শনিবার ডুমুরজলায় অরূপ রায়। —নিজস্ব চিত্র।
তৃণমূলের বিধায়ক পদ থেকে ইস্তফা দিয়ে বিজেপি-তে যোগ দিয়েছেন রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়। তার পর থেকেই হুমকি পাচ্ছেন তৃণমূল কর্মী এবং সমর্থকরা। হাওড়ার ডুমুরজলায় দলীয় সভার এক দিন আগে এমনই দাবি করলেন রাজ্যের সমবায় মন্ত্রী তথা হাওড়া জেলায় তৃণমূলের চেয়ারম্যান অরূপ রায়। তৃণমূলের কারও গায়ে হাত পড়লে ‘আগুন জ্বলবে’ বলে হুঁশিয়ারিও দিলেন তিনি।
রবিবার ডুমুরজলা ময়দানে জনসভা তৃণমূলের। তার আগে শনিবার সভার প্রস্তুতি খতিয়ে দেখতে যান অরূপ। সেখানে তিনি বলেন, ‘‘ডোমজুড়ে তৃণমূল কর্মীদের দাবিয়ে রাখা হচ্ছিল এত দিন। তাঁদের হুমকি দেওয়া হচ্ছে বলেও অভিযোগ পাচ্ছি আমরা। কিন্তু একটা কথা সাফ জানিয়ে দিতে চাই, তৃণমূলের এক জনের গায়েও হাত পড়লে আগুন জ্বলবে।’’ কে বা কারা তৃণমূল কর্মীদের হুমকি দিচ্ছেন, তা যদিও খোলসা করেননি অরূপ। তবে দলত্যাগী রাজীবের দিকেই তাঁর ইঙ্গিত বলেই জানিয়েছেন অরূপ-ঘনিষ্ঠেরা। শুধু ডোমজুড়ই নয়, রাজ্যের সমস্ত কর্মী-সমর্থকদের পাশে দল রয়েছে বলেও মন্তব্য করেন তিনি।
এই ডুমুরজলা ময়দানেই সম্প্রতি যোগদান মেলার আয়োজন করে বিজেপি। তাতে যোগ দিতে দিল্লি থেকে উড়ে এসেছিলেন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী স্মৃতি ইরানি। সেখানে বিপুল সমাবেশ দেখে ‘ভয় পেয়ে’ই তৃণমূল পাল্টা সভা করছে বলে দাবি করেন হাওড়া সদরের বিজেপি সভাপতি সুরজিৎ সাহা। এ বিষয়ে প্রশ্ন করলে অরূপ বলেন, ‘‘বিজেপি কে? তাদের দেখে সভা করতে হবে কেন? হাজার চারেক লোক নিয়ে, দিল্লি থেকে নেতাদের এনে মিটিং করেছিল ওরা। আগামী কাল ৪০ হাজার নেতা-সমর্থক নিয়ে সভা করে দেখিয়ে দেবেন হাওড়ায় আমাদের জেলা নেতৃত্ব।’’
ডুমুরজলার সভায় কেন্দ্রীয় সরকারের কাছে কৃষি আইন প্রত্যাহারের দাবি জানানো হবে বলেও জানান অরূপ। একই সঙ্গে বিজেপি-সহ অন্যান্য দল থেকে ৬ থেকে ৭ হাজার কর্মী-সমর্থক তৃণমূলে যোগ দেবেন বলে দাবি করেন তিনি। এ নিয়ে তাঁকে পাল্টা কটাক্ষ করেছেন সুরজিৎ। তাঁর বক্তব্য, ‘‘সভায় ৬-৭ হাজার লোক হবে কি না সন্দেহ। যোগদান তো অনেক দূরের কথা।’’
ঘটনাচক্রে রাজীব, বৈশালী ডালমিয়া এবং লক্ষ্মীরতন শুক্লর মতো নেতা-নেত্রীদের সঙ্গে তৃণমূলের দূরত্ব তৈরি হওয়ার পিছনে বার বার অরূপের নাম উঠে এসেছে। সেই নিয়ে টানাপড়েনের মধ্যে সম্প্রতি অসুস্থ হয়ে পড়েন তিনি। হাসপাতালে ভর্তিও হতে হয় তাঁকে। তবে সুস্থ হয়েই ফের দলের হয়ে নির্বাচনী কাজে নেমে পড়েছেন তিনি।