বুলবুলের ক্ষতি। —ফাইল চিত্র।
ঘূর্ণিঝড় বুলবুলে যে সব কৃষকের ফসলের ক্ষতি হয়েছে, তাঁদের ক্ষতিপূরণ দেবে রাজ্য। প্রাথমিক ভাবে ১৩০০ কোটি টাকা বরাদ্দ হয়েছে। নবান্নের এক শীর্ষ কর্তা জানান, প্রতি চাষিকে নিদেনপক্ষে পাঁচ হাজার টাকা করে ক্ষতিপূরণ দেওয়ার চেষ্টা হচ্ছে।
কৃষি দফতরের হিসেব, বুলবুলে ন’টি জেলায় প্রায় সাড়ে ১৪ লক্ষ হেক্টর চাষের জমির ক্ষতি হয়েছে। ওই জেলাগুলিতে মোট কৃষিজমির ৫২% ঝড়ে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বলে তৃণমূল স্তর থেকে রিপোর্ট এসেছে। প্রায় ৯০ ভাগ জমির ধান নষ্ট হয়েছে দুই ২৪ পরগনা জেলায়। এমন পরিস্থিতিতে রবি মরসুমে চাষিদের হাতে টাকা না-থাকলে চাষের ক্ষতি হওয়ার আশঙ্কা। তাই অবিলম্বে ১৩০০ কোটি টাকা ক্ষতিপূরণ দিতে নির্দেশ দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
সব মিলিয়ে বুলবুলে ২৩ হাজার ৮১১ কোটি টাকার কেন্দ্রীয় ক্ষতিপূরণ চেয়েছে রাজ্য। যদিও কেন্দ্রের বিচারে রাজ্যে বুলবুলের দাপটে সাড়ে সাত হাজার কোটির বেশি ক্ষয়ক্ষতি হয়নি। দ্বিতীয় পর্যায়ে কেন্দ্র রাজ্যের দাবিদাওয়া খতিয়ে দেখছে। এর পরেই সিদ্ধান্ত হতে পারে ঠিক কত কেন্দ্রীয় অনুদান রাজ্যে আসবে। ইতিমধ্যেই রাজ্য বিপর্যয় মোকাবিলা তহবিলে ৪১৪ কোটি টাকা পাঠিয়েছে কেন্দ্র। তার সঙ্গে অবশ্য বুলবুলের ক্ষয়ক্ষতির দাবিদাওয়ার কোনও যোগ নেই বলে রাজ্যের কর্তারা দাবি করেছেন।
কেন্দ্রীয় সাহায্যের মুখাপেক্ষী হয়ে না-থেকে রাজ্য অবশ্য কৃষকদের আর্থিক ক্ষতিপূরণ দিতে তৎপর হয়েছে। জানুয়ারি থেকেই সরকারি কর্মচারীদের বেতন কমিশনের বর্ধিত বোঝা চাপবে রাজ্যের ঘাড়ে। সেই কারণে ইতিমধ্যেই খরচের ব্যাপারে কড়াকড়ি করছে অর্থ দফতর। কিন্তু বুলবুলের ক্ষতিপূরণ দেওয়া নিয়ে অর্থ দফতরকে টাকা দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। নবান্নের এক শীর্ষ কর্তার কথায়, ‘‘টানাটানির বাজারেও চাষিদের ক্ষতিপূরণ দিতেই হবে। তাই প্রয়োজনে পরিকল্পনা বরাদ্দ ছাঁটাই বা বিলম্বিত করে ক্ষতিপূরণের টাকা জোগাড়ের জন্য অর্থ দফতরকে বলা হয়েছে। সেই মতো কাজও চলছে।’’