থমথমে কালিয়াগঞ্জ। — ফাইল চিত্র।
অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের সফরের মধ্যেই উত্তরবঙ্গে বন্ধ ডাকল বিজেপি। কালিয়াগঞ্জকাণ্ডের প্রতিবাদে শুক্রবার ১২ ঘণ্টার উত্তরবঙ্গ বন্ধের ডাক দিয়েছে তারা। ওই ঘটনার প্রতিবাদে রায়গঞ্জের দার্জিলিং মোড়ে বিজেপি ধর্না কর্মসূচি পালন করছে। বৃহস্পতিবার সেই মঞ্চ থেকেই শুক্রবারের বন্ধের কথা ঘোষণা করেন স্থানীয় বিজেপি সাংসদ তথা প্রাক্তন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী দেবশ্রী চৌধুরী। বিজেপির এই বন্ধকে ‘সস্তার রাজনীতি’ হিসাবে কটাক্ষ করেছে তৃণমূল। দলের মুখপাত্র কুণাল ঘোষের দাবি, অভিষেক পথে নামাতেই ভয় পেয়েছে বিজেপি। তাই এমন সিদ্ধান্ত।
কালিয়াগঞ্জের রাধিকাপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের চাঁদগাঁয় বিজেপি কর্মী মৃত্যুঞ্জয় বর্মণের মৃত্যু হয়। বিজেপির অভিযোগ, পুলিশের গুলিতেই মৃত্যু হয়েছে মৃত্যুঞ্জয়ের। এ নিয়ে বৃহস্পতিবার সকাল থেকেই সরব বিজেপি। বৃহস্পতিবার বিকেলে আচমকাই তারা উত্তরবঙ্গ বন্ধের ডাক দেয়। দেবশ্রী বলেন, ‘‘একের পর এক ঘটনায় রাজ্য সরকার তথা তৃণমূল যে অত্যাচার চালিয়ে যাচ্ছে তার বিরুদ্ধে ফুঁসছে উত্তরবঙ্গের মানুষ। সাধারণ মানুষের সেই ক্ষোভকে সম্মান জানিয়েই এই বন্ধের সিদ্ধান্ত।’’
তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক এই মুহূর্তে উত্তরবঙ্গে রয়েছেন। শুক্রবারও তাঁর ‘জনসংযোগ যাত্রা’ কর্মসূচি রয়েছে, আলিপুরদুয়ার ও জলপাইগুড়িতে। দু’টি জেলাতেই সভা করার কথা তাঁর। তার মধ্যেই উত্তরবঙ্গ বন্ধের ডাক দিয়েছে বিজেপি। এ নিয়ে তৃণমূলের রাজ্য সাধারণ সম্পাদক তথা দলের মুখপাত্র কুণাল বলেন, ‘‘বিজেপি সস্তার রাজনীতি করছে। আসলে অভিষেক রাস্তায় নামতেই ওরা ভয় পেয়ে গিয়েছে। সে কারণেই নানা রকম কিছু করছে। এ বার বন্ধ ডাকা হল।’’
কালিয়াগঞ্জের ঘটনাকে সামনে রেখে বিজেপি যে প্রতিবাদ কর্মসূচি চালিয়ে যাবে, সে কথা জানিয়েছেন রাজ্য বিজেপির সভাপতি সুকান্ত মজুমদার। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকারকে কটাক্ষ করে তিনি বলেন, “এই সরকার পিছিয়ে পড়া জাতি, আদিবাসী ও দলিত বিরোধী। বুধবার মুখ্যমন্ত্রী সাংবাদিক বৈঠক করার পর থেকেই পুলিশ এই আচরণ শুরু করেছে। তদন্তের নামে বা তল্লাশি করতে গিয়ে সামান্য প্রশ্নের মুখোমুখি হতেই পুলিশ গুলি চালিয়েছে।” বুধবার রাতেই টুইটারে একটি ভিডিয়ো পোস্ট করেন সুকান্ত। যার সত্যতা যাচাই করেনি আনন্দবাজার অনলাইন। সেই ভিডিয়োর সঙ্গে সুকান্ত লেখেন, ‘‘কালিয়াগঞ্জে সাধারণ মানুষের উপর গুলি চালিয়েছে পুলিশ।’’ একই সঙ্গে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের হস্তক্ষেপও দাবি করেন তিনি। বিজেপি কর্মী ‘খুনের’ ঘটনার তীব্র প্রতিবাদ জানিয়ে শুক্রবার রাজ্য জুড়ে বিজেপির এসসি-এসটি মোর্চার পক্ষ থেকে প্রতিবাদ ও আন্দোলনের কথা আগেই তিনি জানিয়েছিলেন। এ বার বিজেপি বন্ধও ডাকল।