটেই এই রকম ফল পাওয়া যেত।’’ সংবিধানের ৩৭০ অনুচ্ছেদ বাতিল ও এনআরসি-র ঘোষণার পরে দুই রাজ্যে বিজেপির আসন কমে যাওয়ার বিষয়টি নিয়ে দলে আলোচনা হবে বলেও জানিয়েছেন তিনি।
প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি সোমেন মিত্র বলেন, ‘‘এই দুই রাজ্যের ভোটের ফল দেখাল, বিভাজনের রাজনীতি বেশি দিন চলবে না। আর কংগ্রেস মুক্ত ভারত গড়াও অলীক স্বপ্ন।’’ বিরোদী দলনেতা কংগ্রেসের আব্দুল মান্নানের বক্তব্য, ‘‘এই ফলের পর সময় নষ্ট না করে কংগ্রেস এবং বামেদের একসঙ্গে রাস্তায় নামতে হবে।’’ সিপিএমের পলিটব্যুরো সদস্য মহম্মদ সেলিম বলেন, ‘‘এই দুই রাজ্যের ভোটের ফলে প্রমাণ হল, বিজেপি অপরাজেয় নয়। সংবিধানের ৩৭০ অনুচ্ছেদ বাতিল, যুদ্ধ জিগির ইত্যাদি দিয়ে মানুষের প্রকৃত সমস্যা, অর্থাৎ, কৃষকের সঙ্কট, জনতার আয় কম— এই সব চিরদিন চেপে রাখা যায় না।’’