West Bengal News

কাজ ফেলে বৈশাখীর সঙ্গে শপিং? ক্যাবিনেট বৈঠক শেষে প্রশ্ন মমতার, বাদানুবাদে জড়ালেন শোভন

ব্যক্তিগত জীবনে তিনি যা করছেন, তা নিয়ে আপত্তি থাকলে, দায়দায়িত্ব থেকে তাঁকে অব্যাহতি দেওয়া হোক। শোভন এমনও বলেছেন বলে জানা গিয়েছে তৃণমূল সূত্রে।

Advertisement

ঈশানদেব চট্টোপাধ্যায়

কলকাতা শেষ আপডেট: ০৯ অক্টোবর ২০১৮ ২২:৩৬
Share:

মমতার সঙ্গে বাদানুবাদে জড়ালেন দমকলমন্ত্রী তথা মেয়র শোভন চট্টোপাধ্যায়। গ্রাফিক: শৌভিক দেবনাথ।

ফের বৈশাখী প্রসঙ্গে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ধমক খেলেন দমকলমন্ত্রী শোভন চট্টোপাধ্যায়। সোমবার তৃণমূলের মুখপত্র ‘জাগো বাংলা’র বার্ষিক অনুষ্ঠানে কেন দেখা যায়নি শোভনকে? ক্যাবিনেট বৈঠক শেষে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এই প্রশ্ন করেন বলেই জানা গিয়েছে। বিষয়টি নিয়ে মমতার সঙ্গে শোভনের কিছুটা বাদানুবাদ হয়েছে বলেও খবর। ব্যক্তিগত জীবনে তিনি যা করছেন, তা নিয়ে আপত্তি থাকলে, দায়দায়িত্ব থেকে তাঁকে অব্যাহতি দেওয়া হোক। শোভন এমনও বলেছেন বলে জানা গিয়েছে তৃণমূল সূত্রে।

Advertisement

মহালয়ার দিনেই গত কয়েক বছর ধরে আয়োজিত হচ্ছে ‘জাগো বাংলা’র বার্ষিক অনুষ্ঠান। নজরুল মঞ্চে আয়োজিত সে অনুষ্ঠানে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নিজে থাকেন। ফলে দলের প্রথম সারিতে থাকা প্রায় সব মুখকেই সে অনুষ্ঠানে দেখা যায়। কিন্তু এ বারে অনুষ্ঠানে কলকাতার মেয়র তথা রাজ্যের দমকলমন্ত্রী শোভন চট্টোপাধ্যায় অনুপস্থিত ছিলেন।

মঙ্গলবার নবান্নে ক্যাবিনেট বৈঠক ছিল। সে বৈঠকে অবশ্য শোভন হাজির ছিলেন। তৃণমূল সূত্রে জানা গিয়েছে, বৈঠক শেষ হওয়ার পরে সভাকক্ষে বসে সবার সামনেই শোভনের কাছে জানতে চান যে, তিনি কেন সোমবার ‘জাগো বাংলা’র অনুষ্ঠানে হাজির ছিলেন না? তিনি বৈশাখী বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে শপিংয়ে গিয়েছিলেন কি না, তেমন প্রশ্নও মমতা করেন বলে খবর।

Advertisement

আরও পড়ুন: মমতা চান ছাত্র-নেতা, কিন্তু নাম গেল ঠিকাদার-উকিল, এমনকি ফৌজদারি অভিযুক্তেরও

শোভন চট্টোপাধ্যায়ের ঘনিষ্ঠ মহল সূত্রে জানা গিয়েছে, মুখ্যমন্ত্রীর এই প্রশ্নে শোভন খুব খুশি হননি। তিনি তাঁর বিবাহ বিচ্ছেদ সংক্রান্ত মামলার কিছু কাজ নিয়ে দিনভর ব্যস্ত ছিলেন বলে ‘জাগো বাংলা’র অনুষ্ঠানে যেতে পারেননি। দলনেত্রী তথা মুখ্যমন্ত্রীকে শোভন এমনই জানান। কিন্তু মুখ্যমন্ত্রী সে জবাবে সন্তুষ্ট হননি। বৈশাখীকে নিয়ে যে শোভন শপিংয়ে গিয়েছিলেন, সে খবর তাঁর কাছে রয়েছে বলে মুখ্যমন্ত্রী মন্তব্য করেন। শোভন ঘনিষ্ঠদের দাবি অন্তত তেমনই।

কলেজ শিক্ষক বৈশাখী বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে শোভন চট্টোপাধ্যায়ের সম্পর্ক প্রসঙ্গে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের অসন্তোষ প্রকাশ এই প্রথম নয়। এর আগে কখনও বিধানসভায়, কখনও ক্যাবিনেট বৈঠকে প্রকাশ্যেই বিষয়টি নিয়ে শোভনকে কটাক্ষ করেছেন মমতা। ভর্ৎসনাও করেছেন। তাতে ক্ষুব্ধ হয়ে শোভন একবার মৃদু প্রতিবাদও করেছিলেন। ক্যাবিনেট বৈঠকে কেন বৈশাখী বন্দ্যোপাধ্যায়ের নাম উঠবে— অনেকটা এমন প্রশ্নই শোভন তুলেছিলেন বলে খবর। পরে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বাড়ি গিয়ে লিখিত ভাবে কিছু দায়দায়িত্ব থেকে অব্যাহতিও চেয়েছিলেন তিনি। কিন্তু মমতা সে চিঠি নেননি। শোভনকে তিনি চিঠি ফেরত দিয়ে দেন। পরে অবশ্য দক্ষিণ ২৪ পরগনা জেলা তৃণমূলের সভাপতি পদ থেকে শোভনকে সরিয়েই দেন তিনি।

আরও পড়ুন: রাজ্যে এক বছরে আরএসএস-এর শাখা বেড়ে দ্বিগুণ, ফলের আশায় বিজেপি

সেই অপসারণের পরে মঙ্গলবারই ছিল রাজ্য ক্যাবিনেটের প্রথম বৈঠক। সে বৈঠক শেষ হতেই বৈশাখী সংক্রান্ত প্রশ্নের সম্মুখীন হয়ে শোভন ফের প্রতিবাদ করেন বলে তৃণমূল সূত্রে জানা গিয়েছে। তাঁর ব্যক্তিগত জীবন নিয়ে বা বৈশাখীর সঙ্গে তাঁর ব্যক্তিগত সম্পর্ক নিয়ে সর্বসমক্ষে এ ভাবে কথা বলা যায় কি না, শোভন সেই প্রশ্নই তোলেন বলে তাঁর ঘনিষ্ঠ বৃত্তের লোকজনের দাবি। শোভনের এই প্রশ্নের জেরে বিষয়টি নিয়ে খানিকটা বাদানুবাদ শুরু হয়ে যায় বলে খবর। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় তাতে বেশ রুষ্ট হন বলেও জানা গিয়েছে।

সব শেষে শোভন এ দিন ফের অব্যাহতি চেয়েছেন বলেও তৃণমূল সূত্রে জানা গিয়েছে। তাঁর ব্যক্তিগত জীবন নিয়ে যদি দলনেত্রী তথা মুখ্যমন্ত্রীর আপত্তি থাকে, তা হলে তাঁকে সব দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি দেওয়া হোক— শোভন এমনই বলেন বলে খবর। বিষয়টি নিয়ে শোভন চট্টোপাধ্যায় নিজে অবশ্য কোথাও মুখ খোলেননি।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement