পর্যটন লজে এ বার তিনতারা সাজ

কোনও বেসরকারি হোটেল বা রিসর্ট নয়। তিনতারা স্তরে উন্নীত হতে এই রূপটান পশ্চিমবঙ্গ পর্যটন উন্নয়ন নিগমের লজ ও রিসর্টগুলির ঘরে। অবয়ব পাল্টানোর এই কর্মযজ্ঞে খরচ হবে ১০০ কোটি টাকারও বেশি।

Advertisement

সুরবেক বিশ্বাস ও পিনাকী বন্দ্যোপাধ্যায়

কলকাতা শেষ আপডেট: ০৮ জানুয়ারি ২০১৮ ০৩:০৩
Share:

প্রতীকী ছবি।

ঘরের ভোলটাই বিলকুল বদলে গিয়েছে! সাদা ফ্যাটফেটে আলোর জায়গায় নরম হলদে আলো। দেওয়ালের রং-ও মানানসই। খাটের দু’ধারে বেডল্যাম্প, বেড সাইড টেবল। বড় এলইডি টিভি। চেয়ার, সোফা, টি টেবল, আয়না, ওয়ারড্রোব আগের চেয়ে অনেক বেশি ঝকঝকে। তেমনই কেতাদুরস্ত শৌচাগারের নতুন কমোড-বেসিন। ঘরে ঢুকতেই হাল্কা সুবাস। চা-কফি তৈরির বৈদ্যুতিক কেটলি, হেয়ার ড্রায়ারও মজুত।

Advertisement

কোনও বেসরকারি হোটেল বা রিসর্ট নয়। তিনতারা স্তরে উন্নীত হতে এই রূপটান পশ্চিমবঙ্গ পর্যটন উন্নয়ন নিগমের লজ ও রিসর্টগুলির ঘরে। অবয়ব পাল্টানোর এই কর্মযজ্ঞে খরচ হবে ১০০ কোটি টাকারও বেশি।

পর্যটন দফতর সূত্রের খবর, প্রথম পর্যায়ে নিগমের ছ’টি লজ ও তিনটি রিসর্ট-এর বাছাই করা ৫৫টি ঘরের সাজসজ্জা আমূল পাল্টানো হয়েছে। খরচ হয়েছে প্রায় ছ’কোটি টাকা। এর মধ্যে আছে জলদাপাড়া, বকখালি, ব্যারাকপুরের মালঞ্চ, দিঘা, শিলিগুড়ির মৈনাক ও কলকাতার কালীঘাট ট্যুরিস্ট লজ এবং ডুয়ার্সের মূর্তি, বাতাবাড়ি ও টিলাবাড়ি রিসর্ট।

Advertisement

পর্যটনমন্ত্রী গৌতম দেব জানান, নিগমের ৩২টি লজ-রিসর্টেরই সব ক’টি ঘর তিনতারা মানের উপযোগী করে সাজিয়ে তোলা হবে। ‘‘রান্নাঘর, ডাইনিং রুম, রিসেপশন, করিডর, লন সব কিছুই নতুন ভাবে তৈরি হবে। সেই সঙ্গে খাবার ও পরিষেবার মানও হবে তিনতারা হোটেলের উপযোগী,’’ বলছেন মন্ত্রী। ফেব্রুয়ারি থেকে এক-একটি লজ বা রিসর্ট ধরে ধরে ওই কাজ শুরু হবে। এক-একটি লজের অধিকাংশ ঘরের বুকিং মাস দু’-তিন পাবেন না পর্যটকেরা।

তিনতারা হোটেল বা রিসর্টের ঘর আয়তনে হবে ন্যূনতম ১৩০ বর্গফুট, শৌচাগার ৩৬ বর্গফুট। এর ফলে ঘরভাড়া বাড়বে। এখন নিগমের বেশির ভাগ রিসর্ট ও লজের ঘরের সর্বোচ্চ ভাড়া ২৫০০ টাকা। রূপটানের খরচ তুলতে এপ্রিল থেকে ওই সর্বোচ্চ ভাড়া লজ বা রিসর্ট সাপেক্ষে ৩০০০ থেকে ৩৫০০ টাকা হবে বলে নিগম সূত্রে খবর। নিগমের এক কর্তা বলেন, ‘‘আমরা কিন্তু আনুষ্ঠানিক ভাবে তিনতারা তকমা পেতে ঝাঁপাচ্ছি না। তিনতারা মানের স্বাচ্ছন্দ্য, সুযোগ-সুবিধে অতিথিদের দেওয়াই লক্ষ্য।’’

• ঘর ১৩০ বর্গফুটের।

• শৌচাগার ৩৬ বর্গফুটের।

• অর্ধেক ঘর শীতাতপনিয়ন্ত্রিত।

• মাল্টি ক্যুইজিন রেস্তোরাঁ কাম কফি শপ।

• রুম সার্ভিস ২৪ ঘণ্টা।

• প্রতিটি ঘরে মিনি ফ্রিজ।

• প্রতিটি ঘরে টেলিফোন।

• ফ্রন্ট অফিসে ইংরেজি বলা কর্মী।

কিন্তু এই ভোল বদল ময়লা গায়ে সুগন্ধি মাখার মতো হবে না তো? জলদাপাড়া লজের খাবার খেয়ে বদহজমে কষ্ট পেয়েছিলেন কলকাতার একদল পর্যটক। মূর্তি রিসর্টের রিসেপশনে ওয়াই ফাই, কিন্তু রিসেপশন লাগোয়া শৌচাগারে দুর্গন্ধ ও নোংরা। দিঘা ট্যুরিস্ট লজের ডাইনিং হল-এ দামি টেবলের উপর সস্তার প্লাস্টিকের জগে জল।

‘‘শুধু ঘর, আসবাব ঝাঁ চকচকে করলেই তিনতারা স্বাচ্ছন্দ্য দেওয়া যায় না, পরিষেবার মানও মানানসই হওয়া দরকার,’’ মনে করিয়ে দিচ্ছেন ইনবাউন্ড ট্যুর অপারেটরস কাউন্সিল-এর সভাপতি শুদ্ধব্রত দেব। তবে মন্ত্রী গৌতম দেবের প্রতিশ্রুতি, ‘‘পরিষেবাও তিনতারা মানের হবে।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement