শীতের সকাল। —ফাইল চিত্র।
এখনও ভরা পৌষ। ইংরেজি বছরও শেষ হতে আরও কয়েক ঘণ্টা। এ সময়ে মহানগর-সহ গাঙ্গেয় পশ্চিমবঙ্গের তাপমাত্রা স্বাভাবিকের থেকে অন্তত দু’ডিগ্রি নীচে থাকাটাই দস্তুর। বড়দিন হোক বা ইংরেজি নববর্ষ, কনকনে ঠান্ডা ছাড়া যেন কোনওটাই ঠিক জমে না। কিন্তু এ বার বড়দিন গিয়েছে কিছুটা ভ্যাপসা গরমে। ইংরেজি নতুন বছরকে স্বাগত জানানোর সময়েও যে ঠকঠকিয়ে শীতে কাঁপার সুযোগ মিলবে, তেমন কোনও লক্ষণ দেখা যাচ্ছে না। শীত-শীত ভাবটুকুই সার! অন্তত তেমনটাই জানাচ্ছে আবহাওয়া দফতর।
বাংলা নববর্ষে গা-জ্বালানো গরম আর ইংরেজি নববর্ষে হাড়কাঁপানো ঠান্ডা— বাঙালির বারোমাস্যায় এটাই দস্তুর। এ বার আলিপুর আবহাওয়া দফতরের পূর্বাভাস, উত্তুরে হাওয়ার বদলে ইংরেজি নতুন বছর আসছে রীতিমতো উষ্ণতা গায়ে মেখে! দক্ষিণবঙ্গে তাপমাত্রা স্বাভাবিকের চেয়ে বেশিই থাকবে। সেই সঙ্গে থাকবে কুয়াশা। গত কয়েক দিন ধরে পারদের উত্তাপে সোয়েটার, জ্যাকেট, মাফলারের বাহার মুলতুবিই ছিল। বর্ষশেষের দিনেও তা বার করে কোনও কারণ নেই বলেই মনে করা হচ্ছে। হাওয়া অফিস জানিয়েছে, উত্তরবঙ্গের পাহাড়ি এলাকায় তুষারপাত এবং বৃষ্টি সম্ভাবনা আছে নতুন বছরে।
কেন্দ্রীয় আবহাওয়া দফতরের প্রাক্তন ডেপুটি ডিরেক্টর জেনারেল গোকুলচন্দ্র দেবনাথ বলছেন, “শীতকালে এই ধরনের উচ্চচাপ বলয় তৈরি হলেই শীত থমকে যায়। মধ্য ভারতের উচ্চচাপটি বেশ শক্তিশালী। তার প্রভাবে উত্তর এবং পূর্ব ভারতে হাওয়ার অভিমুখই বদলে গিয়েছে। উত্তর-পশ্চিম দিক থেকে শুষ্ক হাওয়ার বদলে পূর্ব দিক থেকে জোলো বাতাস ঢুকছে। তার প্রভাবে দিল্লি, বারাণসী-সহ উত্তর ভারতের বিস্তীর্ণ এলাকায় প্রবল কুয়াশার দাপট চলছে।”
আমজনতা এবং আবহবিদদের অনেকের অবশ্য পর্যবেক্ষণ, শীতের এই বেহাল দশা শুধু এ বছরই নয়। গত কয়েক বছর ধরেই দেখা যাচ্ছে। জোরালো শীত মাত্র কয়েক দিন থাকছে। বাকি সময় কার্যত গরমই। তবে এ বারের মতো এমন দশাও খুব চেনা নয়।