সুনীল আরোরা। —ফাইল চিত্র।
বিহার মডেলের অনুকরণেই বাংলায় ভোট হতে চলেছে কি না, খুব শীঘ্রই তা জানা যাবে। নির্বাচনী প্রস্তুতি নিয়ে শুক্রবার মুখ্যসচিব আলাপন বন্দ্যাপাধ্যায় এবং স্বরাষ্ট্রসচিব হরিকৃষ্ণ দ্বিবেদীর সঙ্গে বৈঠকে বসলেন মুখ্য নির্বাচন কমিশনার সুনীল আরোরা। সেখানে বিষয়টি নিয়ে আলোচনা হওয়ার কথা। কমিশন সূত্রে খবর, কোভিড পরিস্থিতিতে যে নির্দিষ্ট রূপরেখা মেনে ভোট পরিচালনার প্রয়োজন রয়েছে, তা নিয়েই আজ, শুক্রবার প্রশাসনের শীর্ষ কর্তাদের সঙ্গে আলোচনা হবে। রাজ্যে বুথের সংখ্যা বাড়ানো নিয়ে ইতিমধ্যেই কমিশনের অন্দরে একপ্রস্থ আলোচনা হয়েছে। রাজ্য প্রশাসনের সামনেও সেই প্রস্তাব রাখা হবে। এরই মধ্যে রাজ্যের মুখ্য নির্বাচনি আধিকারিক (সিইও) আরিজ আফতাবকে দিল্লিতে ডেকে পাঠানো হয়েছে। কবে থেকে ভোট করা সম্ভব, কী ভাবে সম্ভব, তা নিয়ে কমিশনকে প্রাথমিক রিপোর্ট দেবেন তিনি।
কোভিড পরিস্থিতিতে বিহারে বিধানসভা নির্বাচন সম্পন্ন হয়েছে। সেই মডেল মেনেই নির্বাচন কমিশন বাংলায় ভোট করাতে আগ্রহী বলে জানা গিয়েছে। এই মুহূর্তে রাজ্যে ৭৮ হাজার বুথ রয়েছে। বিহার মডেল অনুসরণ করলে প্রত্যেক বুথে ১ হাজারের বেশি ভোটারের প্রবেশে অনুমতি মিলবে না। সে ক্ষেত্রে আরও ২৮ হাজার অতিরিক্ত বুথের প্রয়োজন। ফলে বুথের সংখ্যা ১ লক্ষ ছাড়িয়ে যেতে পারে। প্রত্যেক বুথে যাতে কোভিড বিধি মেনে চলা হয়, সে নিয়েও নির্দিষ্ট রূপরেখা তৈরি করে দেবে কমিশন।
এর আগে, বৃহস্পতিবার রাজ্যের এডিজি (আইন-শৃঙ্খলা) জ্ঞানবন্ত সিংহ (রাজ্যের নোডাল অফিসার)-সহ সব জেলার পুলিশ সুপার, জেলাশাসক এবং পুলিশ কমিশনারের সঙ্গে বৈঠক করে নির্বাচন কমিশনের ফুল বেঞ্চ। ভোট যাতে শান্তিপূর্ণ হয়, কোনও পরিস্থিতিতেই হিংসা যাতে মাথাচাড়া না দেয় এবং তার জন্য সব প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ করতে রাজ্যকে স্পষ্ট বার্তা দেওয়া হয়। এখনও পর্যন্ত রাজ্য জুড়ে দাগী দুষ্কৃতীদের ধরপাকড় কেন করা হয়নি, কেন তাঁদের নামে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করা হয়নি, তা নিয়েও উষ্মা প্রকাশ করে কমিশন। দ্রুত এ ব্যাপারে পদক্ষেপ করতে নির্দেশ দেওয়া হয়।
রাজ্যের আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ে কমিশন কর্তাদের একটি রিপোর্টও দেন জ্ঞানবন্ত সিংহ। কিন্তু কমিশনের কর্তারা তাতে সন্তুষ্ট হতে পারেননি বলেই খবর। এর পর বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের তরফেও কমিশনের কাছে নানা অভিযোগ জমা পড়ে। সেগুলি খতিয়ে দেখে রাজ্যেই কলকাতার পুলিশ কমিশনার অনুজ শর্মা-সহ সব জেলার এসপি এবং ডিএমের সঙ্গে বৈঠক করেন কমিশনের কর্তারা। শুক্রবার মূলত আইন-শৃঙ্খলা নিয়েই আলোচনা হওয়ার কথা। বৈঠকের পর সংবাদমাধ্যমের মুখোমুখি হতে পারেন মুখ্য নির্বাচন কমিশনার।