‘‘পুলিশ শাসক দলের ক্যাডার হয়ে গিয়েছে।’’ জনসভা থেকে তোপ দিলিপের। —নিজস্ব ছবি।
তপ্ত উত্তর দিনাজপুরে উত্তপ্ত ভাষণ রাজ্য বিজেপি-র সভাপতি দিলীপ ঘোষের। ইসলামপুরে গুলিবিদ্ধ হয়ে দুই ছাত্রের মৃত্যুর প্রেক্ষিতে কথা বলতে গিয়ে দিলীপের হুমকি, ‘‘বদলা আমরা নেবই।’’ যে মন্তব্যের জন্য জেলা বিজেপি-র সভাপতি শঙ্কর চক্রবর্তীকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ, হেমতাবাদের জনসভায় দাঁড়িয়ে এ দিন দিলীপ ঘোষ সেই মন্তব্যকেও সমর্থন করেছেন।
দাড়িভিটে দুই ছাত্রের মৃত্যুর পরে দফায় দফায় সে গ্রামে যাচ্ছেন বিজেপি নেতারা। জেলা বিজেপি নেতৃত্ব প্রায় গোড়া থেকেই ছিলেন এলাকায়। পরে মুকুল রায়, প্রতাপ বন্দ্যোপাধ্যায়ের নেতৃত্বে পাঁচ জনের প্রতিনিধিদল দাড়িভিট যায়। মঙ্গলবার সকালে ফের রাজেশ সরকার ও তাপস বর্মণের পরিজনদের সঙ্গে দেখা করেন রাজ্য বিজেপি-র সাধারণ সম্পাদক সায়ন্তন বসু।
রাজ্য বিজেপির সভাপতি দিলীপ ঘোষও এ দিন উত্তর দিনাজপুরেই ছিলেন। ইসলামপুরে তিনি এ দিন যাননি। তিনি প্রথমে হেমতাবাদে কর্মিসভা করেন, পরে জনসভায় ভাষণ দেন। আর সেই ভাষণের সিংহভাগ জুড়ে স্বাভাবিক ভাবেই ছিল ইসলামপুর প্রসঙ্গ।
আরও পড়ুন
দিলীপের বন্ধ-হুমকি,পাশে নেই বিরোধীরা
উর্দু পড়ানোর জন্য কেন বাংলার উপরে আক্রমণ? জনসভার মঞ্চ থেকে এ দিন প্রশ্ন তোলেন দিলীপ ঘোষ। দাড়িভিটে গুলিচালনার তীব্র নিন্দা করেন তিনি। পুলিশই গুলি চালিয়েছে বলে ফের অভিযোগ করেন। পাশাপাশি তিনি প্রশ্ন তোলেন, পুলিশ যদি গুলি না চালিয়ে থাকে, তা হলে কারা চালাল, তা পুলিশ খুঁজে বার করতে পারেছ না কেন?
শুধু উত্তর দিনাজপুরে নয়, গোটা রাজ্যে পুলিশ বিরোধীদের উপরে অত্যাচার চালাচ্ছে বলে দিলীপ ঘোষ এ দিন অভিযোগ করেন। কলকাতায় এবিভিপি-র মিছিলে পুলিশ সোমবার লাঠি চালিয়েছে বলে জানিয়ে হেমতাবাদের জনসভায় দিলীপ ঘোষ বলেন, ‘‘পুলিশ শাসক দলের ক্যাডার হয়ে গিয়েছে।’’ সেই প্রসঙ্গে কথা বলতে বলতেই হুমকি দেন দিলীপ ঘোষ। ‘বদলা নয়, বদল চাই’— ক্ষমতায় আসার আগে তৃণমূল যে স্লোগান দিয়েছিল, দিলীপ প্রথমে সেই স্লোগানের কথা টেনে আনেন। তার পরে বলেন, ‘‘ও সব বদলা-বদল বুঝি না, রাজনৈতিক নেতা হোক বা পুলিশ, বদলা আমরা নেবই।’’
আরও পড়ুন
শঙ্কর গ্রেফতার হলে কেষ্ট-জ্যোতিপ্রিয় নয় কেন? নিশানায় পুলিশ
এই হুমকিতেই থামেননি দিলীপ। পুলিশকে গাছে বেঁধে রাখার যে নিদান উত্তর দিনাজপুর জেলা বিজেপি-র সভাপতি শঙ্কর চক্রবর্তী দিয়েছিলেন, দিলীপ এ দিন সে মন্তব্যকে প্রকারান্তরে সমর্থনও করেছেন। পুলিশকে তীব্র কটাক্ষ করে রাজ্য বিজেপি সভাপতির মন্তব্য, ‘‘দাড়িভিটে পুলিশ ঢুকতে পারছে না। রাতের অন্ধকারে চোরের মতো গ্রামে ঢুকছে। সেই চোরকেই যখন বেঁধে রাখার কথা বলেছেন, তখন আমাদের জেলা সভাপতিকে গ্রেফতার করা হয়েছে।’’