নতুন করে কোনও বাধা তৈরি না হলে নির্দিষ্ট সময়েই রাজ্যে বর্ষা ঢুকে যাবে বলে জানিয়েছে মৌসম ভবন। নিজস্ব চিত্র।
বিলম্ব তো হয়নি বটেই, ছন্দেও রয়েছে মৌসুমী বায়ু। তাই, এ বছর নির্দিষ্ট সময়ে কেরলে ঢুকে পড়ল বর্ষা। সোমবার সকাল থেকেই কেরলের বিভিন্ন প্রান্তে বৃষ্টি শুরু হয়ে গিয়েছে। জুন থেকে সেপ্টেম্বর পর্যন্ত বৃষ্টির হারও স্বাভাবিক থাকবে বলে জানিয়েছে দিল্লির মৌসম ভবন। এ রাজ্যেও নির্দিষ্ট সময়ে বর্ষা ঢোকার সম্ভাবনার কথা জানানো হয়েছে।
সব কিছু স্বাভাবিক থাকলে, কেরলে বর্ষা ঢোকে ১ জুন। এ রাজ্যে সাধারণত উত্তর-পূর্বাঞ্চল হয়ে উত্তরবঙ্গে বর্ষা ঢোকার স্বাভাবিক সময় ৫ জুন। ৮ জুন নাগাদ দক্ষিণবঙ্গে বর্ষা এসে যায়। সময় মতো কেরলে মৌসুমী বায়ু ঢোকার কারণে এ রাজ্যেও স্বাভাবিক নিয়মে বর্ষা ঢোকার প্রবল সম্ভাবনা রয়েছে। দিল্লির মৌসম ভবনের অধিকর্তা মৃতুঞ্জয় মহাপাত্র বলেন, “কেরলে নির্দিষ্ট সময়েই বর্ষা এসেছে। বৃষ্টিও শুরু হয়েছে।” তবে এ রাজ্যে নির্দিষ্ট সময়ে বর্ষা আসবে হবে কি না, সে বিষয়ে এখনই কোনও মন্তব্য করতে চাননি মৃত্যুঞ্জয়বাবু। তবে এ ক’দিনের মধ্যে নতুন করে কোনও বাধা তৈরি না হলে নির্দিষ্ট সময়েই রাজ্যে বর্ষা ঢুকে যাবে বলে জানা গিয়েছে মৌসম ভবন সূত্রে। ইতিমধ্যে রাজ্যে প্রাক্বর্ষার বৃষ্টি শুরু হয়ে গিয়েছে।
আলিপুর আবহওয়া দফতের অধিকর্তা গণেশ কুমার দাস বলেন, “এ রাজ্যে কবে মৌসুমী বায়ু ঢুকবে, তা আমাদের পর্যবেক্ষণে রয়েছে। নির্দিষ্ট সময়ে তা জানিয়ে দেওয়া হবে।”
উত্তর ও দক্ষিণবঙ্গে বর্ষা ঢোকে মৌসুমি বায়ুর দু’টি ভিন্ন শাখা বেয়ে। কেরলের শাখাটি উত্তর দিকে উঠতে উঠতে চলে আসে পূর্ব ভারতে। সেটাই দক্ষিণবঙ্গে বর্ষা নিয়ে আসে। মৌসুমি বায়ুর অন্য শাখা আন্দামান থেকে মায়ানমার হয়ে উত্তর-পূর্বাঞ্চল হয়ে ঢোকে উত্তরবঙ্গে। এখনও পর্যন্ত ছন্দে রয়েছে মৌসুমী বায়ুর সব শাখাই। ফলে এ বছর বর্ষার আগমনে কোনও অসুবিধা হবে না বলেই খবর কেন্দ্রীয় মৌসম ভবন সূত্রে।
আরও পড়ুন: গতি বাড়ছে ক্রমশ, অতি প্রবল ঘূর্ণিঝড় পরশু ঝাঁপাবে পশ্চিম উপকূলে
আরও পড়ুন: করোনা অদৃশ্য শত্রু হতে পারে, কিন্তু জয়ী হবেন দেশের যোদ্ধারাই: মোদী
কেরল দিয়ে বর্ষার মূল শাখা ভারতীয় ভূখণ্ডে ১ জুন ঢুকে যাওয়ায় এ বছর বর্ষার ঘাটতি কম হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। বর্ষার ওই শাখা আরবসাগর ও বঙ্গোপসাগর হয়ে ক্রমেই উপরের দিকে উঠতে থাকে। এই সময়ে আরবসাগরে নিম্নচাপ বা ঘূর্ণিঝড়ের সৃষ্টি হলে পশ্চিম ভারতে অতি-সক্রিয় হয়ে ওঠে বর্ষা। আরব সাগরের উপর একটি ঘূর্ণাবর্ত শক্তিশালী হচ্ছে। সেটি গুজরাত ও মহারাষ্ট্রের উপকূলে আছড়ে পড়তে পারে বলে দুই রাজ্যকে সতর্ক করা হয়েছে। ফলে বর্ষা সক্রিয় হয়ে ওঠার সম্ভাবনা অত্যন্ত জোরালো হয়েছে। মৌসম ভবন সূত্রে খবর, জুন থেকে সেপ্টেম্বরের মধ্যে স্বাভাবিক হারে বৃষ্টি হবে। গড়ে ৯৬ শতাংশ থেকে ১০৪ শতাংশ বৃষ্টি হতে পারে গোটা দেশে। উত্তর-পশ্চিম ভারতের ক্ষেত্রে বৃষ্টি হতে পারে গড়ে ১০৭ শতাংশ, মধ্য ভারতে ১০৩ শতাংশ, দক্ষিণভাগে ১০২ শতাংশ এবং উত্তর-পূর্ব ভারতে ৯৬ শতাংশ বৃষ্টি হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। তবে এই হিসাবের কিছুটা হেরফেরও হতে পারে।